Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কারখানার অন্য ভবনগুলোও বেহাল

রূপগঞ্জ ট্রাজেডি

মো. খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার কর্ণগোপ এলাকার সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড লিমিটেড কারখানার অন্য ভবনগুলোতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ কারখানার অন্য ভবনগুলোতেও ঘাটতি রয়েছে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত এক্সিট পয়েন্ট, ফায়ার এক্সিটিংগুইসার ও পর্যাপ্ত এক্সিট পয়েন্টের। কারখানায় সরেজমিনে গিয়ে অন্যান্য ভবনের শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বললে শ্রমিকরা এ অভিযোগ করেন।

এসময় শ্রমিকরা অভিযোগ করে জানান, হাসেম ফুড কারখানার যে ভবনটিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে সে ভবনের পাশের ভবনগুলোতেও অনেক অনিয়ম রয়েছে। নীল রংয়ের টিনের শেড দিয়ে তৈরি দুইতলা ভবনটিতে জুস তৈরি করা হতো। সেই ভবনটিতেও কোন প্রকার অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা ছিল না। জুস তৈরির কারখানাটির পাশেই রয়েছে ৬ তলা বিশিষ্ট আরো একটি ভবন। প্রথম তলায় বিভিন্ন প্রকার কোমল পানীয়, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় লাচ্ছি, চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় আমের ফ্লেভারের আইস ললি ও ষষ্ঠ তলাকে গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এসকল পণ্য পাকিস্তান, সউদী আরবসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রফতানি করা হয়। কিন্তু কারখানার ভেতরের পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে। এ ছয়তলা ভবনটিতেও উঠানামার জন্য দুটি সিড়ি রাখা হয়েছে। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের একটি সিড়ি দিয়ে উঠানামা করাতো। ওই ভবনটিতেও কোন অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থা ছিল না। এছাড়া ম্যাকরনি তৈরির ভবন, লাচ্ছা সেমাই তৈরির ভবনসহ অন্যান্য ৪টি ভবনেও তেমন কোন অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থা ছিল না। তবে কিছু কিছু স্থানে ফায়ার এক্সিটিংগুইসার ও আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য পানির পাইপের ব্যবস্থা রাখা হলেও এগুলো বহু বছর আগেই বিকল হয়ে যায় বলে শ্রমিকরা অভিযোগ করেন। এছাড়া এ কারখানার অন্যান্য ভবনগুলো সঠিক নিয়ম মেনে নির্মাণ হয়েছে কিনা তা নিয়ে শ্রমিকরাও সন্দিহান। তাদের দাবি কারখানার অন্যান্য ভবনগুলো সঠিক বিল্ডিং কোড মেনে করা হয়েছে কিনা তা যাচাই করা হোক। এছাড়া এ ভবনগুলোতেও কারখানা কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত এক্সিট পয়েন্টের ব্যবস্থা রাখেনি বলে শ্রমিকরা অভিযোগ করেন।
কারখানার ওই ভবনটি নির্মাণের সময় কোন বিল্ডিং কোড মানা হয়নি বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) ও জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম। এছাড়া ওয়ারটার রিজার্ভার, পর্যাপ্ত এক্সিট পয়েন্ট, অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থা ছিল না ওই ভবনটিতে। তবে ওই কারখানার অন্যান্য ভবনগুলোতেও একই চিত্র বলে অভিযোগ করেন শ্রমিকরা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে স্কপের প্রতিনিধিদল : অগ্নিকান্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির প্রতিনিধিদল। গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থলে যায় স্কপের আট সদস্যের প্রতিনিধিদল। পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ লেভার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাকিল আক্তার চৌধুরী, জাতীয় শ্রমিক লীগের ট্রেড ইউনিয়ন সমন্বয়ক বিষয়ক সম্পাদক মো. ফিরোজ হোসাইন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব বুলবুল, জাতীয়াতাবাদী শ্রমিক দলের অর্থ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের অর্থ সম্পাদক কাজী রুহুল আমিন, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক কনক বর্মন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের নির্বাহী সদস্য আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রফিক প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রূপগঞ্জ ট্রাজেডি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ