Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

এখনো নিখোঁজ ১০ জন : অপেক্ষায় পরিবার

বানারীপাড়ায় নিমজ্জিত নৌযান উদ্ধার : মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪

প্রকাশের সময় : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বরিশাল ব্যুরো ও বানারীপাড়া উপজেলা সংবাদদাতা : বানারীপাড়ায় ঐশী ট্র্যাজেডির উদ্ধার কাজ সম্পন্ন হয়েছে উদ্ধার হয়েছে মোট ২৪ জনের লাশ। নিখোঁজ রয়েছে আনুমানিক ১০ জন। বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা নদীতে মর্মান্তিক যাত্রীবাহী ট্রলারডুবিতে বুধবার ১৪ জনের লাশ উদ্ধার ও আনুমানিক ১৪ জন যাত্রী নিখোঁজ ছিল।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকৃত জাহাজ নির্ভিক ডুবন্ত ছইওয়ালা ট্রলারটি সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে উদ্ধার করে। এসময় ট্রলারটির মধ্যে ৪ জন শিশুর লাশ পাওয়া যায়। এরা হলোÑ রাব্বি (৫), মাইশা (৭), আড়াই বছরের শিশু রিয়াদ এবং শিশু সাফয়ান। নিহতদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন জিরারকাঠীর খুকু মনি (২৫), বাইশারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের স্নাতক পরীক্ষার্থী মাইনুল ইসলাম রাজু, পূর্ব সৈয়দকাঠি গ্রামের জাকির হাওলাদার (৪০), সাতবাড়িয়া গ্রামের আ: মজিদ হাওলাদার (৬৫), একই গ্রামের রুহুল আমিন (৩০), হিদেলকাঠি গ্রামের আল্পনা (২৫), উজিরপুরের মশাং গ্রামের রাফি (১০), পূর্ব কেশবকাঠি গ্রামের দিদার (৮), হামিদা বেগম (৪০) এবং সুজন মোল্লা।
এদিকে গত সন্ধ্যার পর আরো ৫টি লাশ উদ্ধার হয়। এতে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৪-এ।
এদিকে ৯ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: জাকির হোসেন সকাল ১০টায় উদ্ধার কাজের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। তিনি নিখোঁজদের বিষয়ে জানান, স্থানীয় প্রশাসন সন্ধ্যা নদীতে সার্বক্ষণিক দৃষ্টি রাখবেন কোনো লাশ সন্ধান পেলে তা জেলা প্রশাসনকে অবহিত করবেন।
গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় বানারীপাড়া লঞ্চ টার্মিনাল থেকে উজিরপুরের হাবিবপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া ঐশী প্লাস নামক ট্রলারটি বানারীপাড়ার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের মসজিদবাড়ি গ্রামের দাসেরহাট বাজারে ভাঙনকবলিত তীরে বেলা সোয়া ১১টায় ঘাট দেয়ার সময় মাটির বড় আকৃতির অংশ ভেঙে লঞ্চটির সামনে পড়ে। ঘুর্ণীয়মান পানির চাপে লঞ্চটি মুহূর্তের মধ্যে ডুবে যায় এবং মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেক পরিবারকে জেলা প্রশাসনের ত্রাণ তহবিল থেকে ১০ হাজার টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ গোলাম ফারুক ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নিহত পরিবারদের মোট দেড় লাখ টাকা অনুদান দেন।
তবে দুর্ঘটনার সময় সব ধরনের সার্ভে সনদসহ রুট পারমিটবিহীন ঐ নৌযানটিতে যাত্রীসংখ্যা ছিল ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত। এ ধরনের নৌযানের ধারণ ক্ষমতা সর্বোচ্চ ৩০-এর ওপর হওয়ার কথা নয়। দুর্ঘটনার সময় নৌযানটিতে অন্তত ৪৫ জন যাত্রী ছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে এ ধরনের অননুমোদিত ও রুট পারমিটবিহীন অসংখ্য নৌযান চলাচল করলেও বিষয়টি নিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়সহ প্রশাসনের তেমন কোনো জোরালো উদ্যোগ নেই। প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতও এসব বিষয়ে আজ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানা যায়নি।
দুর্ঘটনাকবলিত ‘এমভি মোটর বোট ঐশী’র নকশা মূলত কোনো যাত্রী পরিবহন নৌযানের ছিল না বলে বিআইডব্লিউটিএর দায়িত্বশীল সূত্রে বলা হয়েছে। উপরন্তু এর নকশা অনুমোদনসহ তা কোনোদিন জরিপ পর্যন্ত করানো হয়নি। একইভাবে নৌযানটি চলাচলের কোনো রুট পারমিটও ছিল না বলে বিআইডব্লিউটিএর দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এখনো নিখোঁজ ১০ জন : অপেক্ষায় পরিবার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ