পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্ত্রীর হত্যার দায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি স্বপন কুমার বিশ্বাসের শাস্তি কমিয়েছেন আপিল বিভাগ। মৃত্যুদন্ডের পরিবর্তে দেয়া হয়েছে যাবজ্জীবন সাজা। তারপক্ষে বিনা ফি’তে আইনি লড়াই করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। কারাবন্দী স্বপন কুমার ১৪ বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন। দু:সহ কারাজীবনের কষ্টের কথা উল্লেখ করে দরিদ্র স্বপন আবেগঘন চিঠি লেখেন খন্দকার মাহবুব বরাবর। চিঠিতে সাড়া দিয়ে তার পক্ষে আইনি লড়াইয়ের জন্য আপিল বিভাগে দাঁড়ান খন্দকার মাহবুব। গতকাল সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগীয় বেঞ্চ স্বপনের মৃত্যুদন্ডাদেশ কমিয়ে যাবজ্জীবন করে করে দেন।
কনডেম সেল থেকে পাঠানো চিঠিতে স্বপন কুমার বিশ্বাস লেখেন, ‘কীভাবে বেঁচে আছি তা লিখে বোঝাতে পারব না। এটাকে ঠিক বেঁচে থাকা বা জীবন বলে না। এই জীবন আর সত্যিই আমার সহ্য হচ্ছে না। আপনি মহানুভব, তাই দয়া করে আমাকে আপনার নিজ সন্তান মনে করে আমার জীবনটাকে বাঁচান। আমি বাঁচতে চাই। আপনার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করি। ভালো থাকবেন।’ এই চিঠি পাওয়ার পর সিনিয়র এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন স্বপন কুমার বিশ্বাসের পক্ষে বিনা ফিতে মামলা পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন।
গত ৮ জুলাই স্বপনের পক্ষে শুনানিতে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, স্ত্রী স্বপ্না ঘোষকে পূর্বপরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়নি। পারিবারিক ঝগড়ার এক পর্যায়ে উত্তেজিত অবস্থায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে আসামি স্বপন কুমার বিশ্বাসকে মৃত্যুদন্ড ও যাবজ্জীবন দন্ড কোনোটাই দেয়া সমীচীন হবে না। এ মামলায় প্যানেল কোডের ৩০৪/২ ধারা অনুযায়ী আসামির সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছরের বেশি হতে পারে না। শুনানিতে খন্দকার মাহবুব হোসেনকে সহযোগিতা করেন এডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ স্বপন কুমার বিশ্বাসের মৃত্যুদন্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দেন।
সেই সঙ্গে স্বপন কুমারকে কনডেম সেল থেকে সাধারণ সেলে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। বিনা ফিতে আসামির পক্ষে মামলা পরিচালনা করায় খন্দকার মাহবুব হোসেনকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান আপিল বিভাগ। পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিনা ফিতে তিনি মামলা পরিচালনা করেছেন উল্লেখ থাকবে বলে আপিল বিভাগ জানান।
প্রসঙ্গত : ২০০৬ সালের ১৬ অক্টোবর নীলফামারীর সৈয়দপুর থানার নয়াটোল গ্রামে প্রথম স্ত্রী স্বপ্না ঘোষকে (৩৫) হত্যা করেন তার স্বামী স্বপন কুমার বিশ্বাস। স্বপ্নাকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করার ঘটনায় ঝগড়ার এক পর্যায়ে স্ত্রীকে মাথায় আঘাত করে খুন করা হয়। পরে তার গলায় দড়ি বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়। একই বছরের ২৮ অক্টোবর সৈয়দপুর থানার পুলিশের এসআই শফিউল হক স্বপন কুমার বিশ্বাসের নামে মামলা করেন। ওইদিনই তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৩ জনের সাক্ষীর ভিত্তিতে ২০০৮ সালের ১৮ নভেম্বর নীলফামারীর দায়রা জজ আদালত তাকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেন।
২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল বিচারপতি সাহিদুল ইসলাম এবং বিচারপতি আব্দুর রবের ডিভিশন বেঞ্চ মৃত্যুদন্ড বহাল রাখেন। এর বিরুদ্ধে আসামি স্বপন কুমার বিশ্বাস জেল আপিল করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।