পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কাবাগৃহের পূর্ব কোণে মানুষের বুক সমান উঁচুতে একখানি পাথর সংস্থাপিত আছে, একে ‘হাজরে আসওয়াদ’ বলা হয়। আদিতে এই পাথরটির রঙ কালো ছিল না। বরং ধবধবে উজ্জ্বল সাদা ছিল। মানুষের গোনাহ রাশি শোষণ করতে করতে এর রঙ কালো হয়ে গেছে বিধায় একে হাজরে আসওয়াদ বা কালো পাথর নামে অভিহিত করা হয়েছে।
একজন নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাকে মহান আল্লাহপাক ধবধবে সাদা পাথররূপে জান্নাতে রেখে দিয়েছিলেন। হযরত আদম (আ:) এই ধুলার ধরণীতে অবতরণ করার সময় সেই সুন্দর পাথরটিকে সাথে করে নিয়ে এসেছিলেন। সেই পাথরটিকেই দুনিয়ার মানুষ কালো পাথর নামকরণ করেছে। হযরত যাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা:) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন : রাসূলুল্লাহ (সা:) যখন (হজের সময়) মক্কা শরীফে উপস্থিত হলেন, তখন মসজিদে হারামে প্রবেশ করলেন। অগ্রসর হয়ে গিয়ে হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করলেন, একে ধরলেন ও চুম্বন করলেন। (জামেয়ে তিরমিযী, সহীহ মুসলিম)।
হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ ও চুম্বন করার যৌক্তিকতা বিভিন্নভাবে প্রতিপন্ন করা যায়। যথা :
(ক) রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : ‘এটা জান্নাতের পাথরসমূহের অন্যতম।’ এই যদি হয় অবস্থা তাহলে এর স্পর্শ ও চুম্বনের অর্থ হলো জান্নাতের সাথে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক স্থাপন করা।
(খ) রাসূলুল্লাহ (সা:) এ-ও বলেছেন : এটা পৃথিবীতে আল্লাহর দক্ষিণহস্ত। হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) হতে বর্ণিত হয়েছে নিশ্চয়ই এই কালো পাথরটি পৃথিবীর বুকে আল্লাহর দক্ষিণহস্ত। বান্দাহগণ একে স্পর্শ করে কার্যত সে হস্তের সাথেই করমর্দন করে, যেমন একজন লোক তার ভাইয়ের সাথে করমর্দন করে। অপর একটি বর্ণনায় আরো বলা হয়েছে : যে লোক রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর হাত ধরে বায়াত করার সুযোগ পায়নি সে যদি এই পাথরটি স্পর্শ ও চুম্বন করে, তবে সে যেন ঠিক আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নিকটই বায়াত করল। হযরত আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত হয়েছে রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : যে লোক কালো পাথর স্পর্শ করল, সে যেন আল্লাহর হস্ত ধারণ করল। (ইবনে মাজাহ)।
(গ) হজ আদায়কারী ও উমরাহকারী সর্বপ্রথম যখন মক্কা শরীফে উপস্থিত হন, তখন সে জিনিস আল্লাহর হস্তের স্থলাভিসিক্ত তা চুম্বন করাই বাঞ্ছনীয়। এটাই সুন্নাত, রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর আদর্শ। এটা একটি রূপক দৃষ্টান্ত মাত্র। আর দৃষ্টান্তের মাধ্যমে আল্লাহর মর্যাদা ও অধিকার বোঝানোতে কোনো দোষ নেই। এ কারণেই যে লোক হাজরে আসওয়াদের সাথে করমর্দন করল তার জন্য আল্লাহর নিকট একটা বিশেষ মর্যাদা রয়েছে, এতে কোনোই সন্দেহ নেই।
(ঘ) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর এ কথাটি বর্ণনা করেছেন : এই কালো পাথরাটির একটি জিহŸা ও দু’টি ওষ্ঠ রয়েছে। যে লোক একে চুম্বন করবে তার পক্ষে এটা কিয়ামতের দিন সত্যতার সাক্ষ্য দেবে। (ইবনে খুযাইমাহ) তবে কেউ যদি হস্ত দ্বারা কালো পাথর স্পর্শ করতে না পারে, তাহলে এর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তাকবির উচ্চারণ করে নিজের হস্ত চুম্বন করলেও ইস্তিলাম হয়ে যাবে। ইমাম আবু হানিফা (রহ:) এ মতই প্রকাশ করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।