Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ডেঙ্গুর অশনি সঙ্কেত

করোনার মধ্যেই এডিসে আক্রান্ত রোগী বাড়ছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০২১, ১২:০৪ এএম

এডিস মশা নিধনে নাগরিক সচেতনতায় নেই কোনো প্রচারণা : একদিনে হাসপাতালে ভর্তি ৩৬ ডেঙ্গু রোগী 


বিশেষজ্ঞদের অভিমত : প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেকট্রোনিকস মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ডেঙ্গু রোগ নিয়ে জনসচেতনা সৃষ্টির পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এডিস মশা নিধনে দুই সিটি কর্পোরেশনকে প্রচারণা চালাতে হবে

করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকালও দেখা গেছে নমুনা পরীক্ষার সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৬৫১ শনাক্তের রেকর্ড। শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৬২ শতাংশ। রাজধানী ঢাকা ছাড়াও গ্রামে-গঞ্জে সবখানে করোনা টিকা, টিকিৎসা, নমুনা পরীক্ষা, সামাজিক দূরত্ব রক্ষা ইত্যাদি নিয়ে প্রশাসনযন্ত্র, হাসপাতালের ডাক্তার-নার্স, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সবাই ব্যতিব্যস্ত। কিন্তু এই করোনার মধ্যেই আরেক ভয়ঙ্কর ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। এটা যেন করোনার মধ্যেই ডেঙ্গুর অশনি সঙ্কেত। রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে হঠাৎ বেড়ে গেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। বর্ষাকালে বৃষ্টির কারণে যত্রতত্র এডিস মশা জন্ম নেয়। ওই মশার ছোবলে ডেঙ্গু বেড়ে যায়। করোনা নিয়ে সবাই ব্যস্ত থাকায় ডেঙ্গুজ্বরের কথা যেন মানুষ ভুলেই গেছে। অথচ স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাব মতে, গতকালও রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ৩৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত ৬০১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। করোনাভাইরাস ঠেকানোর আয়োজনে সবাই ব্যস্ত থাকলে পর্দার আড়ালে ডেঙ্গুজ্বর বেড়ে গেলে দেশে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই প্রয়োজন এডিস মশা ও ডেঙ্গু রোগের বিষয়ে রাজধানী ঢাকার মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা। কারণ করোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ডেঙ্গুর ভয়াবহতার কথা ভুলেই গেছে মানুষ। এ জন্য প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্র্রোনিকস মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা শুরু করতে হবে।


স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুসারে, গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মোট ৩৬ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জনই রাজধানীর। এ ছাড়া মোট ১৩১ জন রোগী সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে ১২৮ জনই (৯৭ শতাংশ) ঢাকায়। অথচ স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার উপব্যবস্থাপক (ডেঙ্গু) ডা. আফসানা আলমগীর খান জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাতে এখন ডেঙ্গু পরীক্ষার মাত্র ৫০ হাজার কিট রয়েছে। তবে সিএমএসডির কাছে আরো এক লাখ কিট চাওয়া হয়েছে। সেটা জুলাইয়ের শেষ নাগাদ পাওয়া যেতে পারে বলে জানানো হয়েছে। তবে হাসপাতালগুলো নিজেরাও প্রয়োজন অনুযায়ী কিট কিনতে পারে।


জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আরো বাড়লে এই করোনা পরিস্থিতিতে তা মোকাবিলা করতে সীমিত সংখ্যক চিকিৎসকদের অনেক ঝামেলায় পড়তে হবে। করোনাভাইরাসের কারণে সংক্রামক নয় এরকম রোগের চিকিৎসা ইতোমধ্যে বিঘিœত হয়েছে। যদি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায় এবং একই সংখ্যক চিকিৎসক দিয়েই তাদের চিকিৎসা করতে হয়, সেক্ষেত্রে ব্যাপারটি বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাবে।


জানা যায়, ২০১৯ সালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য হাসপাতালে আলাদা ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সে ওয়ার্ডগুলো করোনা রোগীদের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে জেলা হাসপাতালগুলোকে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যে দেখা যায়, ২০১৯ সালের মে মাসে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল মাত্র ১৯৩ জন। পরের মাসেই রোগীর সংখ্যা বেড়ে গিয়ে এক হাজার ৮৮৪ জনে দাঁড়িয়েছিল। এরপর জুলাইতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৬ হাজার ২৫৩ হয়েছিল। সে বছর মোট এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল। ২০২০ সালেও হাসাপাতালে কয়েকশ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।


জানতে চাইলে কীটতত্ত¡বিদ ও বাংলাদেশ প্রাণীবিজ্ঞান সমিতির সাবেক সভাপতি মনজুর চৌধুরী বলেন, করোনার মধ্যেই ডেঙ্গুজ্বরের ভয়াবহতা নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা পরিষ্কার পানিতে বংশ বিস্তার করে। সপ্তাহে অন্তত একবার জমে থাকা পানির পাত্র খালি করতে হবে। এ জন্য সিটি কর্পোরেশনের ব্যাপক প্রচারণা চালানো উচিত।


রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এডিস মশার উৎপাত বেড়ে গেছে। গত জুন মাসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের করা এক গবেষণায় জানানো হয়েছে, রাজধানীর দুই সিটি (ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দিক্ষণ) করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডেই পাওয়া যাচ্ছে এডিস মশা। বর্ষার পানি বিভিন্ন জায়গায় জমে যাওয়ায় কোথাও কোথাও এডিসের ঘনত্ব বেড়ে দ্বিগুণ, তিন গুণ হয়েছে। গবেষণার এই তথ্য এবং ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা পর্যালোচনা করে গবেষকরা আশঙ্কা করছেন, চলতি জুলাই ও আগামী আগস্ট মাসে রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। তাদের পরামর্শ এখনই এসিড মশা নিয়ন্ত্রণ করতে নানামুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। এডিস মশা যাতে না জন্মাতে পরে সে উদ্যোগ নিতে হবে। এ মশা যেসব স্থানে জন্মে সেগুলো ধ্বংস করার জন্য নাগরিকদের সচেতন করতে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন, বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রচারণা চালাতে হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানো নিয়ে ব্যস্ত থেকে ডেঙ্গুকে উপেক্ষা করলে সমূহ বিপদ দেখা দিতে পারে। এডিস মশা নিয়ে গবেষণায় জড়িত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত¡বিদ কবিরুল বাশার বলেন, ডেঙ্গু রোগী বাড়ার সুস্পষ্ট লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যেহেতু করোনা মহামারিও খারাপ দিকে মোড় নিয়েছে, সেক্ষেত্রে বলা যায় সামনে একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ডিএনসিসির ৪১টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ইতোমধ্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট পৌঁছে দেয়া হয়েছে। বিনামূল্যে নগরবাসী ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে পারবে। ডেঙ্গু মশা অভিজাত এলাকার মশা, এরা নোংরা পানিতে জন্মায় না। তাই ফুলের টব, টায়ারের পানি পরিষ্কার করতে হবে। ‘তিন দিনে একদিন টবের পানি ফেলে দিন’ এই স্লোগানে সবাইকে সচেতন করছি।


স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, সিএমএসডি থেকে ডেঙ্গু কিট দ্রæত সময়ের মধ্যেই পাবো। আমরা আগেও সব হাসপাতালে ডেঙ্গু টেস্টের জন্য বলেছি। কিন্তু অনেকেই সেটা করে না। ফলে আবারও সব হাসপাতালে চিঠি দিয়েছি। এ ছাড়া রোগীদের জ্বরের উপসর্গ থাকলেই শুধু কভিড নয়, ডেঙ্গু টেস্টও করা উচিত।


এদিকে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্ষা শুরু হওয়ার পর মশার উৎপাত বেড়ে গেছে। সন্ধ্যা হলেই মশার উৎপাত বেড়ে যায়। কিন্তু সিটি করপোরেশনের কোনো কর্মকান্ড নেই।


ডেঙ্গু জীবাণুবাহী এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, ১০ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু নিধন অভিযান চালানো হবে। অতীতে আমরা যেসব স্থাপনা ও বাসায় ডেঙ্গু পেয়েছিলাম সেসব স্থানে আমরা আবার তদারকি করতে যাব। সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, হাসপাতালে যেসব ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছে তাদের ঠিকানা নিয়ে সেসব জায়গায় কীটনাশক ছিটানো হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসেরের কাছে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ডিএসসিসির পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনিও কিছু বলতে পারেননি।



 

Show all comments
  • Dip Kumar Debdas ৯ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৭ এএম says : 0
    ভাই যে মশার উৎপাত কয়দিন পর প্লেনে চড়ার অভিজ্ঞতা হয়ে যাবে।কারন ঘুম থেকে উঠে দেখবো মশার ঢানায় চড়ে আকাশে উড়চ্ছি।
    Total Reply(0) Reply
  • Nurjahan Amin Ritu ৯ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৭ এএম says : 0
    পৃথিবীটা যেন দিনে দিনে রোগাক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Maruful Islam Mahin ৯ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৭ এএম says : 0
    সরকার এত চাপ কিভাবে নিবে একদিকে করোনা ভাইরাস অন্যদিকে ডেংগু
    Total Reply(0) Reply
  • Lipto Leo Chisim ৯ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৭ এএম says : 0
    ডেঙ্গুর কি জ্বালা আমি বুঝিরে ভাই।সবাই সচেতন থাকুন।
    Total Reply(0) Reply
  • Rashid Khan ৯ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৯ এএম says : 0
    ঢাকা সিটির মেয়র তাপস কই? জরের রোগী ডাক্তার ধরেনা করোনার ভয়ে।এবার জনগণের কপালে আসলে কষ্ট আছে ডেঙ্গু হলে সেবা পাবে?
    Total Reply(0) Reply
  • Al Amin ৯ জুলাই, ২০২১, ১২:৫০ এএম says : 0
    করোনার অজুহাত দেখিয়ে সিটি কর্পোরেশন লকডাউনে চলে গেছে
    Total Reply(0) Reply
  • Masum Hossan ৯ জুলাই, ২০২১, ১২:৫০ এএম says : 0
    নিশ্চিত থাকেন, এই বছর ডেঙ্গুতে একজনও মারা যাবে না। সব করোনার উপর দিয়ে যাবে। বছর শেষে বিবৃতি আসবে প্রশাসনের অক্লান্ত পরিশ্রমে এ বছর আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হয়েছি।
    Total Reply(0) Reply
  • Milon Ahamed ৯ জুলাই, ২০২১, ১২:৫০ এএম says : 0
    অথচ মেয়র সাবদের কোন মাথা ব্যথাই নেই!!
    Total Reply(0) Reply
  • MD Masud ৯ জুলাই, ২০২১, ১২:৫১ এএম says : 0
    এখন এমন একটা অবস্থা হয়েছে যে কেউ যদি তার ডেঙ্গু জ্বর আছে কি না তা জানার জন্য তার রক্ত পরীক্ষা দিতে বা করতে যায় তাহলে করোনা রোগী মনে করে হাসপাতাল থেকে বাহির করে দেবে মনে হয়।কেননা এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে জ্বর মানেই হল করোনা,সেটা ডেঙ্গু জ্বর হোক আর অন্য জ্বর হোক জ্বর মানেই করোনা।পরে দেখা যাবে করোনা জ্বরে না মরলেও ডেঙ্গু জ্বরে মরবে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডেঙ্গু

২৭ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ