পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের তুলনায় তিন-চার ফুট বেড়েছে। এতে প্লাবিত হচ্ছে লোকালয়। উপকূলীয় সাত ইউনিয়নের দুই লক্ষাধিক মানুষের মধ্যে আতঙ্কও বাড়ছে। নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূল জনপদের ইউনিয়নের মধ্যে কোনাখালী, বিএমচর, ঢেমুশিয়া, পূর্ব বড় ভেওলা, সাহারবিল, পশ্চিম বড় ভেওলা ও বদরখালী ইউনিয়নের মানুষ মাতামুহুরী নদীর তিনটি পয়েন্টের বেড়িবাঁধ ভাঙন নিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে আছে।
শনিবার ও রোববার দুপুরে জোয়ারের পানিতে এসব অঞ্চলের বেড়িবাঁধ ছুঁই ছুঁই পানি উঠেছে। অমবশ্যার প্রভাবে জোয়ারের পানিতে এসব অঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ কোনাখালী এলাকার কাইদ্দ্যার দিয়া অংশের বেড়িবাঁধ উপচে পড়েছে নদীর পানি। টানা বৃষ্টি শুরু হলে ও অমাবশ্যার জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পেলে ঝুঁকিপূর্ণ বেঁড়িবাধ কইন্যারকুম, মরংঘোনা ও কাইদ্দ্যার দিয়া অংশ ভেঙে ৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
তবে, কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের ৩টি স্পটে মাতামুহুরী নদীর ভাঙন রোধকল্পে জিও ব্যাগ ভর্তি বালু দিয়ে মাতামুহুরী নদীর ভাঙন ঠেকানোর কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছে।
জানা গেছে, মাতামুহুরী নদী একসময় জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে আশীর্বাদ হলেও বর্তমানে মরণদশায় পরিণত হয়েছে। নদীর উজানে লামা ও আলীকদম উপজেলার পাহাড় থেকে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন ও অপরিকল্পিত পাথর আহরণের ফলে প্রতিবছর বর্ষাকালে বৃষ্টির পানির সঙ্গে নেমে আসা পলি জমে মাতামুহুরী নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক সৃষ্ট আচরণের ফলে মাতামুহুরী নদী বর্তমানে ভয়াবহ নাব্য সঙ্কটে পড়েছে। এ অবস্থার কারনে গভীরতা কমে যাওয়ায় গেল দুই যুগের অধিক সময় থেকে ১৪৮ কিলোমিটার আয়তনের মধ্যে অন্তত ৭০ কিলোমিটার জনবসতিপুর্ণ এলাকাজুড়ে নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ডুবোচর জেগে উঠেছে। এতে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্নিত হবার কারণে প্রতিবছর বর্ষাকালে দুইতীর উপচে লোকালয়ে প্রবাহিত হচ্ছে জোয়ারে ও ঢলের পানিতে। এতে অব্যাহত রয়েছে ভাঙনের ভয়াবহতা। এভাবে বছর বছর ভাঙন তান্ডবে ক্রমান্বয়ে ছোট হচ্ছে চকরিয়া বিস্তীর্ণ জনপদ। ফলে নদী ভাঙন আতঙ্কে ভুগছেন নদীর তীর এলাকায় বসবাসরত অন্তত লক্ষাধিক বাসিন্দা। পাশাপাশি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি, গ্রামীণ সড়ক, স্কুল, মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানাসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
জনপ্রতিনিধিরা অভিযোগ, প্রতিবছর ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোটি কোটি টাকা বরাদ্দে উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রাখলেও জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিতে স্থায়ীভাবে টেকসই কোনধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছেনা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অস্থায়ী প্রকল্প গ্রহন করার কারণে নদীর ভাঙনের তীব্রতায় তা বছরের মধ্যে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, মাতামুহুরী নদীর ভাঙন প্রতিরোধে একাধিক টেকসই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য উর্ধ্বতন দপ্তরে ইতোপূর্বে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দের অভাবে চকরিয়া উপজেলার অধিক ঝুঁকিপুর্ণ এলাকায় টেকসই ও বড় আকারের প্রকল্প হাতে নেয়া যাচ্ছে না।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে মাতামুহুরী নদীর তীরবর্তী ভাঙনের কবলে চরম হুমকির মুখে পড়েছে পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল বারী পাড়া, ছাবেতপাড়া, চরপাড়া, কাজীরপাড়া, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তরছঘাটা, জলদাশপাড়া ও বিএমচর ইউনিয়নের বেতুয়া বাজার মসজিদ, কুরিল্যার তলা, কোনাখালী ইউনিয়নের কইন্যারকুম, কাইদ্দ্যার ডিয়া, মরংঘোনা, সিকদাপাড়া পয়েন্টেসহ একাধিক জনপদ।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, মাতামুহুরী নদীর ভয়াবহ ভাঙন তান্ডবে গেল দুই যুগে বসতি হারিয়ে অন্তত হাজার হাজার পরিবার গৃহহীন হয়েছেন। গৃহহারা এসব পরিবার বেঁচে থাকার তাগিদে ঠাঁই নিয়েছে বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে। বর্দমানে মাতামুহুরী নদীতে বিলীন হওয়ার পথে রয়েছে কোনাখালী বাংলা বাজার-বদরখালী সড়ক। সাধারণ মানুষ ও স্কুল-কলেজ এবং মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের এই পথটির অধিকাংশ সড়কের মাঝখানের অংশ মাতামুহুরী নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে ভারি যান চলাচল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।