Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুই বছরে ৬৫ বার বিদেশ যান গুলিস্তানের কাপড় ব্যবসায়ী

১১ লাখ ৬৫ হাজার সউদী রিয়েলসহ আটক

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ জুলাই, ২০২১, ১২:০৪ এএম

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক যাত্রীর কাছ থেকে ১১ লাখ ৬৫ হাজার সউদী রিয়েল জব্দ করেছে এপিবিএন। এগুলো পাচারের উদ্দেশ্যে মিশরে নেয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে এপিবিএন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার আটক জাহাঙ্গীর গাজী গুলিস্তানের একজন কাপড় ব্যবসায়ী। দুই বছর ধরে তিনি মুদ্রাপাচারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এ সময়ে তিনি ৬৫ বার বিদেশ গিয়েছেন।
এপিবিএন’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জিয়াউল হক বলেন, সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় তার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তুরস্কের ইস্তাম্বুল হয়ে মিশরে যাওয়ার কথা ছিল জাহাঙ্গীরের। ফ্লাইটে ওঠার আগে সর্বশেষ চেক পয়েন্টে তাকে আটক করা হয়। আটকের পর তাকে চ্যালেঞ্জ করে এপিবিএন। তার কাছে বৈদেশিক মুদ্রা আছে কি না জানতে চাইলে সে অস্বীকার করে। পরে শরীরে তল্লাশি করে ৫০ হাজার রিয়েল উদ্ধার করা হয়। তাকে স্ক্যানিং করে শরীর ও ব্যাগ থেকে ১১ লাখ ৬৫ হাজার সউদী রিয়েলসহ ৮টি দেশের মুদ্রা পাওয়া যায়। তিনি এসব পাচার করার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় আমরা তাকে এপিবিএনের বিমানবন্দরের কার্যালয়ে নিয়ে আসি। সেখানে কাস্টমসসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে তাকে ভালোভাবে চেক করা হয়। এরপর তার কাছে ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা মূল্যমানের মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ইউএস ডলার, মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, কুয়েতি দিনারসহ বিভিন্ন মুদ্রা পাওয়া যায়।

জাহাঙ্গীরের পরিচয় সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাহাঙ্গীর জানায়, সে রাজধানীর গুলিস্তানে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। গত দুই বছর ধরে ওই ব্যবসা বাদ দিয়ে অর্থপাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। জাহাঙ্গীরের পাসপোর্ট যাচাই করে এপিবিএন দেখেছে তার পাসপোর্টে মোট পাঁচটি দেশের ভিসা ও ইমিগ্রেশনের ১২৫টি সিল লাগানো আছে। দুই বছরে তিনি ৬৫ বার বিদেশে গিয়েছেন। জাহাঙ্গীর প্রবাসীদের কাছ থেকে রিয়েল সংগ্রহ করে এবং তা একত্রিত করে পাচার করতেন। এই প্রক্রিয়ায় বিদেশে মুদ্রা গেলে বাংলাদেশ সরকার কোনো রাজস্ব পায় না। কমার্শিয়াল যাত্রীদের লাগেজ বহনের ক্ষেত্রে সরকার কিছু সুবিধা দেয়। জাহাঙ্গীর সেই সুযোগ নিয়েও হুট করে মুদ্রাপাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান।

পাচারের এই টাকা কী কাজে ব্যবহার হতো, জানতে চাইলে জিয়াউল হক বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, মুদ্রাগুলো মিশরে যাওয়ার কথা ছিল। পরে সেখানে গিয়ে বাল্ক অ্যামাউন্টে সোনা কেনা হতো। সেই সোনাগুলো আবার বাংলাদেশেও আসতে পারতো। এতে দুই দিকেই বাংলাদেশ সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হতো। একদিকে টাকা পাচার হচ্ছে, অন্যদিকে অবৈধভাবে ট্যাক্স ছাড়া স্বর্ণ বাংলাদেশে পাচার হতো। জাহাঙ্গীরকে বর্তমানে এপিবিএন কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। কাস্টমস বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করবে বলে তিনি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাপড় ব্যবসায়ী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ