পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : আলেপ্পোকে পুরোপুরি ভাবে বিদ্রোহীদের দখলমুক্ত করার উদ্দেশ্যে শহরটির পূর্বদিক থেকে তুমুল আগ্রাসী সামরিক অভিযান চালাচ্ছে সিরিয়া সরকার। সাফল্যও আসছে। এ কাজে সিরীয় একনায়ক বাশার আল-আসাদের দোসর হয়েছে ইরান ও লেবাননের শিয়া বাহিনী এবং রাশিয়ার যুদ্ধবিমানগুলি। কিন্তু ক্রমাগত বোমা ও শেল বর্ষণের মুখে পড়ে চূড়ান্ত দুরবস্থার মুখে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। আংশিক সরকারি অবরোধের জেরে খাদ্য ও জ্বালানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে এলাকায়। বেঘোরে মৃত্যুর শঙ্কা থেকে বাঁচতে ঘরছাড়া হয়ে তুরস্কে আশ্রয় নেওয়ার জন্য সীমান্তে ভীড় জমিয়েছেন অন্তত ৩৫ হাজার সিরিয়ান নাগরিক। চূড়ান্ত শরণার্থী চাপের আশঙ্কায় এখনই সীমান্তের দরজা না-খুললেও, ও’পার থেকে সাহায্য পাঠিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে চাইছে তুরস্ক সরকার। আইআইএসএস গবেষণা সংস্থার বিশেষজ্ঞ এমিল হোকায়েমের মতে, মুখে সংঘর্ষবিরতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাস্তবের মাটিতে বিদ্রোহীদের নাস্তানাবুদ করার কৌশল নিয়েছে সিরিয়া সরকার, যাতে শান্তি আলোচনায় নিজেদের সুবিধামতো শর্তগুলো চাপানো যায়। যাতে আন্তর্জাতিক মহল সিরিয়ায় আইএস ও আসাদের মধ্যে থেকে যে কোনও একটা বিকল্প বাছতে বাধ্য হয়। আর, আইএস চাইছে, সেনার হামলায় অন্যান্য বিদ্রোহী সংগঠনগুলি যতটা সম্ভব নির্মূল হয় এবং আইএস-ই প্রধান সরকার-বিরোধীর ভূমিকায় নামতে পারে।
গোটা ঘটনায় সিরিয়া সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে মিউনিখে আসন্ন ‘শান্তি আলোচনা’ একদম ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সোমবারই ঝটিকা অভিযানে সিরিয়ার সবথেকে বড় শহর ও এককালীন বাণিজ্য কেন্দ্র আলেপ্পোর উত্তরে কেফিন নামে নতুন এক গ্রাম দখল করেছে সিরীয় সেনাবাহিনী এবং ‘সেখানে সন্ত্রাসবাদীদের শেষ গোষ্ঠীটিকেও টিঁকতে দেয়নি’, জানিয়েছে সিরিয়ার সরকারি সংবাদসংস্থা সানা। লেবাননের হেজবুল্লাহ গোষ্ঠীর ‘আল-মানার টিভি’ এবং ‘আল-মায়াদিন’ চ্যানেলে কেফিন ‘পুনদর্খল’ ও তার পরের অবস্থার লাইভ সম্প্রচার দেখানো হয়েছে। পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ জানিয়েছে, এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম সরকারি বাহিনীর লাগাতার বোমাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তুরস্ক সীমান্ত থেকে আলেপ্পো পর্যন্ত যে রাস্তা ধরে বিদ্রোহী এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলি সাহায্য সরবরাহ করত, সেটি বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে সেনা। ফলে ভবিষ্যতে আরও বড় রকমের অবরোধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভাবের মধ্যে পড়তে পারেন আলেপ্পোয় এখনও আটকে থাকা অন্তত ৩ লাখ ২০ হাজার মানুষ। তারা ভাবছেন, ‘মরার জন্য অন্য জায়গায় যাওয়ার দরকার কী? আমরা না হয় বাড়িতেই মরব।’
সিরিয়ার একাংশ আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীর দখলে থাকলেও আলেপ্পো ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে তাদের নয়, বরং আল-নুসরা, আহরার আল-শাম এবং ফ্রি সিরিয়ান আর্মির বিভিন্ন গোষ্ঠীর বিদ্রোহীদের বেশি রমরমা। নিজেদের মধ্যেও বিস্তর গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকলেও বিপাকে পড়ে এবার নিজেদের ‘সঙ্ঘবদ্ধ’ করতে চাইছে তারা। আহরার আল-শাম ঘোষণা করেছে, ‘সিরিয়ান বিপ্লবের সমস্ত উপদলের প্রতি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার হাত বাড়াচ্ছি, কোনও শর্ত ছাড়াই।’ বিদ্রোহীরা সরকারি সেনাকে রোখার প্রাণপণ চেষ্টা চালালেও তাদের কাছে যুদ্ধবিমান বিধ্বংসী বন্দুক-কামান বা টি-৯০ ট্যাঙ্ক না-থাকায় সুবিধে করতে পারছে না তারা। গত কয়েক দিনে আলেপ্পো, হোমস ও ইদলিব শহরে বিদ্রোহীদের কয়েকজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার নিহতও হয়েছেন। অন্যদিকে, সরকারি হামলার জেরে তুরস্ক সীমান্তে জড়ো হওয়া ৩৫ হাজার সিরিয় শরণার্থীর অনেকেই বাব আল-সালামেহ সীমান্ত ক্রসিংয়ে শিশু-নারী-বৃদ্ধসহ প্রবল ঠা-ার মধ্যে খোলা আকাশের নীচে দিন কাটাচ্ছেন।
সীমান্তের ও’পার থেকেই তাদের খাদ্য, ওষুধ ও তাঁবু খাটানোর সরঞ্জাম সরবরাহ করে সাহায্য করার চেষ্টা করছে তুরস্ক কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। তুরস্ক সরকার জানিয়েছে, একমাত্র কোনও ‘অসাধারণ সঙ্কট’ তৈরি হলে তবে ওই শরণার্থীদের জন্য সীমান্তের দরজা খোলা হবে। এর মধ্যে অন্তত ২০ লাখ ৫০ হাজার সিরীয় শরণার্থী তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছে। গত সোমবারই তুরস্কের উপ-প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এ ব্যাপারে ‘ধারণক্ষমতার শেষে’ পৌঁছে গিয়েছে তারা। শরণার্থীদের দেখভালের জন্য এবং ইউরোপের মূলভূখ-ে সেই সঙ্কট রুখতে তুরস্ককে ৩৩০ কোটি ডলার অর্থসাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউ-এর বিদেশনীতি বিভাগের প্রধান ফেদেরিকা মোগহেরিনির বক্তব্য, ‘শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়াটা তুরস্কের আইনত না হলেও নীতিগত কর্তব্য তো বটেই। -সূত্র : সংবাদসংস্থা
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।