Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অতিবৃষ্টিতে বন্যার আশঙ্কা

বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০২১, ১২:০১ এএম

আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির প্রায় মুখোমুুুখি এসেছে দেশের উত্তর জনপদের তিস্তা নদীর উভয় পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। সেই সাথে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গতকাল শনিবার তিস্তা নদীর পানি আরও বেড়ে গিয়ে ডালিয়া (রংপুর বিভাগের নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলা) পয়েন্টে বিপদসীমার খুব কাছাকাছি মাত্র ৮ সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করে। তিস্তা কাউনিয়া (লালমনিরহাট জেলা) পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৩ সে.মি. নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

তিস্তার উজানে ভারত গজলডোবা বাঁধ খুলে পানি ছেড়ে দেয়ার কারণেই আকস্মিক এই বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পায়নি। কেননা গত চার দিনে রংপুর বিভাগে বিক্ষিপ্ত, সাময়িক ও স্বল্প বৃষ্টি হয়েছে। ভারত নিজেদের বন্যামুক্ত রাখতে উজানের গজলডোবা বাঁধ খুলে দিয়েছে। এতে করে কষ্ট-দুর্ভোগে পড়েছে ভাটিতে তিস্তাপাড়ের বিশেষত নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা।
পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র গতকাল জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানির সমতল বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে অথবা বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে।
এদিকে উজানে মধ্য-ভারত ও নেপালে অতিবৃষ্টির কারণে গঙ্গা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর সাথে ভারত যদি ফারাক্কা বাঁধ খুলে পানি ছেড়ে দেয় তাহলে ভাটিতে পদ্মাপাড়ের জনপদে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। গতকাল পাউবোর পূর্বাভাসে আরও জানা গেছে, গঙ্গা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। এ অবস্থা আগামী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।

বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস উল্লেখ করে পাউবো জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কক্সবাজারসহ এর সংলগ্ন অঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ সময়ে এসব অঞ্চলের নদীসমূহের পানি সময়বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। কোথাও কোথাও আকস্মিক বন্যা সংঘটিত হতে পারে।
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আপার মেঘনা অববাহিকায় প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি হ্রাস পাচ্ছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থাকতে পারে।

দেশের নদ-নদীসমূহের ১০১টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৪৬টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৪৮টিতে হ্রাস পায়, ৬টি স্থানে অপরিবর্তিত থাকে। আগের ২৪ ঘণ্টায় ৪৬টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৫৪টিতে হ্রাস পায়।

দেশের অভ্যন্তরে এবং প্রধান নদ-নদীসমূহের উজানে উত্তর-পূর্ব ভারত, বিহার এবং নেপালে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় ও জোরালো রয়েছে। এর প্রভাবে এ অঞ্চলব্যাপী মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ, কোথাও কোথাও অতি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতের পাসিঘাটে ৯৫, চেরাপুঞ্জিতে ৪৯, গ্যাংটকে ৪৮ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়।

অন্যদিকে দেশের অভ্যন্তরে পাবনায় ১৭৭, টেকনাফে ১৬৩, ভাগ্যকূলে ১০৯, চট্টগ্রামে ৯৮, লামায় (বান্দরবান) ৮৭, টাঙ্গাইলে ৮৬, রাঙ্গামাটিতে ৮০, নোয়াখালীতে ৭৭, দিনাজপুরে ৭৫, বরগুনায় ৭৩, জামালপুরে ও ফরিদপুরে ৭০, যশোরে ৬৬, কক্সবাজারে ৬৪, দেওয়ানগঞ্জে ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পাউবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অতিবৃষ্টিতে বন্যার আশঙ্কা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ