পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে বিশুদ্ধ রক্তের সঞ্চালন হবে বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতিম-লীর সদস্য ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে আমরা সেøাগান দিচ্ছি প্রযুক্তির সঙ্গে নেতৃত্বে সমন্বয়ে। ট্রাডিশনের সঙ্গে টেকনোলজির সমন্বয় করে নবীন-প্রবীনের সমন্বয়ে আওয়ামী লীগের আগামী জাতীয় সম্মেলনে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা বিশুদ্ধ রক্তের সঞ্চালন করবেন। অনেক পার্টি কত তরুণকে নেতৃত্বে দিয়েছে সে বড়াই অনেকেই করেন। দুষিত রক্ত সঞ্চালন করে লাভ নেই। বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন আওয়ামী লীগে হবে। নতুন রক্ত মানে বিশুদ্ধ রক্ত। বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করতে হবে।
সৈয়দ শামসুল হকের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি ছিলেন আমাদের নেত্রীর অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় এবং প্রিয় ব্যক্তি। তাকে স্বাধীনতা পদক দিতে গিয়ে নেত্রী বলেছিলেন, স্বাধীনতা পদক দিতে পেরে আমি নিজে সম্মানিত বোধ করছি।
মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা মিটিং যখন করবেন, একটু সাজিয়ে নেবেন। কারা কারা বক্তব্য দেবেন, কে কতক্ষণ বলবেন-এই বিষয়গুলোর আলাপ-আলোচনার দরকার আছে। আপনি আমাকে প্রধান অতিথি করলেন, আমি আসলাম। মাগরিবের আযান হয়ে গেছে, এখন আমি কি বলবো? এখন কি বক্তব্য দেয়া আমার সমীচিন? এর আগেও আমি আপনাদের মিটিংয়ে আসিনি। তাহলে প্রধান অতিথি হয়ে আমার লাভ কি হলো? এই ট্রাডিশনগুলো যদি বাদ না দেন, এই ট্রাডিশন থেকে যদি বেরিয়ে না আসেন তাহলে পার্টি এগুবে না।
তিনি বলেন, উন্নয়ন-অগ্রগতিতে নেত্রী ডিজিটালাইজেশন করেছেন। আমাদের আচার-আচরণে ডিজিটাল হওয়ার প্রয়োজন নেই। আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য সিনিয়ারদের সম্মান করা, দলের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখা। আচার-আচরণে এনালগ হতে হবে। উন্নয়ন-অর্জন ডিজিটালে থাক, আমাদের আচার-আচরণ এনালগ থাকুক।
সড়ক ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতার দাপট কেউ দেখাবেন না। ক্ষমতার অহংকার কেউ দেখাবেন না। ক্ষমতা সাময়িক। এটা মনে করেন বলেই প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা বিনয়ের জন্য তিনি এগিয়ে। আমি তো বলবো বাংলাদেশে গত ৪১ বছরে সব চেয়ে সাহসী নেতার নাম শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসকের নাম শেখ হাসিনা। সফল কূটনীতিকের নাম শেখ হাসিনা।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর বীর কন্যা শেখ হাসিনা দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে, ক্ষমতার রাজনীতিতে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ তার জীবনের সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ সাহসী সিদ্ধান্ত। এই পরীক্ষা অগ্নি পরীক্ষা। ৩৮ শতাংশ পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান। আজকে সারা দুনিয়া শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আরেক ধাপ উপরে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ৩০ হাজার কোটি টাকায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ নদী সেতু নির্মাণের মাধ্যমে শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছে আমরাও পারি। বিশ্বব্যাংক আমাদেরকে চোর আখ্যা দিয়ে পদ্মা সেতু থেকে চলে গিয়েছিলো। শেখ হাসিনা আজ প্রমাণ করে দিয়েছে আমরা চোর নই, আমরা বীরের জাতি।
শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কাদের আরও বলেন, ৩০ হাজার কোটি টাকায় যে নেত্রী পদ্মা সেতু করতে পারেন তিনি মরে গেলেও তার এই লিগ্যাসি কোন দিনও হারিয়ে যাবে না। পলিটিক্যাল লিগ্যাসির জন্য বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকবেন। যতদিন লাল-সবুজের পতাকা উড়বে, যতদিন আমার সোনার বাংলা জাতীয় সঙ্গীত ধ্বনিত হবে অগণিত বাঙালীর হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকবেন। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে শেখ হাসিনার ৭০তম জন্মদিনে আমি বলতে চাই, বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধু কন্যা ৭০ বছর উন্নয়ন-অর্জনে এগিয়ে নিয়ে গেছে। এই লিগ্যাসির কোন দিনই মৃত্যু হবে না।
এমাজউদ্দীন সাহেবের বক্তব্যে অবাক হানিফ
প্রধানমন্ত্রীকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমেদের বক্তব্যে অবাক হয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। তিনি বলেন, এমাজউদ্দীন সাহেব বলেছেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অনেক দিয়েছেন, এখন গণতন্ত্রটা ফিরিয়ে দেন। তাঁর এমন বক্তব্যে আমি অবাক হয়েছি। তিনি (এমাজউদ্দীন) গণতন্ত্রকে কোথায় নিয়ে যেতে চান? আজকে দেশের সন্ত্রাস এবং নৈরাজ্য আইনের শাসনের মাধ্যমে দমন করা যদি গণতন্ত্র হরণ হয় তাহলে আমার কিছু বলার নেই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত হান্নান শাহের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। তিনি বলেন, আমি তাঁর সাথে ২০১১ সালে একটি গোলটেবিল আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলাম। সেখানে অনেক যুক্তিতর্ক হয়েছে। তিনি তখন সরকারের সমালোচনা করেছিলেন এবং সেখানে সরকারের ভবিষ্যত নিয়েও মন্তব্য করেছিলেন।
হানিফ বলেন, কিন্তু তিনি (হান্নান শাহ) আজ বেঁচে নেই। আজ তিনি (হান্নান শাহ) বেঁচে থাকলে দেখতেন বাংলাদেশ এগিয়ে নেয়ার জন্য শেখ হাসিনা কিভাবে বিশ্ববাসীর কাছে প্রশংসিত হয়েছেন।
তিনি বলেন, জননেত্রীর ৭০তম জন্মদিনে আমি দেশের শিক্ষকসহ সকল শ্রেণীপেশার মানুষদের প্রতি আহ্বান জানাবো শুধুমাত্র বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা নয়। দেশের আইনের শাসনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে শেখ হাসিনার প্রতিটি পদক্ষেপকে সমর্থন করুন।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির জন্য আর্শীবাদ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্ব-পরিবারে হত্যার পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে তিনি জননেত্রী থেকে গণতন্ত্রের মানস কন্যায় পরিণত হয়েছেন।
খালিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘসহ ২৯টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর মতো তিনিও বাংলাদেশের মানুষকে সম্মানিত করছেন। তিনি আজ শুধু বাংলাদেশের নেত্রী নন, বিশ্ব মানবতার নেত্রী।
গুলশানে নিহতদের স্বজনরা পরিচয় দিতেও লজ্জা পাচ্ছে
গুলশান হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলাকারীদের আত্মীয়-স্বজনরা ঘৃণায় ক্ষোভে তাদের ছেলে এবং ভাইদের পরিচয় দিতেও লজ্জা পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে যে সকল জঙ্গি নিহত হয়েছে তাদের ডেডবডিগুলোসমুহ পর্যন্ত তাদের আত্মীয়-স্বজনরা নিচ্ছে না। স্বজনরা এ সকল জঙ্গিদের ঘৃণায় ক্ষোভে ছেলে এবং ভাইদের পরিচয় দিতেও লজ্জা পাচ্ছে।
তিনি বলেন, সারা বিশ্বে যখন জঙ্গি আক্রমণে জর্জরিত। বিশ্বের শক্তিধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রেও জঙ্গি হামলা হচ্ছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় এবং জিরো টলারেন্স নেতৃত্বে আমরা জঙ্গিবাদের চ্যালেঞ্জ আমরা মোকাবেলা করছি। যদিও এখানে দেশী ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সেটা উৎরে যেতে সক্ষম হয়েছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ সকল কাজ শেষ করতে পেরেছেন জনগণের ভালোবাসার কারণে। তিনি দেশের সকল মানুষকে জঙ্গি এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছেন এবং এর সফলতাও আমরা দেখছি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।