পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপশহরে বিনোদনের নামে চলছে মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কর্মকান্ড। এতে করে এ শহরে প্রায় সময়ই অজ্ঞাত যুবক-যুবতীর লাশ পাওয়া যাচ্ছে। এসব কারণে স্থানীয়রা থাকেন চরম আতঙ্কে। হোয়াইট হাউজ রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড মিউজিক্যাল ক্যাফে রেস্টুরেন্টে পুলিশের অভিযানের পর বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। প্রভাবশালীদের যাতায়াতে রেস্টুরেন্টটি একটি মিনি পতিতালয়ে পরিণত হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রেস্টুরেন্টটি পুলিশ অসামাজিক কার্যকলাপের কারণে সিলগালা করে দিলেও গতকাল দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে রেস্টুরেন্টটি খোলা অবস্থায় দেখা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলার ইছাপুরা এলাকার মোবারক-মুক্তা দম্পতি পূর্বাচল উপশহরের ১নং সেক্টরে হোয়াইট হাউজ গড়ে তোলেন। রেস্টুরেন্টটিতে রাত থেকে শুরু করে ভোর ৬টা পর্যন্ত চলে ডিজে পার্টি, মাদক সেবনসহ নানা অপকর্ম। রেস্টুরেন্টটির পাশে মোবারক-মুক্তা দম্পতি একটি প্লট ভাড়া নিয়ে ১৫টি রুম করে গড়ে তোলেন মিনি পতিতালয়। মিনি পতিতালয়ে প্রতিরাতের জন্য দিতে হয় ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা। এখানে প্রভাবশালীদের অবাধ যাতায়াত ছিল। মোবারক-মুক্তা দম্পতি গত দুই বছর ধরে এই মিনি পতিতালয় চালালেও প্রভাবশালীদের প্রভাবে প্রশাসন ছিল নীরব। মোবারক-মুক্তা দম্পতি রেস্টুরেন্টটির মূল মালিক হলেও পরিচালনা করতো মোবারকের শ্বশুর নজরুল ইসলাম। রাত ৮টার পর থেকে বিলাসবহুল গাড়ি দিয়ে প্রভাবশালীরা এখানে এসে রাতভর পার্টি করতো। সবার মন যোগাতে রাখা হতো সুন্দরী নারী। ডিজে পার্টি শেষে চাইলেই যেকোন নারী নিয়ে মিনি পতিতালয়ে রাত কাটাতো তারা।
কথা হয় মিনি পতিতালয়টির আশেপাশে বসবাসকারী কয়েকজনের সঙ্গে তারা জানান, মোবারক-মুক্তা দম্পতির কয়েক বছর আগেও নূন আনতে পান্তা ফুরাতো। প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় দেহ ব্যবসা ও মাদক ব্যবসা করে কয়েক বছরের বনে গেছেন কোটিপতি। তাদের নামে বেনামে রয়েছে অঢেল সম্পত্তি। এই রেস্টুরেন্টটি দেয়ার পর থেকে আশপাশে বসবাসকারী বাসিন্দারা অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন। স্থানীয়দের সামনে এসকল অপকর্ম চললেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। এছাড়া বিনোদনের নামে এসব মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কর্মকান্ডের কারণে প্রায় সময়ই অজ্ঞাত যুবক-যবতীদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে পূর্বাচল উপশহরে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সূত্র জানায়, পূর্বাচলের এসব রেস্টুরেন্টের অবস্থান পূর্বাচলের ফারুক মার্কেট, লেংটার মাজার এলাকা, ২১নং সেক্টরের ভাসমান ও অস্থায়ী রেস্টুরেন্ট, হেলিপ্যাড চত্ত¡র, জয়বাংলা চত্ত¡র, জঙ্গলবাড়ি রিসোর্ট। আবার শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসমান রেস্তোরা, ভাসমান লঞ্চ বিনোদন ও স্পিডবোটের আড়ালে দর্শনার্থীদের অবাধ মেলামেশার সুযোগ করে দেয়া হয়। এছাড়াও দর্শনার্থীদের বিনোদন দিতে দিনে কিংবা রাতে অবকাশ যাপনসহ মাদক সরবরাহ, জুয়ার আসরের ব্যবস্থা রাখা হয়। একইভাবে বালু নদীতে উন্মুক্ত পিকনিকের নামে অশ্লীল গান বাজিয়ে ডিজে পার্টিসহ মাদক সেবন করে প্রকাশ্যেই। বাদ যায়নি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও। পূর্বাচলের ১নং সেক্টর এলাকার একটি শশ্মান ঘাটে অবাধে মাদক সেবন আর জুয়ার আড্ডা বসায় স্থানীয় চিহ্নিত জুয়ারিরা। সেখানে কেউ বাধা দিলে তাদের ধর্মীয় বিধির দোহাই দিয়ে পার পেয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, ওই শশ্মানে মাদক রেখে পূর্বাচলের বিভিন্ন স্পটে মাদক সরবরাহ করা হয়।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার দেহ ব্যবসা, মাদক ব্যবসাসহ নানা অভিযোগে হোয়াইট হাউজ রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। এসময় নৃত্য শিল্পী পরিচয়ে ১১ জন পতিতা, ৭ জন খদ্দের ও রেস্টুরেন্টের কর্মচারী পরিচয়ে ৬ মাদক ব্যবসায়ীসহ মোট ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৯ ক্যান বিদেশী বিয়ার, ৩ বোতল বিদেশী মদ, নগদ ২ লাখ ৪৭ হাজার ৫শ’ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ জুয়া খেলার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় মোবারক-মুক্তা দম্পতি ও নজরুল ইসলাম রয়ে গেছে অধরাই। পুলিশ রেস্টুরেন্টটি ও তার সাথে মিনি পতিতালয়টি সিলগালা করে দেয়। সিলগালার একদিন না পেরোতেই পুনরায় রেস্টুরেন্টটি চালু হয়েছে বলে জানা গেছে।
নারায়ণগঞ্জ ‘গ’ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আবির হোসেন বলেন, পূর্বাচলে হোয়াইট হাউজ নামে একটি রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করে ২৪ জন গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। রেস্টুরেন্ট ব্যবসার আড়ালে যেখানেই অসামাজিক কার্যকলাপ চলবে সেখানেই পুলিশ অভিযান চালাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।