পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
# বড় ধরনের বিস্ফোরণের পূর্বাভাস!
# মোদি-নওয়াজের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য
ইনকিলাব ডেস্ক
দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে চলছে পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ। জন্মলগ্ন থেকে শত্রুভাবাপন্ন দেশ দুটির মধ্যে কাশ্মীর সংকটকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনাকর অবস্থা মোটেও প্রশমিত হচ্ছে না। বরং এক ধরনের থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এমন অবস্থাকে ‘ঝড়ের পূর্বলক্ষণ’ ধরে যে কোনো সময় বিস্ফোরণোম্মুখ পরিস্থিতির আশংকা করছেন বিশ্লেষকরা। সম্প্রতি কাশ্মীরের উরি সেনাঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় ১৮ ভারতীয় সেনা নিহতের ঘটনা ঘটার পর থেকে প্রতিদিনই যেন উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে। এমন অবস্থায় দুই দেশের মধ্যে অর্ধশতাব্দী আগে করা ইন্দোস পানি চুক্তিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে পাকিস্তানকে বিপাকে ফেলার চিন্তা করছে ভারত। যদিও বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভারত আগে থেকে চুক্তি ভঙ্গ করলে প্রকৃতপক্ষে নিজেরাই আন্তর্জাতিক পরিসরে বিপাকে পড়বে।
মোদি ও নওয়াজের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য :
নরেন্দ্র মোদি একটি দেশই বিশ্বজুড়ে রক্ত ঝরাচ্ছে, পাকিস্তানকে নিয়ে এমন মন্তব্য করলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কাশ্মীর প্রশ্নে দুই দেশের মধ্যে চলমান ভয়াবহ উত্তেজনার মধ্যেই এই মন্তব্য করেন মোদি। এর কিছু সময় আগে কাশ্মীরের উরিতে সংঘটিত সেনাঘাঁটির হামলাকে কাশ্মীরে ভারত সরকারের দমননীতির ফলাফল বলে উল্লেখ করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ।
একটি দেশই বিশ্বজুড়ে রক্ত ঝরাচ্ছে : পাকিস্তান সম্পর্কে মোদি
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক জনসভায় বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেন। বিশ্বজুড়ে ওই একটা দেশই রক্ত ঝরাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। মোদি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ মানেই পাকিস্তান। পাকিস্তান সন্ত্রাস রপ্তানি করে। বিশ্বের যেখানেই সন্ত্রাস, সেখানেই নাম ওঠে পাকিস্তানের। ওসামা বিন লাদেনকেও আশ্রয় দিয়েছিল পাকিস্তান। এশিয়াতে ওরাই একমাত্র দেশ যারা সন্ত্রাসে মদত দেয়।’ কাশ্মীরের উরিতে সেনাঘাঁটির হামলার পর কোনও জনসভায় প্রথমবারের মতো ভাষণ দিতে গিয়ে মোদি এ কথা বলেছেন। ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম খবরটি নিশ্চিত করেছে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভির খবরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। ভাষণে মোদি বলেছেন, ‘দেখেন আপনারা। ভারত আর পাকিস্তান, দু’টি দেশ একই সঙ্গে স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু আজ হিন্দুস্তান সফ্টওয়্যার রফতানি করে আর পাকিস্তান রফতানি করে সন্ত্রাসী।’ মোদি পাকিস্তানের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের অংশে রয়েছে পাকিস্তানি কাশ্মীর, রয়েছে বেলুচিস্তান, ছিল পূর্ববঙ্গ। কোনও কিছুই তো সামলাতে পারেননি। আর এখন কাশ্মীরের কথা বলছেন। নিজেদের যা আছে তা আগে সামলান।’
উরি হামলা ভারতের অত্যাচারেরই ফল : নওয়াজ
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ দাবি করেছেন, ‘কাশ্মীরে ভারতের অত্যাচারের ফলাফল হলো উরির সেনাঘাঁটিতে হামলা, এর সঙ্গে পাকিস্তানের কোনও সম্পর্ক নেই।’ পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যম ডন জানিয়েছে, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন থেকে ফেরার পথে লন্ডনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেছেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী। কোনও প্রমাণ ছাড়াই উরির ঘটনায় ভারত পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে বলেও অভিযোগ করেছেন শরিফ।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত দু-মাসে কাশ্মীরে বীভৎসল অত্যাচার চালিয়েছে ভারত। যারা নিরাপত্তা রক্ষীর হামলায় মারা গিয়েছেন বা অন্ধ হয়ে গিয়েছেন, তাদের কাছের আত্মীয়স্বজনই উরির সেনাঘাঁটিতে হামলা করতে পারে।’
পানি চুক্তিকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহারের চিন্তা ভারতের
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পানিকেই অস্ত্র করার কথা বলছেন কোনো কোনো ভারতীয় রাজনীতিক। তাদের মতে পাকিস্তানের কৃষির প্রাণ সিন্ধু অববাহিকা। মূলত আন্তর্জাতিক রপ্তানিতে পাকিস্তান অনেক পিছিয়ে থাকলেও পাকিস্তানের জিডিপির মূলশক্তি যোগায় সে দেশের শক্তিশালী কৃষি খাত। আর এই কৃষির প্রাণ হলো সিন্ধু নদীসহ ঝিলাম ও চেনাব নদী সংলগ্ন অববাহিকা। এই নদীগুলোর পানির উৎস কিন্তু ভারত। তাই ভারত যদি পানি সরিয়ে নিতে থাকে তবে পানিতে মারা পড়বে পাকিস্তান। ঠিক এই বিষয়টিই সামনে রেখে সওয়াল করছেন ভারতীয় বিশ্লেষকরা।
ভারতীয় থিংকট্যাংক ইন্সটিটিউট অব ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস (আইডিএসএ) এর বিশ্লেষক উত্তম সিনহা ভারতীয় মিডিয়াকে বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ভারতের অধিকার রয়েছে। পাকিস্তান এই চুক্তির ধারাগুলো অস্বীকার করতে পারবে না। যদি ভারত এই চুক্তিকে হাতিয়ার করে পাকিস্তানের ওপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করতে পারবে।
অপর ভারতীয় নদী বিশেষজ্ঞ হিমাংশু থাক্কার বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ভারত এই নদীগুলোর ওপর পানি সংরক্ষণাগার তৈরি করতে পারবে। কিন্তু ভারত কখনই তা করেনি।
পাক-ভারত পরমাণু যুদ্ধে মারা যাবে ২০০ কোটি মানুষ!
অনেকের আশঙ্কা, পরিস্থিতির রাশ টেনে না ধরলে ভারত-পাকিস্তান উভয়েই পারমাণবিক যুদ্ধে জড়িয়ে যেতে পারে। আর সত্যিই যদি পারমাণবিক যুদ্ধ লেগে যায়, তাহলে তা ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বব্যাপী, ঘটবে ব্যাপক প্রাণহানি। তিন বছর আগে করা এক গবেষণা বলছে, ভারত-পাকিস্তান পারমাণবিক যুদ্ধ হলে তা সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে। অন্তত ২০০ কোটি মানুষ নিহত হবে। পৃথিবীজুড়ে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে এবং নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে মানবসভ্যতা। গবেষণা প্রতিবেদনটিতে এও বলা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সীমিত পর্যায়ে পারমাণবিক যুদ্ধ হলেও বিশ্বের আবহাওয়াম-লের ব্যাপক ক্ষতি ও শস্যক্ষেত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ইন্টারন্যাশনাল ফিজিশিয়ান্স ফর দ্য প্রিভেনশন অব নিউক্লিয়ার ওয়্যার এবং ফিজিশিয়ান্স ফর সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি নামে দুটি সংগঠন ২০১৩ সালে এই গবেষণামূলক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। সংগঠন দুটি ২০১২ সালের এপ্রিলে গবেষণাটির প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ভারত-পাকিস্তানের মতো দেশ পারমাণবিক যুদ্ধে জড়ালে ১শ’ কোটিরও বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে। পরে ২০১৩ সালে গবেষণার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, দু’দেশের সম্ভাব্য পরমাণু যুদ্ধে চীনের ওপরে প্রভাবের বিষয়টি বাদ রেখেই তারা ২শ’ কোটি মানুষের মৃত্যুর আশংকা করছে।
যে কোনো আগ্রাসনে পাকিস্তানের পাশে থাকবে চীন
পাকিস্তানে নিযুক্ত চীনা কনস্যুল জেনারেল ইউ বোরেন বলেছেন, পাকিস্তানে যদি কোনো ধরনের বিদেশী আগ্রাসন হয় তাহলে দেশটি রক্ষায় সর্বাত্মক সহযোগিতা নিয়ে পাশে থাকবে চীন। কাশ্মীরের উরিতে এক সন্ত্রাসী হামলায় ১৮ জন সেনা নিহতের ঘটনায় ভারত পাকিস্তানে প্রতিশোধ হামলা করতে পারে বলে আলোচনা রয়েছে। এরমধ্যে গত শুক্রবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই ও পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে এক বৈঠককালে একথা বলেন ইউ বোরেন। খবর : বিবিসি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য ডন ও জিও টিভি
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।