পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
করোনা মহামারির মধ্যে দেশে ই-কমার্স খাতে এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে বলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণায় উঠে এসেছে। আগামী এক বছরের মধ্যে ডিজিটাল অর্থনীতিতে নতুন করে আরও পাঁচ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছে গবেষণা সংস্থাটি। সোমবার (৫ জুলাই) ভার্চুয়াল সভায় গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন সিপিডির সিনিয়র গবেষণা সহকারী সৈয়দ ইউসুফ সাদাত। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, পাঠাও লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হোসাইন ইলিয়াস, সেবা প্ল্যাটফর্ম লিমিটেডের সিওও ইলমুল হক সজীবসহ অন্যরা।
সংলাপে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডি’র সিনিয়র গবেষণা সহযোগী সৈয়দ ইউসুফ সাদাত। তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বের অনলাইন ভিত্তিক শ্রমবাজারের ১৬ শতাংশ এখন বাংলাদেশের দখলে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অনলাইনভিত্তিক শ্রম সরবরাহকারী দেশ। বর্তমানে বাংলাদেশে ২ হাজার ওয়েব-ভিত্তিক উদ্যোক্তা এবং প্রায় পঞ্চাশ হাজার ফেসবুক নির্ভর উদ্যোক্তা রয়েছেন। বিশেষত চলমান কোভিড অতিমারির প্রেক্ষিতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলির মাধ্যমে অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসায়ের সুযোগ বেড়েছে। আগামী এক বছরে ডিজিটাল প্ল্যাট ফর্মের মাধ্যমে প্রায় পাঁচ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইন্টারনেটের বিস্তার এবং স্মার্টফোনের জনপ্রিয়তার কারনে যদিও প্রচুর মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) বাজারে আসছে, সেই অ্যাপ গুলির বিষয়ে এখনও কোনো যথাযথ নীতিমালা তৈরি হয়নি। এছাড়া গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য অনেক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মকেই নিজেদের কৌশলগত পন্থায় পরিবর্তন আনতে হবে এবং গ্রাহক সেবার গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ইন্টারনেট সেবা সহজলভ্য হওয়ায় ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশ ঘটছে প্রতিনিয়ত। দেশে এখন ক্রিয়েটিভ ও মাল্টিমিডিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন ১৯ হাজার ৫৫২ জন। ফেসবুককেন্দ্রিক উদ্যোক্তা ৫০ হাজার, ই-ক্যাবের সদস্য আছে ১ হাজার ৩০০ জন, ওয়েবসাইটভিত্তিক উদ্যোক্তার সংখ্যা দুই হাজার। গবেষণায় বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের কথাও তুলে ধরা হয়। বলা হয়েছে, ডিজিটাল অর্থনীতিতে পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করা বেশ চ্যালেঞ্জের। এ ছাড়া সময় মতো পণ্যের ডেলিভারি করা এবং ব্যবস্থাপনাতে আরও ভালো করতে হবে।
সভায় বক্তারা বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মোকাবিলা করতে হলে দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে। প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে আরও সহজভাবে সেবা দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন জানান, বিশ্বে রেজিস্টার্ড অনলাইন কর্মী আছে প্রায় ৭ কোটি। যার ১৬ ভাগের যোগান দিচ্ছে বাংলাদেশ। ডিজিটাল শ্রমিকরা কাজ করছেন বিলিয়ন ডলারের গ্লোবাল মার্কেটে। অনুষ্ঠানে বলা হয়, ফেইসবুক-ইউটিউব কনটেন্ট, ই-কমার্স ও মোবাইল অ্যাপ ঘিরে উদ্যোক্তা তৈরি হলেও করা হয়নি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা। করজালে নেই ডিজিটাল কর্মীদের বড় অংশ। সব জায়গায় দ্রুতগতির ইন্টারনেট না থাকায় বাড়ছে ডিজিটাল বৈষম্য। যার বড় ভুক্তভোগী প্রান্তিক নারীরা। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, প্রযুক্তির সুফল পেতে সরকারকে এখনই ডিজিটাল অর্থনীতি নীতিমালা তৈরি করতে হবে।
সংলাপে বক্তব্য রেখে পাঠাও-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হুসেইন মো. ইলিয়াস উচ্চমানের প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন দক্ষ জনবল, নীতিমালার নিয়ন্ত্রণ ও সুষ্ঠু বাস্তবায়ন ইত্যাদির অভাবকে এই খাতের চ্যালেঞ্জ হিসেবে তুলে ধরেন।
সেবা এক্সওয়াইজেডের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ অপারেশনস অফিসার ইলমুল হক সজীব বলেন, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের একটা বড় অংশ রয়েছে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে, যাদের নিয়ে কাজ করার সুযোগ প্রচুর। তাই ই-কমার্স খাতে ব্যবসায় প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও ব্যবহার বান্ধব করা প্রয়োজন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন অথরিটির মধ্যে সিনক্রোনাইজেশন এবং পণ্য শোকেসিং বা উপস্থাপনার সুবিধার বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।