পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম নগরীর একটি পুরনো ভবন ভেঙে তলায় খনন করতে গিয়ে পাওয়া গেছে ৩০০ বছরের পুরনো মটকা। মাটির তৈরি এই মটকার ওপরই তিনশ’ বছর দাঁড়িয়ে ছিল ইট, চুন ও সুরকি দিয়ে তৈরি দ্বিতল ভবনটি। নগরীর পাথরঘাটা নজু মিয়া লেনে হাজার বর্গফুটের ওই ভবন খুঁড়ে মাটির নিচে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত পাওয়া গেছে ২৪টি মটকা। এসব মটকার ওপর ২২ ইঞ্চি ইট সুরকির আস্তরণ ছিল। ভবনের দেয়ালও ২২ ইঞ্চি পুরো। ভিটির তলায় এসব মটকা খালি এবং উপুড় করা ছিল।
এদিকে তিনশ’ বছরেরও বেশি সময় আগেকার মাটির মটকাগুলো প্রত্নসম্পদ হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে এসব মটকা যাদুঘরে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের বনেদি ব্যবসায়ী শরিয়ত উল্লাহ তিনশ’ বছর আগে মিয়ানমারের রেঙ্গুন (ইয়াঙ্গুন) থেকে সার বোঝাই জাহাজে সমুদ্র পথে এই মাটির মটকা এনেছিলেন। সেগুলো মাটিতে পুঁতে রেখে তার ওপর ইট, চুন ও সুরকি দিয়ে ভবনটি তৈরি করেন। সংস্কারের জন্য ভবনটি ভাঙা হলে মাটি খুঁড়ে ২৪টি মটকা পাওয়া যায়। ভবনের নিচে মাটির ভেতর থেকে একের পর এক আস্ত মটকা বের হয়ে আসার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এসব মটকা দেখতে সেখানে মানুষের ভিড় জমে। সেখানে ছুটে যান প্রকৌশলী ও প্রত্নগবেষকরাও।
ইউএসটিসির ভিসি চুয়েটের সাবেক ভিসি ও চট্টগ্রাম ওয়াসার চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম ভবনটি পরিদর্শন করে বলেছেন, ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাস থেকে ভবন নিরাপদ রাখতে এই মাটির মটকা ব্যবহার করা হতো। তবে তিনশ’ বছর ধরে হাজার টন ওজনের ভবন কিভাবে মাটির মটকা ধারণ করেছে, তা পরীক্ষা ও গবেষণা করে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান আলীউর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেছেন, পুরনো মটকাগুলো এখন প্রত্নসম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে। ২০১৫ সালের প্রত্ন আইনে স্থাবর সম্পত্তি ১০০ বছর ও অস্থাবর সম্পত্তি ৭৫ বছরের পুরোনো হলে তা প্রত্নসম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এগুলো আগ্রাবাদ জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষণ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয়রা জানান, ব্যবসায়ী হাজী শরিয়ত উল্লাহ তিনশত বছর আগে ঘরের ভিটির তলায় স্থাপন করে ইট সুরকির সুরম্য ভবন নির্মাণ করেন। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় তার উত্তরসূরীরা ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করেন। ইতোমধ্যে ভবনটির ওপরের অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। ভিটি ভাঙতে গিয়েই একের পর এক মাটির মটকা বের হয়ে আসে। ভিটির নিচে অন্তত দুইশ’ মটকা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মাটির নিচে মটকা পাওয়ার ঘটনায় শুরুতে অনেকে সেখানে গুপ্তধন আছে বলে মনে করেন। তবে খালি মটকা বের করে আনায় এখানে কোনো ধরনের গুপ্তধন থাকার সম্ভাবনা নাকচ করে দেয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।