Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিরিয়ায় হত্যাকান্ড বন্ধে রাশিয়ার উপর চাপ সৃষ্টি করার আহ্বান

তুরস্ক আমার পিতার দেশ : বরিস জনসন

প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন সোমবার প্রথমবারের মত তুরস্ক সফরে পৌঁছেন। এ সফরকালে তিনি তুরস্ককে আমার পিতার দেশ বলে উল্লেখ করেন। সফল ব্রেক্সিট প্রচারণার কয়েকমাস পর এ সফর অনুষ্ঠিত হল যাতে তুরস্ক বিরোধী মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছিল। খবর ১২৪ নিউজ।
আংশিক তুর্কি বংশোদ্ভূত বরিস জনসন দক্ষিণপূর্বে সিরীয় উদ্বাস্তুদের একটি শিবির পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে তার এ সফর শুরু করেন।
ব্রিটেনের স্কাই নিউজের খবরে বলা হয়, গাজিয়ানটেপে পৌঁছে তিনি নিজিপ উদ্বাস্তু শিবিরে যান, সিরীয় উদ্বাস্তু পরিবারগুলোর সাথে কথা বলেন ও একটি নার্সারি পরিদর্শন করেন।
তিনি জাতিসংঘের ত্রাণবাহী যানবাহন যেখানে অবস্থিত সে স্থানও জরিপ করেন এবং উন্নয়নকৃত বিস্ফোরক যন্ত্র (আইইডি) চিহ্নিতকরণ ও অপসারণের কৌশল শিক্ষা দিতে উদ্বাস্তুদের একটি প্রশিক্ষণ কোর্সও প্রত্যক্ষ করেন।
উদ্বাস্তু শিবিরে থাকাকালে জনসন সিরিয়ায় হত্যাকা- বন্ধে রাশিয়ার উপর চাপ সৃষ্টির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
সিরিয়া সীমান্তের লাগোয়া উত্তরে অবস্থিত গাজিয়ানটেপ সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা লোকদের একটি প্রধান আশ্রয়কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। তুরস্কে বর্তমানে ৩০ লাখ উদ্বাস্তু রয়েছে যাদের অধিকাংশই সিরীয়। এছাড়া ১০ লাখেরও বেশী উদ্বাস্তু ইউরোপে যাওয়ার জন্য ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে তুরস্ককে ব্যবহার করে।
বরিস জনসন মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের সাথে সাক্ষাতের জন্য আংকারা যান। এ বছরের গোড়ার দিকে তিনি এরদোগান সম্পর্কে একটি অপ্রিয় কবিতা লিখে আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছিলেন। সাবেক লন্ডন মেয়র মে মাসে সে কবিতাটি লেখেন এবং রক্ষণশীল ব্রিটিশ সাময়িকী স্পেকটেটর-এ তা প্রকাশিত হয়।
জল্পনা-কল্পনা চলছিল যে জনসন ও এরদোগানের মধ্যকার সাক্ষাতটি বাজে হবে। তবে জনসন বলেন তিনি আনন্দিত যে তিনি তুরস্কে আসার সময় থেকে কোনো আলোচনাতে কবিতার কথা মোটেই আসেনি।
আংকারায় থাকাকালে বরিস জনসন তুরস্ককে তার পিতৃভূমি বলে উল্লেখ করে জোর দিয়ে বলেন যে তার আত্মীয়রা তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন পদে কাজ করেছেন। জনসনের প্রপিতামহ আলি কামাল প্রথম মহাযুদ্ধের পর স্বল্পকালের জন্য তুরস্কের একজন মন্ত্রী ছিলেন।
তিনি বলেন, আপনাদের কেউ কেউ জেনে থাকতে পারেন যে এটা আমার পিতার দেশ, এই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমার আত্মীয়রা চাকরি করতেন, তাদের একজন ছিলেন আমার এক চাচা জাকি কুনেরালপ।
একজন ঊর্ধ্বতন তুর্কি কূটনীতিক হিসেবে কুনেরালপ কয়েক দশক চাকরি করেন। তিনি ছিলেন, জনসনের প্রপিতামহ আলি কামালের পুত্র যিনি ১৯২০-এর দশকে খুন হন। জাকি কুনেরালপের পুত্র সেলিমও ছিলেন একজন ঊর্ধ্বতন কূটনীতিক। তিনি ২০১৫ সালে অবসরগ্রহণ করেন।
আংকারায় তার তুর্কি প্রতিপক্ষ মেভলুত কাভসোগলুসহ সংবাদ সম্মেলনের পর জনসন প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় কবিতা নিয়ে বিদ্বেষের কথা সবাই বিস্মৃত হন।
প্রেসিডেন্টের অফিসের করা ভিডিওতে দেখা যায়, দু’জনই হাসিমুখে ছিলেন এবং এরদোগান যখন জনসনকে ম্যাঞ্চেস্টার মেয়রের কাছে অটোম্যান সুলতানের লেখাপত্রের একটি রেপ্লিকা উপহার দেন তখন তাদের হাসতে দেখা যায়।
এ বৈঠকের সময় জনসন যুক্তরাজ্য ও তুরস্কের মধ্যে নয়া অংশীদারিত্বের আহ্বান জানান এবং যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের পর এক নতুন বিশাল মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আমরা ইইউ ত্যাগ করছি, ইউরোপ নয়।
তুরস্কের ইইউ বিষয়ক মন্ত্রী ওমর সেলিকের সাথে এক সংবাদসম্মেলনে বরিস জনসন তুরস্কের সাথে তার দেশের বিদ্যমান বাণিজ্য সম্পর্কের প্রশংসা করেন এবং বলেন, আমি তুর্কি জিনিসপত্রের একজন গর্বিত মালিক।
জনসন বলেন, আমরা যুক্তরাজ্যে তুর্কি জিনিসপত্রের বৃহত্তর গ্রহীতা হতে পেরে ভাগ্যবান। আমি আমার দেশের আরো বহু মানুষের মত সুন্দর, চমৎকার কাজ করে এমন একটি তুর্কি ওয়াশিং মেশিনের অধিকারী হতে পেরে অবশ্যই গর্বিত।
তিনি বলেন, তুরস্ক যে সব গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে তার কিছু তিনি দেখেছেন। তিনি প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি যে উদারতা প্রদর্শন করছেন তার জন্য আপনাকে অভিনন্দন।
তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর কথিত ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আংকারার দমনের ঘটনায় উদ্বেগের কারণে ইউরোপের সাথে তুরস্কের সম্পর্কে তিক্ততা সৃষ্টি হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিরিয়ায় হত্যাকান্ড বন্ধে রাশিয়ার উপর চাপ সৃষ্টি করার আহ্বান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ