Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সীমান্তে তীক্ষ নজর পাকিস্তানের

করাচীর আকাশে কম উচ্চতার ফ্লাইট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ভারতীয় সেনাদের চাঙ্গা করতে বিশেষ কোর্স

প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:৫৮ এএম, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬


ইনকিলাব ডেস্ক
ভারত সীমান্তের উপর তীক্ষè নজর রাখছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। এমনকি যে কোন সময় যে কোন পরিস্থিতিতে সামনে থেকে মোকাবেলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত তারা। জানিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। ভারতীয় এক সংবাদ মাধ্যমে এ তথ্য জানা যায়। পেশোয়ারে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি বৈঠকের পর সামরিকবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম সালেম বাজওয়া জানান, দেশের পূর্ব সীমান্তে (অর্থাৎ ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে) কড়া নজর রয়েছে পাকিস্তানের। তিনি বলেন, যে কোনোরকম পরিস্থিতির জন্য আমরা প্রস্তুত। ওই বৈঠকের নেতৃত্বে ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল রাহিল শরিফ। বৈঠকে আফগান সীমান্তের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। সেনাবাহিনী কীভাবে সীমান্তে কাজ করবে, তাও ঠিক করে দেয়া হয় ওই বৈঠকে। বর্ডার ম্যানেজমেন্টের জন্য ২০টি পোস্ট তৈরি। বাজওয়া আরো জানিয়েছেন, আফগানিস্তান সীমান্তের দিকেও নজর রাখছেন তারা। সেদিক থেকেও যদি কোনোভাবে আক্রমণ আসে, তা প্রতিহত করতেও প্রস্তুত পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। বিভিন্ন জায়গায় চলছে চিরুনি তল্লাশি। উরিতে ভারতীয় সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ১৮ সেনা সদস্যকে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় দেশের অভ্যন্তরে প্রতিবেশী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ এবং প্রতিশোধের দাবি জোরালো হয়েছে। তবে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। বাজওয়া বলেন, জোরালো প্রমাণ ছাড়া পাকিস্তানের দিকে অভিযোগ তোলা যাবে না।
এদিকে করাচির আকাশসীমায় কম উচ্চতার বিমান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পাকিস্তান। আগামী সোমবার পর্যন্ত বহাল থাকছে এই নির্দেশ। গুজরাট ও রাজস্থানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত লাগোয়া করাচির আকাশে নিম্ন উচ্চতার ফ্লাইটে নিষেধাজ্ঞা জারি করল নওয়াজ শরিফ সরকার। বিমানচালকদের উদ্দেশ্যে সোমবার রাতে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে পাকিস্তান সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘প্রক্রিয়াগত কারণে করাচি ফ্লাইট ইনফর্মেশন রিজিয়নে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৩৩ হাজার ফিট উচ্চতার ফ্লাইট লেভেলে সমস্ত উড়ানপথ বন্ধ রাখা হচ্ছে’।
ভারতের পশ্চিম সীমান্তে বিমান ঘাঁটিতে চলছে যুদ্ধের প্রস্তুতি
উরি সেনাঘাঁটিতে হামলার পর, কূটনৈতিক স্তর বা সীমান্তে পাক-ভারত সম্পর্ক এখন যথেষ্ট অস্থির। এরমধ্যেই ভারতের পশ্চিম সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সূত্রের খবর, সীমান্তে ১৮টি সেনাঘাঁটিতে জোরকদমে চলছে যুদ্ধের প্রস্তুতিও।
প্রতিরক্ষা সূত্রে খবর, শুরু হয়ে গেছে ‘এক্সসারসাইজ তালন’। ‘তালন’-এর মূল লক্ষ্যই হল ভারতের গোটা পশ্চিম সীমান্ত অর্থাৎ জম্মু-কাশ্মীর থেকে রাজস্থান পর্যন্ত নিরাপত্তা নজরদারি আরও বাড়ানো। এছাড়াও প্রত্যেক মুহূর্তে বিমানবাহিনী আকাশপথে নজরদারি রাখছে ওই অঞ্চলে প্রত্যেকের গতিবিধির ওপর।
ভারতের ৭৭৮ কি.মি. লম্বা নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর মোতায়েন করা হয়েছে আরও বেশি সংখ্যক সেনাবাহিনী। এছাড়াও গত একসপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একাধিকবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন তিন প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধানেরা। বৈঠক হয়েছে সাউথ ব্লকের ওয়াররুমেও। এরমধ্যেই সপ্তাহ শেষে সেনাবাহিনীর পশ্চিম কমান্ডোর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুরিন্দর সিংহ জম্মু-পাঠানকোট সীমান্তে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি তার বাহিনীর কমান্ডারদের নির্দেশ দিয়েছেন সবসময় যেকোনও পরিস্থিতির জন্যে প্রস্তুত থাকতে এবং অবশ্যই সজাগ থাকতে।
ভারতের সাথে সম্পর্কের বিষয়ে পাকিস্তান পার্লামেন্টে আলোচনার আহ্বান
পাকিস্তান-ভারত সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনার জন্য পার্লামেন্টের যৌথ কক্ষের অধিবেশন আহ্বানের দাবি জানিয়েছেন পাকিস্তানের কয়েকজন সিনেটর। ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের সেনাঘাঁটিতে চলতি মাসের ১৮ তারিখের হামলাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশ দু’টির সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনার এ আহ্বান জানানো হয়। এ বিষয়টি নিয়ে গতকাল শিরোনাম করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডন। পাকিস্তানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানানো হয়। এ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে সিনেট চেয়ারম্যান রেজা রাব্বানি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এ প্রস্তাবকে পাকিস্তান সরকারের গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।
পাকিস্তানকে দেওয়া সর্বাধিক সুবিধাপ্রাপ্ত রাষ্ট্রের মর্যাদা প্রত্যাহার করবে ভারত?
সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তিতে রোধ করার পাশাপাশি এবার পাকিস্তানকে দেয়া মোস্ট ফেভারট নেশন (এমএফএন) বা সর্বাধিক সুবিধাপ্রাপ্ত রাষ্ট্রের মর্যাদা প্রত্যাহার করার ভাবনাচিন্তা করছে ভারত। কেন্দ্রীয় সূত্রে খবর, আগামী বৃহস্পতিবার এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই পাকিস্তানকে এমএফএন স্টেটাস নিয়ে আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
১৯৯৬ সালে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)-র অধীনস্থ জেনারেল এগ্রিমেন্ট অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্রেড (গ্যাট) চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তানকে এমএফএন মর্যাদা দেয়া হয়েছিল। এর মাধ্যমে, শুভেচ্ছাবার্তা হিসেবে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অঙ্গীকারবদ্ধ হয় ভারত। একইভাবে, এই চুক্তির ফলে ভারতকেও প্রাধান্য দেয়ার কথা পাকিস্তানের।
ভারতীয় সেনা জওয়ানদের জন্য ডিআরডিও-আইআইটির কোর্স
ভারতীয় সেনা জওয়ানদের মানসিক সুখ-শান্তির দিকটি বিবেচনা করে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা একটি সার্বিক ফিটনেস প্রোগ্রাম তৈরি করছে। এই ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে জওয়ানরা টেনশনমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারবেন বলে দাবি। খড়গপুর আইআইটি কর্তৃপক্ষ ও ডিআরডিও-র জীবনবিদ্যা বিষয়ক বিভাগীয় শীর্ষকর্তার মত, জওয়ানরা মানসিকভাবে যত বেশি সুখী হবেন, তত বাড়বে কর্মদক্ষতা, কাজের প্রতি ভালবাসা, দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ। সূত্র : টাইমস অব ইনিডয়া, জি নিউজ, এবিপি আনন্দ ও ডন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সীমান্তে তীক্ষ নজর পাকিস্তানের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ