Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

প্রধানমন্ত্রীর চিঠি শীর্ষেন্দুর হাতে

প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা : খর¯্রােতা পায়রা নদীতে সেতু নির্মাণের আশ্বাস সম্বলিত প্রধানমন্ত্রীর চিঠি হাতে পেয়েছে পটুয়াখালীর স্কুলছাত্র শীর্ষেন্দু বিশ্বাস।
সোমবার বিদ্যালয়ের ছাত্র মিলনায়তনে কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসক এ কে এম শামীমুল হক সিদ্দিকী শীর্ষেন্দুর হাতে প্রধানমন্ত্রীর চিঠিটি তুলে দেন। পায়রা নদীতে সেতু নির্মাণের অনুরোধ জানিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখে পটুয়াখালীর সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শীর্ষেন্দু। প্রধানমন্ত্রী সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে ফিরতি চিঠি দেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক এ কে এম শামীমুল হক ছিদ্দিকী, জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খান মোশারফ হোসেন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তারিকুজ্জামান মনি, মির্জাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খান মোহাম্মদ আবু বক্কর ছিদ্দিক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদ প্রশাসক খান মোশারেফ হোসেন শীর্ষেন্দুকে পঞ্চাশ হাজার টাকা এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. সুলতান আহমেদ মৃধা ১০ হাজার টাকা দেয়ার ঘোষণা দেন। তাছাড়া শীর্ষেন্দুর মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ালেখার দায়িত্ব নেন জেলা প্রশাসক। প্রধানমন্ত্রীর চিঠিটি গত ২০ সেপ্টেম্বর স্কুলের ঠিকানায় আসে বলে জানান প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর।
শীর্ষেন্দু চিঠিতে লিখে, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সালাম ও শুভেচ্ছা নিবেন। আমি দেশের একজন সাধারণ নাগরিক। নাম শীর্ষেন্দু বিশ্বাস, পিতা বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, মাতা শীলা রাণী সন্নামত। আমি পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির একজন নিয়মিত ছাত্র। আমার দাদু অবিনাস সন্নামত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
“আমি আপনার পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদৎবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম। আমি আপনার পিতার শৈশবকাল রচনা লিখে তৃতীয় স্থান অধিকার করি।
“আমার গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি। আমাদের মির্জাগঞ্জে নদী পাড়ি দিয়ে যেতে হয়। এটি পটুয়াখালী জেলার একটি উপজেলা। এ নদীতে প্রচ- ঢেউ। মানুষ ভয় পায়। কখনও নৌকা ডুবে যায়, কখনও ট্রলার ডুবে যায়। এতে আমার থেকে ছোট ভাই-বোন তাদের মা-বাবাকে হারায়। আমি আমার মা-বাবাকে প্রচ- ভালোবাসি। তাদের হারাতে চাই না।
“তাই আপনার কাছে একটাই অনুরোধ যে আপনি মির্জাগঞ্জ নদীতে ব্রিজের ব্যবস্থা করুন। তা যদি আপনি পারেন তাহলে আমাদের জন্য একটু কষ্ট করে এই ব্রিজ তৈরির ব্যবস্থা করুন।” চিঠিতে ১৫ আগস্ট তারিখ দিয়ে প্রেরকের ঠিকানায় লেখা হয় পুরান বাজার, পটুয়াখালী।
জবাবে প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরে পাঠানো চিঠিতে তারিখ রয়েছে ৮ সেপ্টেম্বর। এতে লেখা হয়, “স্নেহের শীর্ষেন্দু, তুমি শুধু দেশের একজন সাধারণ নাগরিক নও, দেশের ভাবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেয়ার অগ্রজ সৈনিক। আমি জানি পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার পায়রা নদীটি অত্যন্ত খরস্রোতা।
“নিজের পিতা-মাতাসহ অন্যান্য পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এই নদীকেন্দ্রিক তোমার নিরাপত্তা সচেতনতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি বুঝতে পারি তোমার বীর মুক্তিযোদ্ধা দাদুর প্রভাব রয়েছে তোমার ওপর। মির্জাগঞ্জের পায়রা নদীতে এশটি সেতু নির্মাণ করা হবে বলে তোমাকে আশ্বস্ত করছি।” শেষের দুই লাইনে শীর্ষেন্দুসহ পরিবারের সবার মঙ্গল কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ছেলের চিঠির জবাব দেয়ায় উচ্ছ্বসিত শীলা সাংবাদিকদের বলেন, “আমার এখনও বিশ্বাস হয় না যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার ছেলের চিঠি পড়েছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে হাজার হাজার প্রণাম জানাই। আমি খুবই গর্বিত।” তিনি বলেন, “স্কুলের একটি অনুষ্ঠানে গত ১৩ অগাস্ট শীর্ষেন্দুকে নিয়ে পায়রা ও বিষখালী নদী পার হই। আবহাওয়া খারাপ থাকায় পায়রা নদীতে তীব্র স্রোত ও ঢেউ থাকায় শীর্ষেন্দু খুব ভয় পায়। “ওই ভয় থেকে ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে ওই চিঠি লিখে।”
শীর্ষেন্দুর দাদু মুক্তিযোদ্ধা অবিনাস সন্নামত বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আমার নাতির লেখা চিঠির উত্তরে ব্রিজের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাতে আমরা অনেক আনন্দিত, প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।”



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রীর চিঠি শীর্ষেন্দুর হাতে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ