পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশব্যাপী কঠোর লকডাউনের কারণে রংপুরে হাঁড়িভাঙা আমের বাজারে ধস নেমেছে। লোকসানের আশঙ্কায় মাথায় হাত পড়েছে আম ব্যবসায়ীদের। ক্রেতার অভাবে বাজারে আম নিয়ে বসে প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন। বাজারে চাহিদা না থাকায় বাগান থেকেও আম পাড়ছেন না বাগান মালিকরা। লকডাউন শিথিল হওয়ার প্রতীক্ষায় বাগান পাহারা দিয়ে দিন পার করছেন তারা।
আম ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছর জুনের মাঝামাঝি সময় থেকে রংপুরের বিখ্যাত হাঁড়িভাঙা আম বাজারে আসে। শুরুতে বাজার কিছুটা কম থাকলেও জুলাইয়ের শুরু থেকে আমের বাজার বেশ চড়া যায়। এবারও শুরু হয়েছিল ভালো বাজার দিয়ে। জুনের মাঝামাঝি থেকে শুরু হলেও ২০ জুনের মধ্যে পুরোপুরি বাজারে চলে আসে হাঁড়িভাঙা আম। শুরুতে দাম ৪০-৪৫ থাকলেও ৪-৫ দিনের মধ্যে তা কেজি প্রতি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে থাকে। কিন্তু জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে এসে লকডাউনের খবরে বাজারে ক্রেতা কমে যায়। রংপুরের বাইরে অন্যান্য জেলা কিংবা রাজধানীতে আম পাঠাতে না পারায় একেবারেই ক্রেতাশূন্য হয়ে যায় বাজার। বিশেষ করে জুনের ২৭ তারিখ থেকে কুরিয়ার সার্ভিসগুলো আম নেয়া বন্ধ করে দেয়ায় আমের বাজার একেবারেই ক্রেতাশূন্য। এতে করে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বাগান মালিকসহ আম ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, গত শনিবার হাঁড়িভাঙা আমের উৎপত্তিস্থল পদাগঞ্জ এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা গেছে কমবেশি সব বাগানেই আম শোভা পাচ্ছে। বাজারদর কম থাকায় বাগান মালিক বা ব্যবাসায়ীরা বাগান থেকে আম পাড়ছেন না। বাগানে বাগানে টং বানিয়ে কিংবা তাবু টানিয়ে পাহারা দিয়ে যাচ্ছেন। বাগানগুলো ঘুরে দেখা যায়, ইতোমধ্যে অনেক গাছেই আম পাকতে শুরু করেছে। মালিকরা এসব গাছ থেকে বেছে বেছে পাকা কিংবা আধা পাকা আম পাড়ছেন। তবে দু’দিনের বৃষ্টি তাদের কাছে আর্শীবাদ হয়ে এসেছে।
বাগান মালিকরা জানিয়েছেন, বৃষ্টির কারণে আম কিছুটা হলেও দেরীতে পাকে। আর তাই এই ২-৩ দিনের বৃষ্টি তাদের কাছে আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে এসেছে। বৃষ্টির কারণে এসব আম আরও কয়েকদিন গাছে থাকবে। তাদের মতে, ৭ তারিখ পর্যন্ত লকডাউন থাকলে কোন রকমে তারা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু লকডাউন বাড়লে তাদের সর্বনাশ হবে।
কেননা, তারা বেশ আগেই আমের বাগান কিনে রেখেছেন। অনেকেই আমের গুটি আসার পর পরই কিনে নিয়ে সেগুলো পরিচর্যা করে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন। ব্যবসায়ীদের মতে, বেশি না হোক, কমপক্ষে গত বছরের মত দাম পেলেও তারা লোকসান থেকে বেঁচে যাবেন। আম বেচতে না পারলে তারা বাগান মালিকদেরও টাকা দিতে পারবেন না। কারণ অধিকাংশ বাগান মালিক এখনও পুরো টাকা পায়নি। ব্যবসায়ীরা আম বেচে দফায় দফায় তাদের টাকা দিয়ে থাকেন। এ কারনে বাগান মালিকরাও মারাত্মক দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এবার রংপুর জেলায় প্রায় ৩ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৮ ’শ ৬৫ হেক্টর জমিতে হয়েছে হাঁড়িভাঙা আম। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৩ হাজার ৮শ’ ৩৫ মেট্রিক টন। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙা আমের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৭ হাজার ৯শ’ ২৫ মেট্রিক টন।
রংপুর বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানিয়েছেন, সরকার লকডাউনে পণ্য পরিবহন বন্ধ করেনি। লকডাউনের প্রভাবে হাঁড়িভাঙা আমের দাম কিছুটা কমে যাচ্ছে। কারণ, এই আমের বৃহৎ একটি অংশ রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যেত। লকডাউনের কারণে পাইকারী ব্যবসায়ীরা সেটি আর নিয়ে যাচ্ছেন না। তাছাড়া ঢাকায় ঠিকমত সরবরাহও করতে পারছে না। যে কারণে বাজার কমে গেছে।
জেলা কৃষি বিপণন অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আনোয়ারুল হক জানিয়েছেন, করোনাকালীন সময়ে কৃষক বা ব্যবসায়ীরা যাতে আম নির্বিঘ্নে বাজারজাত করতে পারে সে ব্যপারে আমরা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আম বাসের ব্যবস্থা করছি। এছাড়াও অনলাইনে আম ক্রয় বিক্রয় করতে ’সদয় এ্যাপস’ নামে একটি এ্যাপস খুলে তার সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করেছি। যেটি ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।