পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ব্যাংক খোলা থাকলে যেকোনো পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু থাকবে- নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে এমন ঘোষণা দেয়া হলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে থেকে বসা আতঙ্ক যেন কাটছিল না। গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে ব্যাংক খোলা রেখে আজ ১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর বিনিয়োগকারীদের সেই আতঙ্ক যেন কেটে যায়। কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পরই শেয়ারবাজারে রীতিমতো উল্লম্ফন ঘটে। অবশ্য এদিন লেনদেনের শুরু থেকেই শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। তবে লেনদেন ছিল বেশ ধীরগতি। কিন্তু কঠোর বিধিনিষেধ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর একদিকে লেনদেনের গতি যেমন বাড়ে, অন্যদিকে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে থাকে মূল্য সূচক। ফলে দিনের লেনদেন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচকে ১০০ পয়েন্টের ওপরে যোগ হয়েছে। এর আগে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লকডাউন আতঙ্কে জেঁকে বসলে গত রোববার থেকেই শেয়ারবাজারে এক ধরনের নেতিবাচক প্রবণতা দেখা দেয়। গত রোববার ডিএসইর প্রধান সূচক ১০০ পয়েন্ট পড়ে যায়। আর গত মঙ্গলবার দুই মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেনের ঘটনা ঘটে। এ পরিস্থিতিতে গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরুতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়লেও লেনদেনে ধীরগতি দেখা দেয়। প্রথম দুই ঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইতে ৪০০ কোটি টাকার কম লেনদেন হয়।
দুপুর ১২টার পর লকডাউন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনের তথ্য চলে আসে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের কাছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ এই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে। অপরদিকে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছে ব্যাংক খোলা থাকলে যেকোনো পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজারে লেনদেন চলবে। ফলে শেয়ারবাজারে তথ্য ছড়িয়ে পড়ে লকডাউনে শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ হচ্ছে না। এতেই হু হু করে বাড়তে থাকে প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম। ফলে দেখতে দেখতে ডিএসই’র প্রধান সূচক ১০০ পয়েন্টের ওপরে বেড়ে যায়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০৭ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ১৫০ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২২ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ২০৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই’র শরিয়াহ্ সূচক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩১৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সূচকের এই বড় উত্থানের দিনে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৩০৭টি। বিপরীতে দাম কমেছে ৪১টির। আর ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর প্রথম দুই ঘণ্টায় ৪০০ কোটি টাকার কম লেনদেন হলেও শেষ পর্যন্ত তা প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকায় পৌঁছে যায়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে লেনদেন পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ৪০৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ১৪৮ কোটি আট লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ২৫৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৮৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ৪৬ কোটি পাঁচ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে কেয়া কসমেটিকস। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স, সন্ধানী লাইফ ইন্সুরেন্স, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, ন্যাশনাল ফিড, মালেক স্পিনিং, কুইন সাউথ টেক্সটাইল ও বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩২১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৪৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫১টির এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।