Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন : বিচার বিভাগে অভাবনীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে

প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৩ পিএম, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬

ইনকিলাব ডেস্ক : বাংলাদেশে আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী তার কাছে থাকা মামলাগুলোর মধ্যে ৬৫টির রায় ও আদেশ গতকাল সোমবার জমা দিয়েছেন, এবং সেগুলো গ্রহণ করা হয়েছে। অবসরে যাওয়ার পর বিচারপতিদের রায় লেখা অসাংবিধানিক Ñ প্রধান বিচারপতির এমন একটি মন্তব্য নিয়ে গত বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশে বিতর্ক চলছে। সংসদেও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমে খোলাখুলি প্রধান বিচারপতির এই মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা করেছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিবিসিকে বলেছেন, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর কর্মকা-ে অভাবনীয় এক পরিস্থিতির তৈরি হচ্ছে এবং এর প্রভাবে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হচ্ছে। সিনিয়র আইনজীবীরা মনে করেন, ব্যক্তিগত রেষারেষি থেকে দেশের শীর্ষ আদালতকে ঘিরে এমন পরিস্থিতি হচ্ছে।
সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী রোববার সুপ্রিমকোর্ট চত্বরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, অবসরে যাওয়ার পর তার লেখা রায় ও আদেশ গ্রহণ করা হচ্ছে না। সেজন্য তিনি প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি দেয়ার কথাও জানিয়েছিলেন। পরে গত রোববারই সুপ্রিমকোর্ট তাকে রায়ের সব কাগজপত্র জমা দিতে বলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত সোমবার তার লেখা রায় গ্রহণ করলে, সে বিষয়েও তিনি সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেটের কাছে সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্য দিয়েছেন।
তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাবেক বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর কর্মকা- নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ‘অভাবনীয় পরিস্থিতি হয়েছে। কোনো বিচারপতি গিয়ে গাছতলায় বা মাজারের গেটে সংবাদ সম্মেলন করবেন, এটা আমি আমার ৪২ বছরের আইন পেশায় আগে কখনও দেখিনি।’ অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেছেন, বিচারপ্রার্থী হচ্ছে সাধারণ জনগণ। তারা শুনানির পর রায় চাইবে। তা কোনো বিচারপতির আটকিয়ে রাখা ঠিক নয় বলে তিনি মনে করেন।
গত সেপ্টেম্বরে অবসরে যাওয়ার আগে পেনশন আটকে দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী প্রধান বিচারপতিকে কয়েকটি চিঠি দিয়েছিলেন। অবসরে যাওয়ার পর তিনি প্রধান বিচারপতির অভিশংসন চেয়ে রাষ্ট্রপতিকেও চিঠি দিয়েছিলেন। এ বিষয়গুলো সংবাদ মাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে।
অন্যদিকে, জানুয়ারি মাসে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা তার দায়িত্ব গ্রহণের বর্ষপূর্তিতে বলেছিলেন, কোনো কোনো বিচারপতি অবসর নেয়ার দীর্ঘদিন পর পর্যন্ত রায় লেখেন, যেটা আইন ও সংবিধানের পরিপন্থী। এ নিয়ে আইন অঙ্গন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক অঙ্গন পর্যন্ত বিতর্ক চলে।
এখন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর বক্তব্যে ব্যক্তিগত রেষারেষির বিষয়টিই সামনে এসেছে বলে মনে করেন আইনজীবী শাহদ্বীন মালিক। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত রেষারেষির বিষয়টা এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক এবং অস্বাভাবিক। অবসরে যাওয়ার শেষদিনে নাকি পরে রায় দেবেন, সেটা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা সকলে আলোচনা করে ঠিক করতে পারেন। এটা কারও একক এখতিয়ার নয়। এতে তো জটিলতার কিছু নেই।’
সিনিয়র আইনজীবীদের অনেকে বলেছেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর লেখা রায় এবং আদেশ প্রথমে সুপ্রিম কোর্ট গ্রহণ করতে চাননি। এখন গ্রহণ করায় এ পর্যায়ে বিতর্কের অবসান হতে পারে। সিনিয়র আইনজীবী ড. কামাল হোসেন মনে করেন, রায় লেখার সময় নিয়ে বিতর্ক এড়াতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা এখনই একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন : বিচার বিভাগে অভাবনীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ