Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আরো জ্বালানি তেল ভারতের ত্রিপুরায় যাবে এ মাসেই

মেঘালয় থেকে মৌলভীবাজার হয়ে

প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এস এম উমেদ আলী (মৌলভীবাজার থেকে) : তেলভর্তি ৯টি ট্রাংক লরি ও ১টি গ্যাসবাহী (এলপিজি) লরি ভারতের কৈলাশহরে খালাসের পর খালি অবস্থায় বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ফেরত না এসে ত্রিপুরা ও আসামে বন্যা এবং ভারি বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা পাড়ি দিয়ে মেঘালয় পৌঁছায়। গত ১০ সেপ্টেম্বর জ্বালানি তেল ভর্তি ১০টি ট্রাংক লরি তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে বিকেল সোয়া ৪টায় বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যাত্রা শুরু করে রাত সোয়া ১১টায় পুনরায় ভারতের ভেতর প্রবেশ করে।চাতলাপুর কাস্টমস সুপারেনটেন্ট অবিনাস রায় জানান, চেকপোস্ট দিয়ে চলতি মাসের ২৪ তারিখ ভারতীয় জ্বালানি তেল ও গ্যাসবাহী ১৬টি লরি কৈলাশহর হয়ে ত্রিপুরায় প্রবেশ করবে। প্রতি কিলোমিটারে প্রতিটন ১ টাকা ২ পয়সা হারে শুল্ক পরিশোধের কাগজ জমা দিয়ে জ্বালানি তেল ভর্তি ১০টি ট্রাংক লরি ভারতে প্রবেশ করে। সকাল ১০টা ৫টা চাতলাপুর কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন চেক পোস্টে কার্যক্রমের কথা থাকলেও জ্বালানি তেল ভর্তি লরিকে নিরাপত্তাজনিত কারণে যে কোনো সময় কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন কাজ সম্পন্ন করা হবে।
মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী উৎপল সামন্ত জানান, তামাবিল সীমান্ত চেকপোস্ট থেকে মৌলভীবাজার চৌমুহনা পর্যন্ত ১০৬ কিলোমিটার সড়ক হাইওয়ের মধ্যে পড়েছে ও এর অবকাঠামো ভালো রয়েছে। চৌমুহনা থেকে শমসের নগর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়কটি হাইওয়ে না হলেও এর অবকাঠামো মজবুত রয়েছে। শমসেরনগর থেকে চাতলাপুর সীমান্ত চেকপোস্ট পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সড়কের অবকাঠামো অপেক্ষাকৃত সরু রয়েছে। ১৫ থেকে ২০ টন ভারি যান চলাচলের উপযোগী রয়েছে এ সড়ক। সরু সড়ক ব্যবহার করে চাতলাপুর চেকপোস্ট দিয়ে পাথর, সিমেন্টসহ বিভিন্ন কোম্পানি পণ্য ভারতে এক্সপোর্ট করে আসছে। তেলের লরিতে পাথরের মতো ওজন হয় না। তবে বেশিসংখ্যক গাড়ি চলাচল করলে কিছুটা ক্ষতি হতে পারে।
এদিকে প্রতি কিলোমিটারে প্রতিটন ১ টাকা ২ পয়সা হারে বাংলাদেশ ভারত থেকে যে শুল্ক পাওয়ার কথা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের অনুমোদনসাপেক্ষে এনবিআর শুল্ককর মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ১৬০টি ট্রাক-লরি তেল ও গ্যাস নিয়ে যাতায়াতের ওপর কোনো ধরনের ফি না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এছাড়া ট্রানজিট পণ্য পরিবহনকারী যানবাহনের ওপর প্রযোজ্য শুল্ককরও মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে আদেশ জারি করেছে এনবিআর।
এডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিব জানান, ভারত আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র, আমাদের সু-সম্পর্ক ও সৌজন্যবোধ সবসময় রয়েছে তাদের প্রতি। এ দেশের কেউ ট্রানজিটবিরোধী থাকার কথা নয়। ভারী যানবাহন চলাচলের উপযোগী নয় আমাদের এই সড়কগুলো, যানবাহন চলাচল করলে কম বেশি সড়কের ক্ষতি হবে। সড়কগুলো ভারি যানবাহন চলাচলের উপযোগী সড়ক নির্মাণের দাবি জানান। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) শুল্ক মওকুফের যে আদেশ জারি করেছে তা সঠিক নহে, এটি একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জাতীয় পার্টি নেতা সৈয়দ সাহাব উদ্দিন জানান, ভারতীয় ভারি যানবাহন চলাচলে আমাদের রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হবে। আগে আমাদের রাস্তাগুলো ভারি যানবাহন চলাচলের উপযোগী অবকাঠামো তৈরি করে ট্রানজিটের সুবিধা দেয়া উচিত ছিল। গাড়ি চলাচলে বাংলাদেশ ভূখ- ব্যবহারে ভারত থেকে যে শুল্ক পাওয়ার কথা তা মওকুফ করার বিষয়টি সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। উক্ত শুল্ক আয় থেকে রাস্তার উন্নয়ন করা যেত।
এদিকে পরিবহন শমিক নেতা সেলিম মিয়া জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শেরপুর সেতু মেরামতের কারণে গত ১০ জুন থেকে ১১দিন যানচলাচল বন্ধ করে দেয়া হলে ফেঞ্চুগঞ্জ-রাজনগর-মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল ও মিরপুর হলে যান চলাচল করে। ওই সময়ে সড়কের বিভিন্ন স্থান দেবে খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়, যা এখনও পুরোপুরি মেরামত করা হয়নি। ১০টি ভারতীয় তেলবাহী লরি সড়ক দিয়ে ভারতে গেছে এতে তেমন ক্ষতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। তবে ব্যাপকসংখ্যক তেলবাহী লরি চলাচল করলে সড়কের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আরো জ্বালানি তেল ভারতের ত্রিপুরায় যাবে এ মাসেই
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ