পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আলেপ্পোতে বর্বরতার জন্য রাশিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের অভিযোগের তীর
ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আলেপ্পোতে বর্বরতার জন্য রাশিয়াকে অভিযুক্ত করেছেন। ব্রিটেনের দূত ম্যাথু রাইক্রফট আরো অগ্রসর হয়ে যুদ্ধাপরাধ চালিয়ে যেতে সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদের সাথে দল বাঁধার জন্য ভøাদিমির পুতিনকে অভিযুক্ত করেছেন।
বিশে^র অন্যতম প্রধান শক্তির প্রতি সরাসরি ক্রোধ প্রকাশের এ এক বিরল ঘটনা। কিন্তু এ অভিযোগের তীর নিক্ষেপ করে কি কোনো হেরফের হবে? বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সিরিয়ায় পাশ্চাত্যের মতো রাশিয়াও শক্তিহীন। খবর দি টেলিগ্রাফ।
অতীত কি এড়িয়ে যাওয়ার ব্যাপার? না। রাশিয়ার নিজের কূটনীতিকরা এ ধরনের সমালোচনা বিশেষ করে বেসামরিক লোকদের মৃত্যুর জন্য কে দায়ী তা ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দিতে সিদ্ধহস্ত। জাতিসংঘে মস্কোর রাষ্ট্রদূত ভিতালি চুরকিন বলেন যে, সর্বশেষ সিরীয় শান্তি উদ্যোগ ভেঙে গেছে, কারণ পাশ্চাত্য ইসলামী জঙ্গিদের অস্ত্র সরবরাহ করছে।
যুদ্ধবিরতি কালে আলেপ্পোতে বোমাবর্ষণ অব্যাহত রাখায় রাশিয়ার যৌক্তিকতার পিছনে রয়েছে তার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার এ শর্তের ব্যাখ্যার অস্পষ্টতা।
উদাহরণস্বরূপ, রাশিয়ার বিমান সমর্থনে সিরীয় বাহিনী সম্প্রতি আলেপ্পোর বাইরে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ হান্দারাত নামক স্থানে অবস্থিত ফিলিস্তিনি শিবিরে নিষিদ্ধ ফসফরাস বোমা ফেলে। এর ফলে সিরীয় সেনাবাহিনী স্বল্প সময়ের জন্য স্থানটির নিয়ন্ত্রণ লাভ করে এবং তারপর আবার বিদ্রোহীদের দ্বারা বিতাড়িত হয়।
রাশিয়া জোর দিয়ে বলেছে যে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে ঐ ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার জন্যই এ বিমান হামলা চালানো হয়। অধিকাংশ পর্যবেক্ষকই বলেছেন, হান্দারাত নিয়ন্ত্রণ করে জইশ আল ফাতেহ নামে যোদ্ধাদের একটি জোট যারা আনুষ্ঠানিক ভাবে সন্ত্রাসী গ্রুপ হিসেবে চিহ্নিত নয়। তবে তাদের মধ্যে উগ্র-রক্ষণশীল বিদ্রোহী গ্রুপ আহরার আল শাম-এর জঙ্গিরা রয়েছে। রাশিয়া মনে করে তাদের সন্ত্রাসী বলে চিহ্নিত করা উচিত।
বিদ্রোহী গ্রুপগুলোকে সন্ত্রাসবাদী বলে চিহ্নিত করা উচিত এবং বাশার সরকারের আবাসিক এলাকা বা হাসপাতাল- কে হামলার লক্ষ্যবস্তু করায় রাশিয়ার সহযোগিতার মধ্যে একটি পার্থক্য রয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে মস্কোর প্রতি পশ্চিমাদের ক্রোধ প্রবল। মনে হচ্ছে রাশিয়া দামেস্কে তার মক্কেল বাশারকে নিয়ন্ত্রণ করতে অনিচ্ছুক বা অপারগ। সিরিয়া ক্রমেই ভীতিকরভাবে শান্তি প্রতিরোধক হয়ে উঠছে এ কারণে যে কোনো একক শক্তিই বাশার, রাশিয়া, ইসলামিক স্টেট, আল নুসরা, ইরান, আমেরিকা বা ব্রিটেন কারোরই যুদ্ধের ফলাফলকে নিজের পক্ষে নেয়ার ক্ষমতা নেই। এটা অবিশ^াস্য যে, কেউ একা বিজয়ী হতে পারবে।
এ কারণেই সিরিয়ায় কোনো সামরিক সমাধান নেই বলে সাধারণ মন্তব্যের বদলে জাতিসংঘে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূতের এ অপমানকর মন্তব্য। তার মন্তব্য হচ্ছে সেই বাগাড়ম্বর কৌশলের একটি অংশ যা রাশিয়ার দুর্বলতার সাথে বাশার আল আসাদের ব্যবহারের সরাসরি সম্পর্কিত যেহেতু রাশিয়া সিরীয় স্বৈরশাসককে নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশ কার্টার আলেপ্পোর কাছে সম্প্রতি মানবিক সাহায্যবাহী কনভয় ধ্বংসের পর সুস্পষ্টভাবে এ অবস্থান প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, রাশিয়ানরা এ হামলার জন্য দায়ী তা তারা করুক আর না করুক। কারণ সিরীয় প্রশাসনের সহযোগী হিসেবে সিরীয়দের কাজের দায় তাদের উপর বর্তায়।
সত্য যে রাশিয়া বাশারের প্রতি তাদের সমর্থন সীমিত করে এ লজ্জা থেকে রেহাই পেতে চাইবে বলে মনে হয় না। যাহোক, জাতিসংঘের পশ্চিমা কূটনীতিকরা কোনো ভাষা রাশিয়া বোঝে তা নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা করছেন।
এখন পর্যন্ত পুতিনের হাবভাব দেখে বোঝা যায় যে মধ্যপ্রাচ্যে প্রধান শক্তি হিসেবে রাশিয়া আমেরিকাকে পিছনে ফেলেছে। আজ পশ্চিমা কূটনীতিকরা এটা স্পষ্ট করেছেন যে তারা এই দম্ভ দেখেছেন। তাদের এখন সুনির্দিষ্ট ঘটনাগুলো চিহ্নিত করা শুরু করতে হবে কোথায় কোথায় রাশিয়া তারা পারে বলার পরও তা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
সিরিয়ায় জাতিসংঘ দূত স্টাফান ডি মিস্তুরা মনে করেন যে ভবিষ্যতে আরেকটি যুদ্ধবিরতির জন্য রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এখনো ক্ষুদ্র জানালা খোলার সুযোগ আছে। আজ পর্যন্ত দু’ বিশ^শক্তির মাঝে সন্ত্রাস দমন নিয়ে সহযোগিতা রয়েছে। এটা গুরুত্বপূর্ণ আস্থা নির্মাণে কাজ করবেন া যেহেতু কারা সন্ত্রাসী সে বিষয়ে তাদের মধ্যে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে।
কোনো সহযোগিতা নবায়নের ভিত্তি হবে ভালো সমঝোতা, কারণ কেউই এ যুদ্ধে জয়ী হওয়ার মত যথেষ্ট শক্তিশালী নয়। যেহেতু ঘটনাবলী নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে তাই কেউ বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হওয়ার আগেই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার স্বার্থে তার অবসান করতে হবে।
দুর্ভাগ্যক্রমে সিরিয়ার জনগণের জন্য সর্বোত্তম আশা হতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।