পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতে এবং দেশের অভ্যন্তরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এরফলে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে নদ-নদীসমূহের পানি বাড়ছেই। অতি বর্ষণ ও উজান থেকে পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সিলেট বিভাগে যদুকাটা ও সারিগোয়াইন নদী বিপদসীমার ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হয়। বিকেল পর্যন্ত পাউবোর সর্বশেষ তথ্য-উপাত্তে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে লরেলগড় পয়েন্টে যদুকাটা নদী বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার উপরে এবং সিলেটের গোয়াইনঘাটের সারিঘাটে সারিগোয়াইন নদী বিপদসীমার ৪ সে.সি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তাছাড়া সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি দ্রুত বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার ৩৬ সে.মি. নিচে এসে গেছে। পূর্বাভাসে জানা গেছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদী সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
নদ-নদীর প্রবাহ পরিস্থিতি সম্পর্কে পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের ১০১টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৬১টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৩৩টিতে হ্রাস পায়, ৬টি স্থানে অপরিবর্তিত থকে। সোমবার ৫১টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৪৬টি পয়েন্টে হ্রাস পায়।
পাউবো জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, পদ্মা নদী স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকায় প্রধান নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।
বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের তথ্য-উপাত্ত উল্লেখ করে পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র গতকাল পূর্বাভাসে জানায়, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং এর সংলগ্ন ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এরফলে এ সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকা এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পার্বত্য অববাহিকায় প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
মেঘালয়ে ৫৬০ মি.মি. বৃষ্টিপাত
গতকাল ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে রেকর্ড ৫৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়া এ অঞ্চলে নদ-নদীর উজানের অববাহিকায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। অন্যদিকে দেশের অভ্যন্তরে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতিবৃষ্টি হয়েছে অনেক জায়গায়। এরমধ্যে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে লরেলগড়ে ১৮০, জাফলংয়ে ১২৮, সুনামগঞ্জে ১১৬, মহাদেবপুরে ১০৯, ছাতকে ৯৮, লালাখালে ৯০, আত্রাই ও জামালপুরে ৮১, মহেশখোলায় ৬৮ মিলিমিটারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ রেকর্ড করা হয়েছে পাউবোর স্টেশনগুলোতে।
বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস, বর্ষার মৌসুমী বায়ুর সক্রিয়তার আলোকে পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র অন্তবর্তী বিশেষ পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-মধ্যাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। পূর্বাভাস মতে, প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি ও বিপদসীমা অতিক্রম করে এ সময়ে বা এর আগে-পরে ২০ থেকে ২২টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
সম্ভাব্য জেলাগুলো হচ্ছে, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, পাবনা, নওগাঁ, নাটোর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, রাজবাড়ি, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, চাঁদপুর এবং বৃহত্তর সিলেট। ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আলামত দেখা দিয়েছে। অবশ্য পাউবো সূত্র জানায়, জুলাই মাসে এটি ‘স্বাভাবিক’ ও ‘সাময়িক’ বন্যা হতে পারে। কোথাও কোথাও হতে পারে আকস্মিক বন্যা।
সর্বশেষ আবহাওয়া : ভারী বর্ষণের সতর্কতা
সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বেশিরভাগ জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ, কোথাও কোথাও অতিবৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় নওগাঁ জেলার বদলগাছীতে ১৩৮ মি.মি.। ঢাকায় ৪৫, চট্টগ্রামে ২৭, ময়মনসিংহে ৬৮, সিলেটে ৮, রাজশাহীতে ৪২, রংপুরে ৫৪ মি.মি.সহ দেশের প্রায় সর্বত্র বৃষ্টি ঝরেছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল বরিশালে ৩৩.৮ ডিগ্রি সে.।
আজ বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান জানান, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়া কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, মৌসুমী বায়ুর একটি বলয় উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।