পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ইনকিলাব ডেস্ক : ঈদের বন্ধের আগ থেকেই অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসজুড়েই পুঁজিবাজার ভালো অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি বীমা, ব্যাংক ও আর্থিক খাতের শেয়ারে কিছুটা নড়াচড়া দিচ্ছে। আর এমন সময়ে একটা দিন বেশি লেনদেন হওয়া মানেই বিনিয়োগকারীদের উপকৃত হওয়া। এমন ধারণা থেকেই গতকাল বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। আর তাদের বিনিয়োগের প্রভাবেই সূচক বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। উল্লেখ্য, ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত ১১ সেপ্টেম্বর একদিন সরকারি ছুটি বাড়িয়ে দেয়া হয়। আর এ কার্যক্রম ২৪ সেপ্টেম্বর চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেই হিসাবে গতকাল সব ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ খোলা ছিল পুঁজিবাজার।
গতকালের বাজার প্রসঙ্গে একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, আপাতদৃষ্টিতে বাজার এখন কিছুটা স্থিতিশীল। এখানে বড় ধরনের কোনো ওঠানামা নেই। তবে অর্থনীতির পারফরম্যান্স আর গত কয়েক বছরের বাজারচিত্র বিবেচনায় বাজারে আরেকটু গতিশীলতা থাকা উচিত।
তবে অন্যান্য বছর ঈদের সময় সাধারণত মানুষের শেয়ার বিক্রির প্রবণতা অনেক বেশি থাকলেও এবার ব্যতিক্রম চিত্র লক্ষ করা গেছে। ঈদের সময়ে যে নেতিবাচক প্রভাব থাকে তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে আমাদের পুঁজিবাজার। এটি বাজারের জন্য ইতিবাচক লক্ষণ। পাশাপাশি বাজার উন্নয়নে কাজ করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। ২০১০ সালের পর বেশ কিছু আইন ও বিধি প্রণয়ন করা হয়েছে। কিছু আইনের সংস্কার হয়েছে। ডেরিভেটিভ চালু করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো মার্কেটে অংশগ্রহণ বাড়ানো। অংশগ্রহণ বাড়লে তারল্যও বাড়বে।
তারা বলছেন, পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার জন্য বিদেশী বিনিয়োগ বেশ জরুরি। বিশেষ করে আমাদের মতো বাজারে, যেখানে হুজুগ ও গুজব বাজারে অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এই বাজার অনেকটাই ব্যক্তি বিনিয়োগকারীনির্ভর, তাই এখানে যুক্তির চেয়ে আবেগের প্রাধান্য অনেক বেশি। এটি বাজারের স্থিতিশীলতাকে ব্যাহত করে। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা কিন্তু আবেগে বা হুজুগ-গুজবে বিনিয়োগ করে না। স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাজার কয়েক দিন মন্দা থাকলেই ভয়ে শেয়ার বিক্রি করে দেন। গুজবে কম দামে শেয়ার বেচে দিতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন তারা। বিদেশীরা কিন্তু ওই সাময়িক মন্দায় হতাশ হয় না। বরং ওই সময়ে তারা বেশি করে শেয়ার কেনেন। এভাবে বাজার অনেকটা সাপোর্ট পায়। অন্যদিকে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা সাধারণত দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করে থাকে, যা বাজারকে গতিশীল করতে ভূমিকা রাখে।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানে শেষ হয় লেনদেন। শনিবার শুরু থেকেই টানা বাড়ে সূচক। তবে মাঝে উত্থান বেশি থাকলেও পরে কিছুটা হ্রাস পায়। এদিন সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর। আর লেনদেনও রয়েছে ইতিবাচক অবস্থানে। দিনশেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ১৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪৬৮০ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১১২১ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ০.৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৭৭১ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩২৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৪টির, কমেছে ১০৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৭টির। আর দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ৫২২ কোটি ৭০ লাখ ৩৭ হাজার টাকা।
এর আগের কার্যদিবস অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৪৬৬৫ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১১২০ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ১৭৭১ পয়েন্টে। আর দিনশেষে লেনদেন হয়েছিল ৫৫৫ কোটি ২১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।
এদিকে, দিনশেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক ৬৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৪৩৯৮ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৪৮টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৯টির, কমেছে ৭৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬টির। আর দিনশেষে সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩৩ কোটি ৩৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এর আগের কার্যদিবসে সিএসইর সার্বিক সূচক ২১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১৪৩২৭ পয়েন্টে।
আর ওই দিন সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪১ কোটি ৩ লাখ ৪১ হাজার টাকা। Ñওয়েবসাইট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।