Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ উদ্বাস্তু ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করবে -প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩৭ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

বিশেষ সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমারের উদ্বাস্তু ইস্যুর সমাধানে উপায় বের করতে দেশটির নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, আমরা এই ইস্যুর সমাধানে উপায় বের করার কাজে মিয়ানমারের নতুন নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে আছি। আমি ইতোমধ্যে এ বিষয়ে অং সান সু চিকে কিছু আভাসও দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী গত মঙ্গলবার অপরাহ্ণে জাতিসংঘের সদর দফতরে ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আয়োজিত ‘লিডারশিপ সামিট অন রিফিউজস’ বিষয়ে বক্তব্য রাখছিলেন।
শেখ হাসিনা অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের ইস্যুতে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কাউকে পেছনে ফেলে না রাখার আমাদের যে অঙ্গীকার তা বাস্তবায়নে আমাদেরকে অবশ্যই জনগণকে সুশৃঙ্খল, নিরাপত্তা, নিয়মানুবর্তিতা ও দায়িত্বের প্রতি উন্নয়ন সাধনে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, গত তিন দশকে মিয়ানমার থেকে আসা বিপুল সংখ্যক শরণার্থী ও উদ্বাস্তুকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমরা ওই মানুষদের দায়িত্ব বহন করে চলেছি। আমাদের স্থানীয় জনগণ তাদেরকে (শরণার্থী) আশ্রয় প্রদান ও সহযোগিতার জন্য জায়গার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। যদিও এতে বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের শরণার্থীদের ক্যাম্পগুলোতে নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও দক্ষতার বিষয়ে সরকার প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিচ্ছে। তাদেরকে উন্নত মানের আশ্রয়স্থলের ব্যবস্থা ও আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্যও মনোযোগ দেয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা অন্যদের ব্যাপারেও সম্প্রতি একটি জরিপের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমরা তাদেরকে ‘তথ্য কার্ড’ শীর্ষক পরিচয়পত্র প্রদানের জন্যও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এই পরিচয়পত্র ন্যায়বিচার, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও অন্যান্য সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে তাদের জন্য সহায়ক হবে।
নারীর কর্মক্ষেত্র প্রসারিত রাখতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের জন্য টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণের লক্ষ্যে সুযোগ সম্প্রসারণ এবং কর্মক্ষেত্রকে প্রসারিত রাখতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা তার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, যে সমাজ নারীর অংশগ্রহণ এবং ক্ষমতায়নের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়, সে সমাজে উগ্র চরমপন্থার কোনো স্থান নেই। আমাদের নারীর কর্মক্ষেত্রকে প্রসারিত করার মাধ্যমে সকলের জন্য টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে কাজ করে যেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বিশ্বাস যে সমাজ নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্র সৃষ্টি করে সেখানে সহিংস চরমপন্থার কোনো জায়গা নেই। আমরা অবশ্যই টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য ক্ষেত্র আরো প্রসারিত করা অব্যাহত রাখবো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দফতরের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে ‘ওমেনস লিডারশিপ অ্যান্ড জেন্ডার পার্সপেক্টিভ অন প্রিভেন্টিং অ্যান্ড কাউন্টারিং ভায়োলেন্স এক্সট্রিমিজম’ বিষয়ক সাইড ইভেন্টে ভাষণকালে এ কথা বলেন। নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এরনা সোলবার্গের আমন্ত্রণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থা সভ্য সমাজকে লাঞ্ছিত করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা শান্তি ও নিরাপত্তা, টেকসই উন্নয়ন এবং মানুষের প্রতি মর্যাদাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমরা অবশ্যই আমাদের অবস্থান থেকে এই চ্যালেঞ্জ মোকবেলা করবো। আমরা সে সমাধানই চাই, নারীরা তাতে অবশ্যই অংশ নেবে। এই সমস্যা সমাধানে আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে। আমরা যে সমাধানের পথেই যাই না কেন, নারীদের সেখানে অংশীদারিত্ব থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী এসময় উগ্র চরমপন্থা প্রতিরোধে নারীদের অংশগ্রহণ এবং নারী নেতৃত্বের অন্তর্ভুক্তির নতুন পরিকল্পনার জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, আমি সবার জন্য শিক্ষানীতিতে বিশ্বাসী, বিশেষ করে নারীদের জন্য এবং এটাই সমাজ থেকে সন্ত্রাস এবং উগ্র চরমপন্থা হটানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।
তিনি বলেন, আমি আমাদের মায়েদের একেকজনকে তাদের সন্তানদের জন্য রোল মডেল হিসেবে নিজেকে উপস্থাপনের জন্য উৎসাহিত করে থাকি। দেশের প্রাইমারি স্কুলগুলোর শিক্ষকদের শতকরা ৬০ শতাংশ নারী শিক্ষক এবং যারা এই সমাজে বিশেষ করে শিশুতোষ সমাজে মূল্যবোধ এবং সংযমের আলো ছড়াচ্ছে। আমাদের শিশুদেরকে অবশ্যই এসব সন্ত্রাসী কর্মকা- এবং উগ্র চরমপন্থার পথ থেকে দূরে রাখতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আমাদের দেশের পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নারী সদস্য এবং স্থানীয় সরকারের নারী জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন পরিবার পর্যায়ে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে সমাজ থেকে উগ্র চরমপন্থার মতো অসামঞ্জস্য দূরীকরণে গণসচেতনতা সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
এক্ষেত্রে নারীদের অধিকার আদায়ে জাতীয় সংসদের নারী সদস্যদের ভূমিকা কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি এটা দেখে খুশি যে, সহিংস চরমপন্থা রোধে জাতিসংঘ মহাসচিব নারীর ভূমিকা ও নেতৃত্ব উপলব্ধি করে নতুন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।
উগ্র সন্ত্রাসবাদে নারীদেরকেও সম্পৃক্ত করার জন্য নতুন এক ধরনের অপচেষ্টা শুরু হয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ সময় সন্ত্রাস ও উগ্র চরমপন্থার বিরুদ্ধে তার সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, কী কারণে এসব নারী ভুল পথে প্রলুব্ধ হচ্ছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি গোঁড়ামি প্রবণতা ও সহিংস চরমপন্থারোধে সবার জন্য শিক্ষা বিশেষ করে মেয়েদের জন্য শিক্ষা একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। আমি আমাদের মেয়েদের তাদের সন্তানদের সামনে আদর্শ মডেল ও পরম বন্ধু হিসেবে ভূমিকা পালনে অনুপ্রাণিত করছি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতির প্রসঙ্গসহ তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন নারীর উন্নয়নমূলক পদক্ষেপের তথ্য তুলে ধরে বলেন, ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ ইস্যু থেকে সব সময়ই নারীদের একটু সরিয়ে রাখার প্রবণতা লক্ষ করা যায়।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে সন্ত্রাসীর একটাই পরিচয়Ñসে সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসীর কোনো জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নেই।
তিনি বলেন, সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী নারী সদস্যরা সহিংস চরমপন্থা প্রতিরোধে নীতি প্রণয়নে সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে। আমরা সহিংস চরমপন্থীদের মধ্যে নারীসদস্য নিযুক্ত করার নতুন প্রবণতা দেখছি। আমরা বোঝাবার চেষ্টা করছি, এ ধরনের ভুল পথে যোগ দিতে তারা কেন উদ্বুদ্ধ হলো।
তিনি বলেন, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি নারীদের জন্য সমান সুযোগ ও অধিকার নিশ্চিত করেছে এবং নারীর ক্ষমতায়ন ধর্মীয় এজেন্ট পেছনে ফেলে দিয়েছে। সন্ত্রাসী আমাদের কাছে একজন সন্ত্রাসী হিসেইে বিবেচিত এবং তাদের কোনো ধর্ম নেই।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার গ্লোবাল কমিউনিটি এনগেজমেন্ট অ্যান্ড রেজিলেন্স ফান্ডের (জিসিআরআইএফ) সঙ্গে প্রকল্প গ্রহণ করেছে। সেখানে নারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে অংশ নিতে পারবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির প্রশংসায় বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ড. জিম ইয়ং কিম আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়নের উচ্চ প্রশংসা করে বলেছেন, দেশটির দারিদ্র্য হ্রাস ও নারীর ক্ষমতায়ন তাকে বিশেষভাবে মুগ্ধ করেছে।
গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার হোটেলে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি সবসময় প্রতিটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সাফল্যগাথা তুলে ধরে থাকি। কিম বলেন, দারিদ্র্য হ্রাস ও নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের বিস্ময়কর অর্জন অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেন, তার সংস্থা বাংলাদেশের সঙ্গে কর্মকা- অব্যাহত রাখবে এবং তিনি আগামী মাসে দক্ষিণ এশিয়ার এদেশ সফরের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন।
কোন দেশ বা উন্নয়ন সংস্থা বিশেষ করে নদীশাসন বা অন্য কোনো পরিকল্পনা বা প্রকল্প গ্রহণের সময় তার সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে গ্রহণ করা হলে পরিকল্পনা বা প্রকল্পটি বাংলাদেশের জন্য যথোপযুক্ত হবে। কারণ, আমরা আমাদের প্রয়োজনগুলো বুঝি।
বিভিন্ন খাতে তার সরকারের অর্জন তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার জ্বালানি খাত ও নদী খননের ওপর অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
বিবিআইএন ও বিসিআইএম ইকোনমিক করিডোরের ব্যাপারে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব পদক্ষেপ এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য গ্রহণ করা হয়েছে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষাখাতে বাংলাদেশের সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার কারণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণের প্রবণতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান সংসদে ২১ নারী সদস্য সরাসরি নির্বাচিত হয়ে এসেছেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের মতো স্থানীয় সরকারগুলোতে ৩০ শতাংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, এসব পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে প্রশাসন, বিচারবিভাগ, শিক্ষা, সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীসহ অন্যান্য সকল খাতে নারীর মর্যাদাকে উঁচু স্তরে নিয়ে গেছে। এসময় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
‘সাউথ-সাউথ নেটওয়ার্ক’ গড়ার প্রস্তাব
দক্ষিণের দেশগুলোর মধ্যে সরকারি পর্যায়ে বোঝাপড়া বাড়াতে এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ‘সাউথ-সাউথ নেটওয়ার্ক’ গড়ে তোলার প্রস্তাব করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদরদফতরে এক সেমিনারে শেখ হাসিনা এই প্রস্তাব তুলে ধরেন বলে তার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান।
বাংলাদেশ ও ইউএন অফিস ফর সাউথ সাউথ কো-অপারেশন যৌথভাবে ‘সাউথ সাউথ অ্যান্ড ট্রায়াঙ্গুলার কো-অপারেশন ইন স্কেলিং আপ ইনোভেশন ইন পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাউথ-সাউথ নেটওয়ার্ক’ গড়ে তোলা গেলে তা নতুন নতুন ধারণার জন্ম দেবে, অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে পরস্পরের কাছ থেকে শেখার সুযোগ সৃষ্টি করবে।
২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সমন্বয় করে এই নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার প্রস্তাব ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করতে দক্ষিণের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে এ প্রস্তাবে উত্তরের দেশগুলোর সমর্থন প্রত্যাশা করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, সুশাসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি নতুন নতুন উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করতে ব্যর্থ হলে সবার জন্য সমতাসূচক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সুদূর পরাহতই থেকে যাবে।
সরকারের সেবা খাতের সহযোগিতা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মালদ্বীপ ও ভুটানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকে সই করেছে বলেও সেমিনারে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্বুদ্ধ করতে সাউথ সাউথ এবং ট্রায়াঙ্গুলার কো-অপারেশন যথেষ্ট কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চাইলে সব পক্ষের আন্তরিকতা, নিবিড় যোগাযোগ এবং বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন হবে।
এ প্রসঙ্গে নিজের দেশে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সরকারের কর্মপদ্ধতিতে বিভিন্ন পরিবর্তন আনার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি একটি জনবান্ধব এবং অংশগ্রহণমূলক সরকার প্রবর্তনে অঙ্গীকারবদ্ধ।
প্রধানমন্ত্রী ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ ও ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করবেন
নারীর ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ এবং ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব নজরুল ইসলাম জানান, জাতিসংঘ সদর দফতরের ইউএন প্লাজায় স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে জাতিসংঘ উইমেন ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ এবং গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফোরাম ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করবেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে নিউইয়র্ক রয়েছেন।



 

Show all comments
  • জোবায়ের ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১:১২ পিএম says : 0
    নারী ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে একটি বড় উদাহরণ
    Total Reply(0) Reply
  • হাসিব ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১:২৫ পিএম says : 0
    প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন এবং এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ উদ্বাস্তু ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করবে -প্রধানমন্ত্রী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ