পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : যে কোনো স্বাভাবিক নির্বাচনী বছরে বিভিন্ন বিষয়ের ভিত্তিতে পাশাপাশি রেখে আমরা দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর তুলনা করে থাকি। কিন্তু এটা কোনো স্বাভাবিক নির্বাচনী বছর নয়। এ ধরনের তুলনা হবে একটি প্রতিযোগিতায় ফাঁকা কসরৎ যেখানে একজন প্রার্থী, যিনি আমাদের পছন্দের, সেই হিলারি ক্লিনটনের রয়েছে সেবার রেকর্ড এবং বাস্তব চিন্তার সামর্থ এবং অন্যজন ডোনাল্ড ট্রাম্প যিনি নিজের সম্পর্কে বা তার পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু বলেননি (আমরা পরবর্তী এক সম্পাদকীয়তে ব্যাখ্যা করব যে কেন আমরা মনে করি যে আধুনিক আমেরিকার ইতিহাসে ট্রাম্প কেন একটি প্রধান দলের খারাপ প্রার্থী)। দি নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয় বোর্ড ২৪ সেপ্টেম্বর এক নিবন্ধে একথা বলে।
নিবন্ধে বলা হয়, তবে এ অনুমোদনও হবে একটি ফাঁকা কসরৎ যদি তা হয় ক্লিনটন সমর্থকদের পছন্দের নিছক সমর্থন। এর বদলে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে আপনাদের মধ্যে তাদের রাজি করানো যারা হিলারিকে ভোট দিতে দ্বিধা করছেন, কারণ আপনারা একজন ডেমোক্র্যাট, অথবা আরেকজন ক্লিনটন অথবা এমন একজন প্রার্থীকে ভোট দিতে অনিচ্ছুক যিনি প্রকাশ্যে উপস্থিত হবেন, তবে একই রকম মনে হয় এমন প্রতিষ্ঠান এবং ভেঙ্গে পড়েছে মনে হয় এমন রাজনৈতিক ব্যবস্থার কাছ থেকে পরিবর্তনের প্রস্তাব করবেন না।
এ যুক্তি দেয়ার জন্য অন্য জনকে কাবু করাই যথেষ্ট নয়। হিলারি ক্লিনটনের জন্য সবচেয়ে ভালো ঘটনা হচ্ছে যে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্প নন, হবেন না, হতে পারেন না। পরিবর্তে সবচেয়ে ভালো হচ্ছে এই দেশ যে সব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন সে ব্যাপারে এবং হিলারির সেগুলো তুলে ধরার সামর্থ্য।
পরবর্তী প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব গ্রহণ করবেন ধর্মান্ধ, উপজাতীয় আন্দোলন ও তাদের মিছিলরত নেতাদের সাথে। মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়া জুড়ে, রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপে, এমনকি ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রে যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ এবং বিশ^ায়নের চাপ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করছে, জোট ভেঙ্গে দিচ্ছে এবং সহিষ্ণুতা ও দানশীলতার আদর্শকে চ্যালেঞ্জ করছে।
২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারণা দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির আমেরিকানদের হতাশা ও ক্রোধকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে যারা বলছে যে তাদের সরকার মন্দা, প্রযুক্তিগত পরিবর্তন, বিদেশী প্রতিযোগিতা এবং যুদ্ধ তাদের পরিবারের উপর যে চাপ পুঞ্জীভূত করেছে তা হ্রাসে সামান্যই করেছে।
৪০ বছরেরও বেশী জনজীবনে হিলারি ক্লিন্টন এ বিষয়গুলো চর্চা করেছেন এবং এ সবের জবাব চিন্তা করেছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথম ও একমাত্র মহিলা হিসেবে প্রায় একটানা জনসেবায় তার বুদ্ধিমত্তা, অভিজ্ঞতা, বলিষ্ঠতা ও সাহসের প্রতি শ্রদ্ধাই তাকে আমাদের সমর্থনের কারণ।
হিলারি ক্লিনটনের কাজগুলো রূপান্তরমূলক পরিবর্তনের মুহূর্তের চেয়ে ক্রমবর্ধমান সাফল্য হিসেবেই অধিকতর সংজ্ঞায়িত হয়েছে। একজন প্রার্থী হিসেবে তিনি তার রেকর্ডের পূর্ণ পদ্ধতি প্রকাশের জন্য নীতি প্রস্তাবসমূহের জটিল সংগ্রহ থেকে পিছিয়ে আসার জন্য লড়াই করেছেন। এটা তার নির্বাচনী প্রচারণার একটি দুর্বলতা, এবং হতবুদ্ধিকরও বটে, তবে পদ্ধতি স্পষ্ট। এটা একজন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ নেতাকে প্রদর্শন করছে যে অর্থনৈতিক স্ফীতির সময় লড়াকু আমেরিকানদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করতে চায় এবং এটা নিশ্চিত করতে চায় যে একটি নিষ্ঠুর বিশে^ যুক্তরাষ্ট্র একটি মঙ্গলের শক্তি হয়ে রয়েছে।
অনুরূপভাবে হিলারির মাঝে-মধ্যে ভুল পদক্ষেপের সাথে তার বিশ^াসযোগ্যতার উপর আক্রমণ তার চরিত্র সম্পর্কে ধারণাকে বিকৃত করেছে। তিনি তার প্রজন্মের সর্বাপেক্ষা অনমনীয় রাজনীতিকদের একজন যার অনুশীলন ও সঠিক কার্যধারার প্রতি আগ্রহ এ প্রবল পক্ষপাতিত্বের যুগে বিরল। ফার্স্টলেডি হিসেবে তিনি বিস্ময়কর প্রাণবন্ততায় পেশাগত বিপর্যয় ও ব্যক্তিগত প্রলোভন থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলেন। ৮ বছর সিনেট সদস্য ও ৪ বছর পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে তিনি চরিত্রের দৃঢ়তা ও দ্বিদলীয় সহযোগিতার জন্য সুনাম অর্জন করেন। তিনি নীতির নির্দেশ ও কূটনৈতিক সূক্ষ্ম প্রভেদ প্রদর্শন করেন এবং সংসদীয় আসনের জনগণের ও সহকর্মীদের কথা শোনার মানসিকতা তার ছিল যার সবই ওয়াশিংটনে ছিল ব্যতিক্রমধর্মী।
প্রাপ্তবয়স কালে তার শিশু, নারী ও পরিবারের সেবার রেকর্ড আছে। ফার্স্ট লেডি থাকাকালে তার একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ হল ১৯৯৫ সালে বেইজং-এ বক্তৃতাকালে মহিলাদের অধিকারকে মানবাধিকার বলে ঘোষণা। দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা সংস্কারের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি শিশু স্বাস্থ্যবীমা কর্মসূচি প্রতিষ্ঠার আইন প্রণয়নে তার সমর্থন প্রদান করেন যার আওতায় এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিম্ন আয়ের ৮০ লাখেরও বেশী অল্পবয়স্ক মানুষ। এ বছর তিনি অস্ত্র ক্রেতাদের পারিপাশির্^ক অবস্থা ব্যাপকভাবে যাচাই ও অস্ত্র বিক্রির ব্যাপারে কঠোর রাশ টেনে ধরার দাবিতে বন্দুক সহিংসতায় নিহতদের মায়েদের এক সমাবেশের আয়োজন করেন।
অপরাধ, পুলিশী ব্যবস্থা ও জাতি সম্পর্ক, ঋণমুক্ত কলেজ ও ছোট ব্যবসা প্রণোদনা, জলবায়ু পরিবর্তন ও সাশ্রয়ী ব্রডব্যান্ড বিষয়ে হিলারি ও তার টিম বিশদ প্রস্তাব তৈরি করেছেন। কংগ্রেসে অনুমোদিত হওয়ার উপরে এগুলোর কার্যকারিতা নির্ভরশীল।
২০০৮ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় অনিবন্ধিত অভিবাসীদের জন্য ড্রাইভার লাইসেন্স প্রদানের বিরোধিতাকারী হিলারি এখন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ব্যাপক অভিবাসন আইনের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে ও এবং আইন মান্যকারী অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বহিষ্কার ও নিষ্ঠুর আটক থেকে রক্ষা করতে নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহারের শপথ করেছেন। কেউ কেউ তার অবস্থানের এ পরিবর্তনকে সুবিধাবাদী বলে খারিজ করে দিতে পারেন, কিন্তু আমরা সঠিক অবস্থানে ফিরে আসার জন্য তাকে কৃতিত্ব দেই। (আগামী সংখ্যায় সমাপ্য)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।