পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজশাহীতে বাসাবাড়ি, হাসপাতালে বাড়ছে অক্সিজেন চাহিদা। হাসপাতালের পাশাপাশি অনেকেই উপসর্গ নিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যার সংখ্যা অনেক। এদের মধ্যে অক্সিজেনের চাহিদাও কম নয়। ক্রমশ বাড়ছে অক্সিজেনের চাহিদা। এ নিয়ে ব্যবসাও কম নয়। আট দশ হাজার টাকার এক সিলিন্ডার অক্সিজেন বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। মানুষের মাঝে সিলিন্ডার পৌঁছে দেবার জন্য রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ অক্সিজেন ব্যাংক, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, রেডক্রিসেন্ট ও বেশকিছু প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছেন। তারা খবর পেলেই বাড়িতে বাড়িতে সিলিন্ডার পৌঁছে দেবার চেষ্টাও করছেন। কিন্তু চাহিদা ক্রমশ বেড়ে যাওয়ায় তারাও হিমশিম খাচ্ছেন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী মেডিকেলে আসা আক্রান্তদের ৯৯ ভাগেরই অক্সিজেন সাপোর্ট দরকার হচ্ছে। হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে প্রতিদিন এখন গড়ে ১০ জনেরও বেশি রোগী মারা যাচ্ছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাচ্ছেন। আবার অনেকেই করোনা পজেটিভ হয়েই মারা যাচ্ছেন। যারা সকলেই শ্বাসকষ্ট ও জ্বর-সর্দি বা কাশিতে আক্রান্ত হয়ে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে। করোনা শুরুর প্রথমে অক্সিজেন না লাগলেও এ বছরের মার্চ থেকে শুরু হয় অক্সিজেন চাহিদা। প্রথমে দুই হাজার লিটার অক্সিজেন লাগলেও এখন লাগছে আট হাজার লিটার।
করোনার উচ্চ সংক্রমণ প্রবণ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের শনাক্ত হয় মে মাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। তারপর দ্রুত বিস্তার ঘটে রাজশাহী বিভাগে। জুনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মৃত্যু কমে গেলেও রাজশাহীতে বাড়তে থাকে। রাজশাহী মেডিকেলে বাড়তে থাকে রোগীর চাপও। চাহিদা বাড়ে অক্সিজেনের। এ অবস্থায় করোনা আক্রান্ত রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে ক্রমাগত সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহই কর্তৃপক্ষের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অক্সিজেন সঙ্কটেই মারা যাচ্ছেন অধিকাংশ রোগী-এমনটিই দাবি করেছেন রোগীর স্বজনরা। হাসপাতালের দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করেও এই চিত্র উঠে এসেছে।
রাজশাহী হাসপাতালের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এখন প্রতিদিন এ হাসপাতালের রোগীদের জন্য আট হাজার লিটার অক্সিজেন সরবরাহ করতে। যার অধিকাংশ ব্যবহার হচ্ছে আইসিইউ এবং এইচডিইউ ওয়ার্ডের রোগীদের জন্য। কারণ এসব ওয়ার্ডের ব্যবহৃত হওয়া প্রায় ৬০টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা মেশিনের মাধ্যমে অধিকাংশ অক্সিজেন সরবারহ করতে হচ্ছে। কারণ একেকটা রোগীকে প্রতি মিনিটে ৬০-৮০ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ করতে হচ্ছে। ফলে সাধারণ শয্যায় বা মেঝেতে যেসব রোগী ভর্তি আছেন, তাদের পেছনে অর্ধেক অক্সিজেনও সরবরাহ করা যাচ্ছে না হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা মেশিন না থাকায়।
তবে সাধারণ পাইপের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবাহ করা হচ্ছে সাধারণ শয্যার রোগীদের মাঝে। ফলে যেসব রোগীদের আইসিইউ প্রয়োজন হচ্ছে, কিন্তু হাইফ্লো অক্সিজেন সরবরাহ করা যাচ্ছে না সেসব চিকিৎসাধীন রোগীরাই বেশি মৃত্যুরকোলে ঢেলে পড়ছেন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, যেসব রোগীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে তাদের প্রতি দেড় ঘণ্টার জন্য এক সিলিন্ডার অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। এই হিসাবে ২৪ ঘণ্টায় মাত্র একজন রোগীর জন্য ১৬টি অক্সিজেন সিলিন্ডার দরকার হচ্ছে। এটা বেশ ব্যয়বহুল আবার অক্সিজেন সিলিন্ডার ম্যানেজ করাও কঠিন।
রাজশাহী মেডিকেলে আসা আক্রান্তদের ৯৯ ভাগেরই অক্সিজেন সাপোর্ট দরকার হচ্ছে। প্রথমদিকে সিলিন্ডারের অক্সিজেন দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, সিলিন্ডারে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা নিয়ে।
রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক বলেন, রোজার আগে আমাদের প্রতিদিন দুই হাজার লিটার অক্সিজেন প্রয়োজন হতো। এখন সেটি বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে আট হাজার লিটার। এক মাস আগে এই চাহিদা ছিল সর্বোচ্চ ৫ হাজার লিটার। আমরা প্রতিদিন জাতীয় অক্সিজেন সরবরাহ ডিপো থেকে ১০ হাজার লিটার অক্সিজেন পাচ্ছি। এছাড়াও ১০ হাজার লিটার অক্সিজেন রিজার্ভ রাখা হয়। তবে যে হারে রোগী বাড়ছে, তাতে করে বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে আমাদের।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, আমরা আগত রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিতে সব ধরনের চেষ্টাই করে যাচ্ছি। সাধারণ ওয়ার্ড খালি করে করোনা ওয়ার্ড বাড়ানো হচ্ছে। কিন্তু রোগীর চাপ বাড়ায় শয্যা বাড়িয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে রোগীদের নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ করা কঠিন হচ্ছে। আগত রোগীদের প্রায় সবাইকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। তাই অক্সিজেন সরবরাহই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। সংক্রমণের মাত্রা না কমায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।