পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এনআরবিসি ব্যাংক
চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংক। ২০১৩ সালের এপ্রিলে ব্যাংকটির যাত্রা শুরু। যাত্রা শুরুর চার বছরেই নানা অনিয়মে ধুকতে থাকা এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় ২০১৭ সালের ডিসম্বরে ঢেলে সাজানো হয়। ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ফরাসত আলী পদত্যাগ করার পর ওই দায়িত্ব নেন এসএম পারভেজ তমাল। দায়িত্ব নেয়ার পর ব্যাংকটি ধীরে ধীরে ব্যাপকভাবে ঘুরে দাড়ায়। দায়িত্ব নিয়ে ব্যাংকটির হারিয়ে যাওয়া ‘ভাবমূর্তি’ ফিরিয়ে আনা এবং আমানতকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন।
আর এরপর ব্যাংকে যা হয়েছে তা এক অর্থে ইতিহাস। ৪ বছর আগেও ধুকতে থাকা চতুর্থ প্রজন্মের এই ব্যাংকটি বর্তমানে অন্যান্য ব্যাংকের কাছে যেন উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এসএম পারভেজ তমালের দক্ষ নেতৃত্বে এবং পরিচালনা পরিষদের দূরদর্শী সিদ্ধান্তে ব্যাংকটিতে শৃঙ্খলা ফিরে আসে। আর্থিক সূচকগুলোতে দ্রæত উন্নতি করতে থাকে। বর্তমানে ব্যাংকের সংগৃহীত আমানতের পরিমাণ প্রথমবারের মতো ১০ হাজার কোটি টাকার মাইলফলক অতিক্রম করেছে। চলতি বছরের ৩০ জুনভিত্তিক ষান্মাসিক হিসাবে ব্যাংকটির আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা। করোনাকালে আমানত প্রবৃদ্ধির হারও ছিল রেকর্ড পরিমাণ। এমনকি করোনার কারণে গত বছর দেশ যখন লকডাউনে, দেশের ব্যাংকগুলো তাদের সেবা সীমিত পরিসরে নিয়ে আসে তখনও সারাদেশে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে এনআরবিসি ব্যাংক সকল শাখায় ব্যাংকিং সেবা চালু রেখে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। এমনকি করোনায় যখন অন্যান্য ব্যাংকগুলো কর্মকর্তাদের বেতন-বোনাস কমিয়ে দিয়েছিল, তখনও এনআরবিসি ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন-বোনাসসহ পদোন্নতি স্বাভাবিক রেখেছিল। ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গত বছরের জুনে এনআরবিসি ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ ছিল সাত হাজার ৯৮২ কোটি টাকা। সেটা এক বছরের ব্যবধানে ৩২ দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১০ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা। ২০২০ সালের জুনে আমানত বাড়ে ২৫ দশমিক ৫২ শতাংশ। তার আগের বছর আমানত ছিল ছয় হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা, যা ২০১৮ সালের জুনের তুলনায় ২৫ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি। ২০১৮ সালের জুনে ব্যাংকটির আমানত ছিল পাঁচ হাজার ৭৯ কোটি টাকা।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এই সংকটকালেও আমরা জনগণের জন্য সেবার দরজা খোলা রেখেছি। তাদের হাতের নাগালে নতুন নতুন উপশাখাসহ বিভিন্ন সার্ভিস পয়েন্ট স্থাপন করছি। ঘোষিত লকডাউনেও গ্রাহকদের স্বার্থ বিবেচনা করে শতভাগ স্বাস্থ্য-সুরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শাখা, উপশাখা ও অন্যান্য বুথগুলো চালু রেখেছি। এসব উদ্যোগ গ্রহণ করার ফলে সংকটের বছরেও ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকদের আস্থার প্রতিফলন এটি।
তিনি বলেন, জনগণের টাকা নিয়ে আমরা জনগণের মাঝে বিতরণ করছি। আমাদের লক্ষ্য প্রান্তিক জনগণের ব্যাংকে পরিণত হওয়া। গ্রামের মানুষকে স্বল্প সুদে ঋণ দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। গ্রামীণ অর্থনীতি সচল করার মাধ্যমে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে অবদান রাখতে কাজ করছে এনআরবিসি ব্যাংক। আমানত সংগ্রহের পাশাপাশি ব্যাংকের ঋণ বিতরণ কার্যক্রম জোরদার হয়েছে। সংকটে পড়া মানুষের তাৎক্ষণিক সুবিধা দিতে বিশেষায়িত ঋণ প্রকল্প চালু করে এনআরবিসি ব্যাংক। এজন্য সংকটের সময়ও ব্যাংকের ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৩ দশমিক ৭২ শতাংশ। ২০২১ সালের জুনে ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আট হাজার ৬০৫ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময় ছিল ছয় হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা। ২০২০ সালের জুনে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয় ১৭ শতাংশ। তার আগের বছর ঋণের পরিমাণ ছিল পাঁচ হাজার ৫০১ কোটি টাকা। আর ২০১৮ সালের জুনে ব্যাংকের ঋণ ছিল চার হাজার ৪০২ কোটি টাকা।
ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) গোলাম আউলিয়া বলেন, এনআরবিসি ব্যাংকের মূল লক্ষ্য জনগণের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিয়ে সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা। এজন্য প্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন সেবা চালু করেছি। মানুষের অর্থের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করা হচ্ছে। আবার সেই অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার করে সারা দেশের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ বিভিন্ন প্রয়োজন মেটানো হচ্ছে। এজন্য আমানত সংগ্রহের পাশাপাশি আমরা ঋণদান কার্যক্রমও জোরদার করেছি।
উল্লেখ্য, শতভাগ প্রবাসী উদ্যোক্তাদের উদ্যোগে ব্যাংকটি কার্যক্রমে আসে ২০১৩ সালের এপ্রিলে। প্রান্তিক ও নিম্নআয়ের মানুষকে সেবার আওতায় আনতে ব্যাংকটি উপশাখা ও পার্টনারশিপ ব্যাংকিংয়ের ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করে সফল হয়েছে। ৮৩টি শাখার পাশাপাশি ৪৫০টি উপশাখা রয়েছে ব্যাংকটির, যা সব ব্যাংকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এছাড়াও শরিয়াভিত্তিক ইসলামিক ব্যাংকিং উইন্ডো ‘আল আমিন ব্যাংকিং’ চালুর মাধ্যমে সব শাখা ও উপশাখায় সেবা দেয়া হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।