পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থ প্রতিরোধে উন্নত বিশ্বের কাতারে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানিলন্ডারিং (এপিজি)-এর ১৯তম বার্ষিক সাধারণ সভায় বাংলাদেশের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানের বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ এপিজির মূল্যায়নে বাংলাদেশের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থ প্রতিরোধের বিদ্যমান ব্যবস্থা উন্নত বিশ্বের সমান হয়েছে। এর মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন রিভিউ গ্রুপ (আইসিআরজি) প্রক্রিয়ায় (ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায়) অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যে আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা থেকে পুরোপুরি মুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এদিকে, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেয়া পদক্ষেপের পক্ষে নয়টি দেশ সমর্থন করলেও যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং নিউজিল্যান্ড এই চারটি দেশ বিরোধিতা করেছিল বলে সংবাদ সম্মেলন পূর্ব এক সভার সার সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, এশিয়া প্যাসেফিক গ্রুপ অন মানিলন্ডারিং (এপিজি) এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ঝুঁকিমুক্ত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো শহরে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এপিজির ১৯তম বার্ষিক সভায় বাংলাদেশের মূল্যায়ন নিয়ে ৩য় পর্বের প্রতিবেদন চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। এ প্রতিবেদনে নরওয়ে, শ্রীলংকা, ফিজি ও কিছু ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। এই অর্জনের ফলে সন্ত্রাস, সন্ত্রাসে অর্থায়ন, জঙ্গিবাদ, মানিলন্ডারিংসহ অন্যান্য অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ। ডেপুটি গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ মানিলন্ডারিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ২৭টি অপরাধ, সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন এবং অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশের সকল আইন, বিধিমালা, সরকারী আদেশ, বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সার্কলার, নির্দেশনা, গাইডলাইন্সসহ যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত এপিজিকে প্রদান করা হয়। এপিজি এসব তথ্য উপাত্ত বিচার বিশ্লেষণ করেই বাংলাদেশকে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের ক্ষেত্রে ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করেছে। এপিজির এ স্বীকৃতির ফলে বাংলাদেশ জাতি হিসাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার আরেকটি সক্ষমতা অর্জন করেছে। কারণ মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের অভিযোগে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা এতদিন বাংলাদেশকে প্রশ্ন করে আসছিল। এখন বাংলাদেশও অন্যান্য দেশকে প্রশ্ন করবে। এখন শুধু আমাদের ব্যাংকগুলোই জবাব দিবে না। তারাও পৃথিবীর অন্যান্য ব্যাংককে প্রশ্ন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, এপিজির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো পর্যালোচনা করে এফএটিএফের ৪০টি সুপারিশের মধ্যে ছয়টি সুপারিশে কমপ্লেয়েন্ট (সি) , ২০টি সুপারিশে লার্জলি কমপ্লেয়েন্ট (এলসি) এবং ১৪টি সুপারিশে পার্টশিয়ালি কমপ্লেয়েন্ট (পিসি) অর্জন করেছে। এসব অর্জনের ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ব্যয় হ্রাস পাবে। একইসঙ্গে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ, পুঁজিবাজারে পোর্টফোলিও বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রবাহ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ডেপুটি হেড অব বিএফআইইউ নওশাদ আলী চৌধুরী, বিএফআইইউ-এর অপারেশনাল হেড ও মহাব্যবস্থাপক দেবপ্রসাদ দেবনাথ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, সংবাদ সম্মেলনে আগে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মানিলন্ডারিং বিভাগের প্রধানদের সাথে বৈঠক করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ওই বৈঠকে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাস অর্থায়ন প্রতিরোধ নিয়ে এপিজির অনুমোদিত প্রতিবেদনে বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, গত ৭ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত এপিজির বার্ষিক সভায় বিএফআইইউ প্রধান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান পাঁচটি বিষয়ে সার সংক্ষেপ উপস্থাপন করার পর আইও-১ (রিস্ক, পলিসি এন্ড কো-অর্ডিনেশন) এর বিষয়ে ৯টি দেশে সমর্থন করলেও যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও কানাডা বিরোধিতা করার কারণে তা অনুমোদন হয়নি। তবে আইও-২ (ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন) এর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিরোধিতা করলেও বাংলাদেশ রেটিং উন্নয়নের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এছাড়া আইও-৬ (ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স)-এর রেটিং মডারেট হতে সাবসটেন্সিয়াল পর্যায়ে উন্নতকরণের প্রস্তাব ওই চারটি দেশের বিরোধিতার কারণে তা করা যায়নি। তবে আইও-৯ (ইনভেস্টিগেশন ও প্রোশিকিউশন)-এর বিষয়ে কোন দেশ বিরোধিতা না করায় বাংলাদেশের রেটিং মডারেট হতে সাবস্টেনশিয়াল করা হয়। তবে এপিজির সভায় বাংলাদেশের পক্ষে ভারত, ফিজি, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটান, চীন, মালদ্বীপ, ফিলিপাইনসহ পনেরটির বেশি দেশ বক্তব্য উপস্থাপন করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।