পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহামারি করোনাভাইরাসের কবলে পড়ে অনেক দিন থেকেই বন্ধ রয়েছে হোটেল-রেস্তোরাঁ। এ খাতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণও বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের অন্যান্য দেশে এ খাতকে টিকিয়ে রাখতে ভ্যাট হার ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কমিয়েছে। দেশে এ ভ্যাট হার ৫ শতাংশ হলে ভ্যাট আদায় বাড়বে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। হোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, তারা সবাই মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) দিতে চান। তবে ভ্যাটের হার কমানোর দাবি করেছেন। পাশাপাশি ভ্যাট ফাঁকি রোধে রেস্তোরাঁগুলোতে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বসানোর দাবিও তোলা হয়েছে।
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি গত মঙ্গলবার এসব দাবি জানিয়ে এনবিআরের চেয়ারম্যানের কাছে একটি আবেদন করেছে। এতে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ করার অনুরোধ জানানো হয়। রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. ফিরোজ আলম সুমন বলেন, রেস্তোরাঁয় খাবার তৈরিতে যেসব উপকরণ ব্যবহৃত হয়, তার বেশির ভাগ ভ্যাটমুক্ত। ফলে রেয়াত নেয়া যায় না। এতে খুচরা পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাটের প্রভাব অনেক বেশি হয়। তিনি বলেন, আমরা সবাই ভোগান্তি ছাড়া ভ্যাট দিতে চাই। হারটি ৫ শতাংশ করা হলে সবাই ভ্যাট দেবে। এতে সরকারের রাজস্ব অনেক বাড়বে। ভোক্তারাও সুফল পাবেন। তিনি বলেন, ফাইভ স্টার হোটেল ১৫ শতাংশ ভ্যাট দেয়, কিন্তু তারা ৮ শতাংশ রেয়াত নিতে পারে। আর আমরা ১৫ শতাংশ ভ্যাট দেই, কিন্তু রেয়াত নিতে পারি না। এক্ষেত্রে আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। আর ১৫ শতাংশ ভ্যাট অনেক বেশি। এছাড়া ইএফডি মেশিনের কারণেও আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। শতকরা ৫ শতাংশ রেস্টুরেন্টে ইএফডি বসানো হয়েছে। ফলে যে রেস্টুরেন্টে মেশিন বসানো হয়েছে, সেখানে ক্রেতা কম। এক্ষেত্রে আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চাই। তিনি বলেন, গবেষণা অনুযায়ী দেশে ৪ লাখ ৩৬ হাজার হোটেল-রেস্টুরেন্ট রয়েছে। প্রতিষ্ঠান আর জনবলের দিক থেকে পোশাক খাতের পর হোটেল- রেস্টুরেন্ট খাতের অবস্থান। ফলে এটি একটি সম্ভাবনাময় খাত।
এ খাতে ভ্যাট হার ৫ শতাংশ করা হলে বছরে অতিরিক্ত দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকা রাজস্ব পাবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশে এ খাতে ভ্যাট হার বেশি। করোনার কথা বিবেচনা করে ভ্যাট হার কমানো হলে এ খাত অন্তত ঘুরে দাঁড়াবে। ভ্যাট হার কমে গেলে খাবারের দামও কমে যাবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপ অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে হোটেল-রেস্টুরেন্ট খাত থেকে মূল্য সংযোজন হয়েছে ৮৭ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে প্রায় আট গুণ বেশি। চলতি বছরের ২৭ মার্চ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত দৈবচয়নের ভিত্তিতে দেশের ৬ হাজার ৭৩৪টি হোটেল-রেস্টুরেন্টের ওপর বিবিএস জরিপ করে।
এক দশক আগে দেশে হোটেল-রেস্টুরেন্টের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৭৫ হাজার ৩২৪। তখন কর্মসংস্থান ছিল ৯ লাখ ৩৭ হাজার ৮৪ জনের। বর্তমানে এই খাতে কর্মসংস্থানও বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। এ খাতে কর্মসংস্থান হয়েছে ২২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৩২ জনের। যার মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ১৮ লাখ ৩৭ হাজার আর বাকি সংখ্যা নারী।
এনবিআর সূত্রমতে, দেশে বেষ্টনী ও বৈদ্যুতিক পাখা নেই, শুধু দুটি বাতি আছে এমন রেস্তোরাঁর খাবারের বিলের ওপর কোনো ভ্যাট নেই। ফুটপাতের রেস্তোরাঁয় সাধারণত বেষ্টনী ও পাখা থাকে না। এসব রেস্তোরাঁয় খাওয়া-দাওয়া করলে ভ্যাট দিতে হবে না। তবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয় কিন্তু বেষ্টনী ও বৈদ্যুতিক পাখা আছে, এমন রেস্তোরাঁয় খাবারের বিলের ওপর সাড়ে ৭ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হয়। আর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হোটেল-রেস্তোরাঁয় ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। ফাস্টফুডের দোকানের ক্ষেত্রে একই শর্ত। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ফাস্টফুডের দোকানে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। আর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয় এমন ফাস্টফুডের দোকানে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। শ্রেণিভেদে কফিশপেও একই হারে ভ্যাট দিতে হয়। একইভাবে আবাসিক হোটেলে নন এসি কক্ষ থাকলে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। আর শীতাতপ রুমের ভাড়ার ওপর দিতে হয় ১৫ শতাংশ ভ্যাট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।