পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মুসলিমদের ‘ভোটের মার্কেট’ মনে না করার আহ্বান বিজেপির সম্মেলনে
ইনকিলাব ডেস্ক : লোকসভার ভোটের আগে পাকিস্তান নিয়ে লাগাতার গর্জন করেছেন মোদি। ২০১২ সালে জঙ্গি হামলার পরে মনমোহন সিং সরকারকে উপহাস করে বলেছেন, পাকিস্তানকে প্রেমপত্র নয়, তাদের ভাষাতেই কড়া জবাব দিতে হবে। ফলে পঠানকোট, উরির ঘটনার পরে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছিল, কড়া জবাবটা তাহলে কী?
তবে কোঝিকোড়ে দলীয় সম্মেলনে নরম সুরেই কথা বললেন উরি হামলার পর ‘কড়া জবাব’ দেয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা মোদি। সামরিক পদক্ষেপের বদলে তিনি বলেছেন, তার সরকার পাকিস্তানকে কূটনৈতিকভাবে একঘরে করার পথেই হাঁটবে। ঠিক যে পথে হাঁটত আগের কংগ্রেস সরকার।
উরির সেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলায় ১৮ সেনার মৃত্যুর পরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি প্রবল হয়েছে গোটা দেশে। বিজেপি এবং সংঘ পরিবারের একাংশও সেই পথে চলার পক্ষপাতী। যুদ্ধের দামামা বাজাতে শুরু করেছিলেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসে থাকা মোদি বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন, জনসভায় দাঁড়িয়ে পরমাণু ক্ষমতাধর প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে গরম গরম কথা বলা এক জিনিস আর ময়দানে নেমে তাদের মোকাবিলা করা আরেক জিনিস।
উরির ঘটনার পরেই মোদি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা সেনাবাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে সামরিক কর্মকর্তারা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধ কোনো অবস্থাতেই ভালো সিদ্ধান্ত নয়। সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে আমেরিকা, ব্রিটেন বা জার্মানির মতো শক্তিধর দেশ যতই ভারতের পাশে দাঁড়াক, যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে তারাই বাধা দেবে। এমনকি সীমান্ত বা নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে জঙ্গি ঘাঁটি ভেঙে দিয়ে আসাও সম্ভব নয় বলে মোদিকে জানিয়ে দিয়েছেন সেনাকর্মকর্তারা।
দিল্লিতে সেনাকর্মকর্তাদের সঙ্গে আরও একটি বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কোঝিকোড়ে বিজেপির জাতীয় পরিষদের বৈঠক উপলক্ষে জনসভায় তিনি বলেছেন, শান্তি ও শুভবুদ্ধিই কেবল আমাদের ভবিষ্যৎকে উজ্জ্বল করতে পারে। যুদ্ধে দুর্দশা বাড়ে। মোদির এই কথা নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে। মোদিবিরোধীদের বক্তব্য, যুদ্ধ যে কোনো সমাধান নয় সেটা তো জানা কথাই। তাহলে এত দিন কেন যুদ্ধের সম্ভাবনার কথা উস্কে দিয়েছেন মোদি? হতাশা চাপা থাকছে না বিজেপির মধ্যেও। তবে সরকারিভাবে মোদির দল অবশ্য বলছে, প্রকৃত রাষ্ট্রনেতার মতোই আচরণ করেছেন মোদি।
মোদি এখন আপ্রাণ চেষ্টা করছেন কৌশলে যতটা সম্ভব নিজের অবস্থান রক্ষা করার। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, পাকিস্তানকে গোটা বিশ্বে একঘরে করে তিনি সেনাহত্যার বদলা নেবেন। অন্যদিকে আবার সে দেশের শাসনকর্তাদের এড়িয়ে সরাসরি আম-জনতার সঙ্গে যোগাযোগ তৈরির চেষ্টা করছেন তিনি। যার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের নেতারা সন্ত্রাসবাদীদের লিখে দেওয়া বক্তৃতা পড়েন, বিশ্ব তাদের কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করে না। এর পরেই পাক জনতার উদ্দেশে মোদী আহ্বান করে বলেছেন, নেতাদের প্রশ্ন করুন, ভারত গোটা বিশ্বে সফটওয়্যার রফতানি করে আর আপনাদের দেশ কেন সন্ত্রাস? কিন্তু মোদির এই কৌশল ঘিরেও প্রশ্ন উঠেছে। কংগ্রেস নেতা রেণুকা চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী তো পাকিস্তানের বিরোধী দলনেতার মতো কথা বলছেন! পাকিস্তানের জনতাকে লড়িয়ে দিতে চাইছেন পাক সরকারের বিরুদ্ধে। নিজের দায় এড়াতে এ কী কৌশল?’
মুসলমানদের ‘ভোটের মার্কেট’ মনে না করার আহ্বান
ধর্মনিরপেক্ষতার সংজ্ঞা বিকৃত করা হয়েছে মন্তব্য করে ভারতের বিজেপির সম্মেলনেই মোদি হিন্দুত্ববাদী একটি সংগঠনের মতাদর্শের সমালোচনা করে বলেছেন, মুসলিমদের ভোটের মার্কেট হিসেবে না দেখে ‘নিজের’ মনে করা উচিত।
কেরালার কোজিকোড়ে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির কাউন্সিলে দেয়া বক্তৃতায় মোদি বলেন, তার সরকারের উদ্দেশ্য সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সবার উন্নয়ন। তিনি বলেন, এটি রাজনৈতিক স্লোগান নয়, সমাজের সর্বশেষ মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করতে একটি অঙ্গীকার। তিনি আরো বলেন, মুসলিমদের তিরস্কার করবেন না। তাদের ক্ষমতায়ন করুন। তারা শুধু ভোটের বাজারের আইটেম নন; এ ছাড়া ঘৃণারও পাত্র নন। তাদেরকে নিজেদের মতো করে ভাবুন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।