পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : জাতিসংঘ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ এবং ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ দুটি পুরস্কারে ভূষিত করায় দেশে ফেরার দিন তাকে (প্রধানমন্ত্রী) ব্যাপক সংবর্ধনা দেয়ার বিশাল প্রস্তুতি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে বিপুল জনসমাগম ঘটাতে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ১৪ দল ও সমমনা বিভিন্ন সংগঠনও উদ্যোগ নিয়েছে। এর আগে জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ পান প্রধানমন্ত্রী।
আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে বরণ উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজবে রাজধানী ঢাকা। প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে সংবর্ধনা জানাবে। রাস্তার দুই পাশে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের রঙিন ব্যানার-পোস্টার থাকবে। পাশাপাশি সাজিয়ে তোলা হবে রাস্তার দুইপাশ। এছাড়াও ধুলাবালি মুক্ত, ঝকঝকে-তকতকে এবং সড়কের থাকবে বর্ণিল আলোকচ্ছটা। সড়কদ্বীপের দেশী-বিদেশী গাছগুলোকে পরিচর্যা দিয়ে জাগিয়ে তোলা হচ্ছে। ফোয়ারায় থাকবে আলো-ছায়ার খেলা। পানির ছোঁয়ায় শহরের দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্যগুলো ফের প্রাণ ফিরে পাবে। প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে এভাবে রাজধানী ঢাকাকে নতুন সাজে সাজাবে আওয়ামী লীগ। এতে একদিনের জন্য বদলে যাবে চিরচেনা রাজধানীর দৃশ্যপট।
জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি ঘটাতে একাধিক প্রস্তুতি ও যৌথ সভা করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এই সংবর্ধনা আয়োজিত হলেও ১৪ দলসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব দল ও সংগঠন এবং সব শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিরাও এতে অংশ নেবেন। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক যৌথ সভা থেকে সব রাজনৈতিক সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সব শ্রেণীপেশার মানুষের আহ্বান জানানো হয়েছে।
গত বুধবার ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম এবং ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে যৌথ সভায় সভাপতির বক্তব্যে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে শুধু ভালবাসা ছাড়া দেয়ার মতো আমাদের কিছু নেই। আমরা তাকে ছোট্ট একটা ধন্যবাদ দেব। তিনি কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে এলে তাকে উষ্ণ সংবর্ধনা দেয়া হবে। ২৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর তাঁকে বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত অভ্যর্থনা দেবে আওয়ামী লীগ। এটা সফল করতেই বেশ কয়েকটি যৌথ সভা করা হয়েছে বলে জানান জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এখন এমন উচ্চতায় পৌঁছেছেন যে তিনি এখন আর শুধু আওয়ামী লীগের নন, পুরো জাতির। বিমানবন্দর থেকে মিছিল সহকারে প্রধানমন্ত্রীকে তার সরকারি বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হবে। এটা একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সবাইকে নিয়ে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। আমরা কাউকেই বাদ দেব না।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আসা ব্যানার-পোস্টারে তিনজনের বাইরে আর কারও ছবি ব্যবহার করা যাবে না বলে দল থেকে নেতাকর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ওই তিনজন হলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রীর আইটি উপদেষ্টা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। গত বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক যৌথসভায় এ নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এ তথ্য জানিয়েছেন বৈঠকে উপস্থিত ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান মোল্লা। এছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত রাজধানীর বিভিন্ন থানার একাধিক নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নেতাদের ছবি ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, আমাদের দলীয় একটি সিদ্ধান্ত আছে। সে অনুযায়ী দলীয় কোনো অনুষ্ঠানে ব্যানার-পোস্টারে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয় এ তিন জনের ছবির বাইরে আর কারও ছবি ব্যবহার করা যাবে না। এই অনুষ্ঠানেও এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। তিনি বলেন, আমি আশা করব গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনজনের ছবি ছাড়া আপনারা আর কারও ছবি ব্যবহার করবেন না।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খলিদ মাহামুদ চৌধুরী ব্যানার-পোস্টারে নাম ব্যবহার করা যাবে কিনা জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রী বলেন, ব্যানার-পোস্টারের নিচে সৌজন্য দাবিদাররা তাদের নাম ব্যবহার করতে পারবেন। এই নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে চলার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশের মাটিতে অবতরণের পর বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন পর্যন্ত জনসমাগম ঘটিয়ে তাকে স্বাগত জানানো ও সংবর্ধনা দেয়া হবে। সংবর্ধনায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ঢাকাসহ আশপাশের এলাকা থেকে এসে সমবেত হবেন। এজন্য প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড, ইউনিয়নের নেতাদের জমায়েত নিয়ে আসার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সমবেত জনতাকে বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানোর জন্য রুট করে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ ইনকিলাবকে জানান, ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানী ঢাকা হবে উৎসবের নগরী। ঢাকার অলিগলি রাজপথে ব্যানার ফেস্টুনে শুধুমাত্র জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি থাকবে। এ তিনজনের বাইরে আর কারও ছবি না থাকার দলীয় সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই।
মুরাদ বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে আমরা আমাদের নেত্রীকে বরণ করে নেব। এই উৎসব নিশ্চিত করতে যা যা করণীয় তা আমাদের থাকবে। ব্যান্ড পার্টি, ঢোল-বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে হাতি থাকবে, ঘোড়া থাকবে। রঙিন ও বর্ণিল পোশাকে দলের সাফল্যের জয়গান গাইবে নেতাকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ এবং ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ দুটি পুরস্কারে ভূষিত করায় ২৬ সেপ্টেম্বর তাকে গণসংবর্ধনা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগ। এ দিনটিতে বিশাল জমায়েতের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করবেন দলটির নেতাকর্মীরা। এরই অংশ হিসেবে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান সফল করতে আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে তাদের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে আসছে। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকার আশপাশের জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে যৌথসভায় মিলিত হন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
২৬ তারিখের পরিবর্তে ৩০ সেপ্টেম্বর সংবর্ধনা
বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবর্ধনার তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে ৩০ সেপ্টেম্বর বিমান বন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত তাকে এই সংবর্ধনা দেয়া হবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ গতরাতে একথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামী ২৬ তারিখ দেশে ফেরার কথা ছিল। এখন সেটা পিছিয়ে ৩০ তারিখে গেছে। তাই তাকে গণঅভ্যর্থনার যে কর্মসূচি ২৬ তারিখে ছিল সেটা ৩০ তারিখে হবে। পরিবর্তিত সূচি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন বলেও জানান হানিফ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।