Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিনায় উপস্থিতি ও অবস্থান

লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক

এ. কে. এম ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

মিনা স্থানটি মক্কা এবং মুযদালেফার মাঝখানে অবস্থিত। মক্কা হতে ইহার দূরত্ব প্রায় চার মাইল। জিলহজ মাসের আট তারিখ জোহরের নামাজের আগে হজ আদায়কারীদের মিনায় উপস্থিত হতে হয়। এই দিনটিকে ‘ইয়াওমুত তারভিয়া’ বলা হয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রহ.) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন : প্রিয় নবী মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের নিয়ে জোহর, আসর, মাগরিব, এশা ও ফজরের নামাজ মিনায় আদায় করলেন। তারপর সকাল বেলায়ই আরাফাতের ময়দানের দিকে রওয়ানা হয়ে গেলেন। (জামেয়ে তিরিমিজি, ইবনে মাজাহ)। আট জিলহজের দিনে যে কোনো সময় মিনায় উপস্থিত হওয়া যায়। তবে, সুন্নাত হলো জোহরের নামাজ মিনায় উপস্থিত হয়ে আদায় করা। এখানে পূর্ণ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হয়। এই নামাজ জোহর হতে শুরু করা মোস্তাহাব। ইহাই জমহুর ফিকাবিদের মতো। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন : সূর্য যখন পশ্চিমদিকে ঢলবে, তখন মিনার দিকে রওয়ানা হয়ে যাবে। আর মিনা হতে আরাফায় যাওয়ার জন্য ফজরের নামাজের পর সূর্যোদয়ের অপেক্ষা করা ও সূর্যোদয়ের পর রওয়ানা হওয়া মুস্তাহাব। কেননা, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাই করেছেন।

মিনায় যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে তাতে কসর অর্থাৎ চার রাকাতের স্থলে দু’রাকাত আদায় করার ব্যাপারে বলা হয়েছে যে, মিনায় যে লোক মুসাফির হবে, সেই কসর পড়বে। কিন্তু নিকটবর্তী মক্কার স্থায়ী বাসিন্দারা কসর করবে না। হজরত হারেসা বিন ওয়াহাব (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে মিনায় দু’রাকাত করে নামাজ পড়েছি। অথচ আমরা সংখ্যায় অনেক বেশি ছিলাম এবং ভয়ভীতি হতেও মুক্ত ছিলাম ও নিরাপদে ছিলাম। (সহিহ বোখারি, সহিহ মুসলিম)। হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) এর সাথে মিনায় চার রাকাতের স্থলে দু’রাকাত (কসর) পড়েছি। কিন্তু মক্কার স্থায়ী বাসিন্দারা মিনায় গিয়ে কসর পড়বে না। কারণ তারা মুকীম।

মুসাফির নয়। তবে মিনায় যে লোক মুসাফির হবে, সেই কসর পড়বে। কেননা মিনায় নামাজে কসর করা সফরের কারণে। ইহা হজের অংশ নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বিদায় হজের প্রাক্কালে মিনায় কসর পড়েছেন এ জন্য সে, তিনি তখন মুসাফির ছিলেন। তিনি মদিনা হতে হজ যাত্রা করেছিলেন। মক্কা থেকে নয়। তিনি হজের ইহরাম বেঁধে ছিলেন যুলহুলাইফা নামক স্থানে। যা মক্কা হতে শত শত মাইল দূরে অবস্থিত।

ইমাম খাত্তাবী (রহ.) সুস্পষ্টভাবে বিশ্লেষণ করেছেন যে, হজরত হারিসা বিন ওয়াহাব (রা.) এবং হজরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.)-এর কথা। আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) এর সাথে মিনায় দু’রাকাত কসর পড়েছি। ইহা মক্কার অধিবাসীদের জন্যও মিনায় কসর নামাজ পড়া জায়েজ প্রমাণ করে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) তখন মুসাফির ছিলেন বিধায় দু’রাকাত পড়েছেন। মক্কাবাসীরা তথায় কসর করার প্রশ্ন করা হলে তিনি অবশ্যই কসর পড়ার নির্দেশ দিবেন না।

হজরত ওমর ফারুক (রা.) স্বীয় খেলাফতের আমলে মদিনা হতে হজ আদায় করেছেন। তিনি মিনায় কসর নামাজ পড়ে মক্কাবাসীদের উদ্দেশ্যে বলতো, হে মক্কা অধিবাসীরা! তোমরা নামাজ পূর্ণ করে পড়। আমরা মুসাফির হওয়ার কারণে দু’রাকাত পড়েছি। (ফাতহুল বারী; তুহফাতুল আহওয়াজী)। স্মরণ রাখা দরকার যে, দশই জিলহজ মুযদালিফা হতে মিনায় পৌঁছার পর শয়তানকে কঙ্কর মারতে হয়, কোরবানি করতে হয়, মাথা মুণ্ডন করতে হয়, তাওয়াফে জিরাত করতে হয়। তারপর ১১ ও ১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনায় অবস্থান করে শয়তানকে কঙ্কর মারতে হয়।



 

Show all comments
  • Ahmed hossain khan ১৮ জুলাই, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 0
    Arab sagor a jodi kunu rasta jage. Ami jeno taki tar ogro vage. Tumi ki kalima mucho O Makki hajor. Amake ki cuite dibana tur kisno sodor. Makka mukhorito korchis tura hee mata mundon. Parile amar jonno porish pardon.takito jodi moor uribar dana.akkoni roana ditam Makka to Madina.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লাব্বাইকা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ