পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তিতাসের লাইনের লিকেজ থেকে ভবনের একটি কক্ষে গ্যাস জমে। ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে তৈরি করা তদন্ত কমিটি তিতাসকে দায়ী করে প্রতিবেদন তৈরি করছে। চলতি সপ্তাহেই ওই প্রতিবেদন পুলিশ সদর দফতরে জমা দেয়া হবে। তিতাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চরম অবহেলার বিষয়টি উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত ২৭ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মগবাজারের ওয়্যারলেস গেট এলাকায় রাখিনীড় নামের একটি তিনতলা ভবনের নিচ তলায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণে ১২ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। বিস্ফোরণের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, বিস্ফোরক অধিদফতর, তিতাস ও পেট্রোবাংলার পাশাপাশি পুলিশ সদর দফতর থেকে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যার নেতৃত্বে রয়েছেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান। কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের প্রধান রহমত উল্লাহ চৌধুরী সুমনকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, গ্যাসের উৎসটা কোথা থেকে সেটা বের করা জরুরি। আমরা সেটা করেছি। এত অবহেলাজনিত মৃত্যুর ঘটনায় কাউকে ছাড় দেয়ার প্রশ্ন আসে না। তদন্তে যা পাচ্ছি তা-ই প্রতিবেদনে উল্লেখ করছি। একচুল এদিক-সেদিক হবে না।
তদন্ত কমিটির প্রধান পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমরা পুরো বিস্ফোরণের ঘটনাটি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে তিতাসের লাইনের লিকেজ থেকে ভবনের একটি কক্ষে গ্যাস জমে এ ঘটনা ঘটার আলামত পেয়েছি। চলতি সপ্তাহেই আমরা এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেব।
তদন্ত কমিটির একজন সদস্য জানান, বিস্ফোরণের ঘটনায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর ধারা উল্লেখ করে রমনা থানায় পুলিশ বাদী হয়ে যে মামলা দায়ের করেছে, সেই মামলাটিও তদন্ত করছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। পুলিশ সদর দফতরের গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী মামলার তদন্ত করা হবে। তিনি আরো বলেন, ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় তিতাস যে তদন্ত কমিটি করেছিল, অনেকটা তড়িঘড়ি করে সবার আগে সেই কমিটি তিতাসের নিয়ন্ত্রক সংস্থা পেট্রোবাংলার কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। প্রতিবেদনে নিজেদের দায় এড়িয়ে এলপিজি সিলিন্ডারের কারণে শর্মা হাউজের কিচেন থেকে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে তারা উল্লেখ করেছে। তবে এলপিজি সিলিন্ডার থেকে এত ভয়াবহ বিস্ফোরণ কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরাও বলছেন, তারা ঘটনার পরপরই ওই ভবনে মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি পরিমাপ করেছেন। ভবনের পশ্চিমাংশে যে বেঙ্গল মিটের দোকান ও চিলার রুম ছিল সেদিকটায় মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি পেয়েছেন। যা তিতাসের পাইপ থেকে লিকেজ হয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছেন তারা। মূল সড়কের তিতাসের গ্যাস পাইপ থেকে একটি সংযোগ ছিল ওই ভবনে। কয়েক দিন আগে বন্ধ করে দেয়া হয় ওটা। কিন্তু সেখানে একটি পরিত্যক্ত গ্যাস রাইজারের উপস্থিতিও পাওয়া গেছে। ওই সংযোগ পাইপ থেকে লিকেজ হয়ে গ্যাস বেঙ্গল মিটের চিলার রুমে গিয়ে জমাটবদ্ধ হয়েছিল। বেঙ্গল মিটের চিলার রুমের তাপমাত্রা স্বাভাবিকভাবে কম রাখা হয়। যেখানে তাপমাত্রা কম থাকে সেখানেই মিথেন গ্যাস জমতে থাকে দ্রুত। চিলার রুমের গ্যাস জমাট বেঁধে বাতাসের সংমিশ্রণে এসে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। কমিটি সূত্রে জানা গেছে, মগবাজারের এই বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে তারা এখন পর্যন্ত অর্ধশতাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন। ভবনের মালিক থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন এ তালিকায়।
কমিটিতে বিস্ফোরক অধিদফতরেরও একজন প্রতিনিধি রয়েছেন। কমিটির সদস্যরা বিস্ফোরণের কেন্দ্রস্থল হিসেবে বেঙ্গল মিটের চিলার রুমকেই চিহ্নিত করে বলছেন, বিস্ফোরণের আগে চিলার রুমের চারপাশের অবকাঠামোর বর্ণনা লিপিবদ্ধ করে বিস্ফোরণের পর এর মাত্রা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করা হয়েছে। বেঙ্গল মিটের পশ্চিম দিকের জেনারেটর রুমের নিচ দিয়ে সড়কের মূল গ্যাস লাইন থেকে কোনাকুনি দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে প্রধান ফটকের কাছে গ্যাসলাইনের একটি পরিত্যক্ত রাইজার ছিল। মূলত এই রাইজার থেকেই লিকেজ হয়েছিল। এখানেই মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন অনুসন্ধান কমিটির সদস্যরা। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, কমিটির প্রতিবেদন ধরে মামলার তদন্ত চলবে। প্রতিবেদনে যদি তিতাসের ওই অঞ্চলের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর অবহেলার বিষয়টি পরিষ্কার হয়, তবে তাকে বা তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকার দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম-পরিচয় জানার জন্য তিতাসের কাছে চিঠি লেখা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।