পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মাদ্রাসায় পড়ুয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ বিজ্ঞানী সাদিয়া খানম ‘ভল্টিক’ নামে করোনা প্রতিরোধী স্প্রে উদ্ভাবন করে বিশ্বব্যাপি চমক সৃষ্টি করেছেন। করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে করোনারোধী স্প্রেকে যুগান্তকারী উদ্ভাবন হিসেবে মনে করা হচ্ছে। সাদিয়া ব্ল্যাকবার্ন মাদ্রাসা থেকে সফলভাবে জিসিএসই এবং আলিমা কোর্স পাস করেন। পরবর্তীতে ম্যানচেস্টারের হলি ক্রস সিক্সথ ফর্ম কলেজে পড়াশোনা শেষ করে চেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেনেটিক্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। আলঝাইমা ও নিউরোডিজেনার ওপর পিএইচডি শুরু করেছিলেন সাদিয়া খানম।
২৬ বছর বয়সী সাদিয়া খানম ১৪ মাস ধরে গবেষণার পর ‘ভলটিক’ নামের এই জীবাণুনাশক তৈরি করেছেন, যা যেকোনো বস্তুর সারফেসে স্প্রে করা হলে সেটি ২ সপ্তাহের জন্য জীবাণুমুক্ত থাকবে। কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলায় এই উদ্ভাবনকে বড় ধরনের আবিষ্কার হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে এবং ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা এনএইচএসসহ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নিরীক্ষার পর এটিকে অনুমোদন দিয়েছে। ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর সাদিয়া খানম তার পিএইচডি গবেষণা স্থগিত রেখে উত্তর পশ্চিম ইংল্যান্ডের চেশায়ারে তার পিতার রেস্তোরাঁয় এই ভাইরাসটি নিয়ে প্রাথমিক গবেষণা শুরু করেন।
গবেষণায় এই ভাইরাসটিকে ধ্বংস করার জন্য তিনি নানা রকমের সমীকরণের সন্ধান করতে থাকেন। এবং এক পর্যায়ে এরকম একটি কার্যকরী ইকুয়েশন উদ্ভাবন করতে সক্ষম হন। তিনি এর নাম দিয়েছেন ‘ভলটিক’, যা সংক্রামক রোগজীবাণু নাশের একটি প্রক্রিয়া এবং এটি উচ্চমানের সুরক্ষা দিয়ে থাকে। বিশেষ একটি মেশিন দিয়ে এই তরল স্প্রে করতে হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটির নামই ভলটিক। সাদিয়া খানম বলেন, ‘এই জীবাণুনাশ প্রক্রিয়ার একটি অংশ হচ্ছে- কোনো জীবাণু যদি কোনো কিছুর সংস্পর্শে আসে তখন তাকে ধ্বংস করে ফেলা। অর্থাৎ কোনো কিছুর পৃষ্ঠ বা সারফেসের ওপর যদি কোনো ভাইরাস থাকে, এর সাহায্যে তাকে সাথে সাথেই মেরে ফেলা যায়। এটি চামড়া থেকে শুরু করে কাঠ, লোহা থেকে কাপড়- সব ধরনের সারফেসের ওপর কাজ করে বলে গবেষণায় আমি দেখতে পেয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় কোনো কিছুর সারফেসের ওপর একটি কোভ্যালেন্ট বন্ড তৈরি হয় যা সেখানে ১৪ দিনের জন্য একটি শক্ত প্রাচীর তৈরি করে। এই বন্ড খুবই শক্তিশালী, কোনো কিছুই এটিকে ভাঙতে পারে না। এভাবে এটি টানা ২ সপ্তাহের জন্য যেকোনো জীবাণু থেকে সুরক্ষা দিয়ে থাকে। এসব জীবাণুর মধ্যে রয়েছে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক, করোনাভাইরাস, ইবোলা ভাইরাস, এইচ আই ভি -বি ইত্যাদি।’
ইতোমধ্যেই বিশ্বের ১৩টি দেশ থেকে ভল্টিক নামে এ জীবাণুনাশকটির ১ কোটি অর্ডার পেয়েছেন মাদ্রাসায় পড়ুয়া এই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ বিজ্ঞানী। গবেষণায় দেখা গিয়েছে এই স্প্রেটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ, বিমান, পরমাণু কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থানে প্রয়োগ করা যায়। বিভিন্ন স্থাপনায় ভল্টিক স্প্রে করলে করোনাভাইরাসের জীবাণু শতভাগ নির্মূল হয়। এটি ব্যবহারের ফলে হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত সংরক্ষণ করা সম্ভব বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের হাসপাতালগুলো। নতুন এ উদ্ভাবন প্রসঙ্গে সাদিয়া বলেন, ছোটোবেলা থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি ঝোঁক ছিল তার। তার দাদা আলজেইমারে মারা গেলে রোগ প্রতিরোধ করার ব্যাপারে তার আগ্রহ চরমে পৌঁছায়। এরপরই প্রতিরোধক তৈরির কাজে নেমে পরেন তিনি। শেষ পর্যন্ত কয়েক মাসের গবেষণা শেষে তিনি ভল্টিক উদ্ভাবনে সক্ষম হন তিনি। সাদিয়ার বাবা কবির আহমেদ একজন হোটেল ব্যবসায়ী। ১৯৬৪ সালে সাদিয়ার দাদা আজমত আলি সিলেটের বিশ্বনাথ থেকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। তখন থেকে সেখানে তারা বসবাস করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।