Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে না দেয়া রাজনৈতিক বিষয়

সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ভারত, চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। তবে তিনটি দেশের সঙ্গেও বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে নুরুল ইসলাম মিলন এমপির প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলন, ভারত, চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। তবে এই তিনটি দেশ হতে আমদানিকৃত পণ্যের বেশীরভাগই শিল্পের কাঁচামাল, যন্ত্রাংশ ও অত্যাবশ্যকিয় পণ্য। যা আমাদের শিল্পোন্নয়ন, রফতানি ও অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এই তিনটি দেশের সঙ্গেও বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
জাতীয় পার্টির (জাপা) সেলিম উদ্দিন এমপির এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা ফিরে পাওয়ার ক্ষেত্রে আর কোনো শর্তপূরণ বাকি নেই, সকল শর্ত ইতোমধ্যে পূরণ করা হয়েছে। এরপরেও কেন তারা আমাদেরকে জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেয় না, তা বোধগম্য নয়। সব কথা বলা যায় না। কিন্তু আমি মনে করি বিষয়টি রাজনৈতিক। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সম্প্রতি ঢাকা সফরকালেও বিষয়টি নিয়ে আমাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আমাদের বক্তব্যে কেরি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবুও আমরা জিএসপি সুবিধা পাচ্ছি না।
তিনি জানান, গত এক বছরেই দেশে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ৩ হাজার ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত অর্থবছরে (২০১৫-১৬) দেশে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৭৭৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের (২০১৪-১৫) তুলনায় ৩ হাজার ৬৫০ মার্কিন ডলার কম। আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বাংলাদেশ পরিসংখ্যাণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী গত সাড়ে সাত বছরে গড়ে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এই বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ৪ দশমিক ৯ শতাংশ।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবুল কালামের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এবার কোরবানির গরুর চামড়ার মূল্য নিয়ে প্রথমে কিছু সমস্যা থাকলেও এখন সেটি ঠিক হয়ে গেছে। ট্যানারি মালিকরা এখন নির্ধারিত মূল্যেই চামড়া কিনছেন। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে না, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে এটি করা উচিতও নয়। তারপরেও এবার ঈদে ট্যানারি মালিকদের অ্যাসোসিয়েশনের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা চামড়ার ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম। রাজধানীতে প্রতি বর্গফুটের ৫০ টাকা এবং মফস্বলে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ঈদের প্রথমদিন চামড়ার মূল্য না পাওয়া নিয়ে একটু সমস্যা ছিল, কিন্তু পরদিন সেটি ঠিক হয়ে যায়। গণমাধ্যমেও এখন এনিয়ে আর তেমন খবর নেই। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারেও চামড়ার মূল্য প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে।
সংসদ সদস্য মো. আবদুল্লাহ’র প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির কারণে দেশীয় বাজারে কয়েকটি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। যেহেতু আন্তর্জাতিক বাজার হতে আমদানি করে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ করা হয় তাই আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধি পেলে স্থানীয় বাজারে তার প্রভাব পড়ে। তবে সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য বাজারে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করেছে।
আবদুল মতিনের প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ জানান, সাধারণ মানুষের কল্যাণার্থে সরকার বাজার পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও পরীবিক্ষণ করে। কোন অসাধু ব্যবসায়ী কোন প্রকার সুযোগ যাতে গ্রহণ করতে না পারে সেজন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গঠিত দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও পূর্বাভাস সেল প্রাত্যহিক পরীবিক্ষণ করে থাকে। ফলে দীর্ঘদিন যাবত ভোক্তা সাধারণ সহনীয় মূল্যে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ক্রয় করতে পারছে। তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের কোন অসাধু ব্যবসায়ী মহল গড়ে উঠতে না পারে সে বিষয়ে কাজ করার জন্য সরকার ‘প্রতিযোগিতা কমিশন’ গঠন করেছে। বিভিন্ন এজেন্সীর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে।
আফজাল হোসেন এমপির প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, এমএলএম ব্যবসার নামে কেউ যাতে জনগণকে প্রতারিত করতে না পারে সেই লক্ষে সরকার দুটি পৃথক আইন প্রণয়ন করেছে। উক্ত দুটি আইন ও বিধিমালার শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থ হওয়ায় গত অর্থবছরে কোন এমএলএম কোম্পানীর লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। আর চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসা পরিচালনায় লাইসেন্স প্রাপ্তির লক্ষে কোন কোম্পানী আবেদন করেনি। তিনি জানান, আইনভঙ্গ করে অবৈধভাবে কেউ এমএলএম ব্যবসা পরিচালনা করলে তার বিরুদ্ধে উক্ত আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সকল জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে না দেয়া রাজনৈতিক বিষয়
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ