পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে পোশাক শিল্পের রফতানি পণ্য চুরি প্রতিরোধ বিষয়ে সোমবার (১২ জুলাই) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের সদস্যরা এবং বাংলাদশ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির প্রতিনিধিবদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিজিএমইএ এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ’র বর্তমান সভাপতি ফারুক হাসান ও সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, বিজিএমইএ এর সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম মান্নান (কচি), সহ-সভাপতি মো. শহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন, পরিচালক মো. খসরু চৌধুরী ও পরিচালক হারুন উর রশিদ। আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (জননিরাপত্তা বিভাগের) সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন; ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার), মহা-পুলিশ পরিদর্শক, বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগ; মো. শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত মহা-পরিদর্শক, শিল্প পুলিশ; মল্লিক ফখরুল ইসলাম, অতিরিক্ত মহা-পরিদর্শক, হাইওয়ে পুলিশ; একেএম হাফিজ আখতার, অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি), ঢাকা মহানগর পুলিশ এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সভায় বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে দীর্ঘদিন ধরে পোশাক খাতের রফতানি ও আমদানির মালামাল চুরির ঘটনা ঘটে আসছে। তিনি বলেন, এটা মাঝখানে বন্ধ ছিলো। এখন আবার ঘন ঘন ঘটছে। এ মহাসড়কে একটি সংঘবদ্ধ শ্রেনীচক্র কাভার্ড ভ্যানের চালকদের সাথে যোগসাজশ করে রাতের বেলায় কাভার্ডভ্যান দাঁড় করিয়ে মালামাল চুরি করছে। অনেক সময় কার্টুনের ওজন ঠিক রাখার জন্য তারা কার্টুনে ঝুট, মাটি ইত্যাদিও ভরে দিচ্ছে। পরবর্তীতে যখন উক্ত রফতানি পণ্য আমেরিকা ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছাচ্ছে, তখন কাটুন খুলে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পোশাক পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ আসছে। এতে করে একদিকে সংশ্লিষ্ট রফতানিকারকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন, অন্যদিকে দেশের সুনামও নষ্ট হচ্ছে, যা মোটেও কাম্য নয়।
বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দ ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে এই চুরি বন্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তারা বলেন, পোশাক শিল্প স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশেষ করে সকল আইন আইনকারী সংস্থার সহযোগিতা অতীতেও পেয়েছে, এখনও পাচ্ছে। এজন্য শিল্প কৃতজ্ঞ।
ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার), মহা-পুলিশ পরিদর্শক তার বক্তব্যে চুরি প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাবনা দিয়ে বলেন, এ কমিটি চুরি বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেশনাল প্রসিডিউর) নির্ধারন করার কাজ করতে পারে।
মল্লিক ফখরুল ইসলাম, অতিরিক্ত মহা-পরিদর্শক, হাইওয়ে পুলিশ বলেন যে চুরি প্রতিরোধে রফতানি পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানে বিশেষ ষ্টীকার দেয়া যেতে পারে। বিজিএমইএ সভাপতি এই প্রস্তাবনার সাথে একমত পোষণ করে বলেন যে, এ ব্যাপারে বিজিএমইএ এর সদস্যদেরকে অবহিত করার জন্য তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। সভায় মহসড়কে রফতানি পণ্য চুরি বন্ধে সকল ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে ট্রাকিং ডিভাইস, জিপিএস স্থাপন নিয়েও আলোচনা হয়।
মন্ত্রী বলেন, পোশাক শিল্প দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি। এ শিল্পে সুষ্ঠু আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখাসহ সকল সহযোগিতা প্রদানে তার মন্ত্রণালয় সদা তৎপর রয়েছে। তিনি বলেন, মহাসড়কে যেভাবেই হোক, রফতানি পণ্যের চুরি সম্পূর্নরূপে বন্ধ করতেই হবে। এ ব্যাপারে বর্তমান সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স বলে তিনি জানান। তিনি চুরি বন্ধের জন্য উপস্থিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহকে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি আরও বলেন যে, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহসড়ককে সিসিটিভি’র নজরদারিতে আনার জন্য এ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে সিসিটিভির ক্যামেরা স্থাপনের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে, যা আগামী চার মাসের মধ্যে সমাপ্ত হবে বলে তিনি সভাকে আশস্ব করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে চুরি বন্ধের জন্য অতিরিক্ত মহা-পরিদর্শক, হাইওয়ে পুলিশকে প্রধান করে বিজিএমইএ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ এবং বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির প্রতিনিধি সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে দেন। তিনি বলেন, এ কমিটির মূল কাজ হবে চুরি বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেশনাল প্রসিডিউর) নির্ধারন করে দেয়া।
মন্ত্রী আরও নির্দেশনা প্রদান করেন, চুরি বন্ধের জন্য হাইওয়ে পুলিশ এখন থেকে শুধুমাত্র হাইওয়ে নয়, সংযুক্ত ফিডার রোডগুলোতেও টহলদারি ও তদারকি আরও জোরদার করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।