পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আন্তর্জাতিক মানের বিজ্ঞানীর ভুয়া পরিচয়ে কোটি কোটি টাকা ও জমি আত্মসাৎকারী চক্রের মূলহোতা সাইফুল ইসলাম ওরফে বিজ্ঞনী সাইফুল ওরফে সায়েন্টিস্ট সাইফুলসহ ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গত মঙ্গলবার থেকে গতকল বুধবার সকাল পর্যন্ত ঢাকা ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন স্থান থেকে অস্ত্র ও মাদকসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়। র্যাব জানায়, গ্রেফতার চক্রের মুলহোতা আন্তর্জাতিক মানের বিজ্ঞানীর ভুয়া পরিচয়ে স্ব-উদ্ভাবিত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব-প্রতিকার, পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রজেক্ট, করোনা প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও অন্যান্য প্রজেক্ট বাস্তবায়নের নামে কোটি কোটি টাকা ও জমি আত্মসাৎ করে প্রতারণা চালিয়ে আসছিল।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার উত্তরা এলাকার প্রতারক সংগঠন ‘রাজা-বাদশা’ গ্রুপের নতুন কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের মূলহোতা মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে বিজ্ঞানী সাইফুল ওরফে সায়েন্টিস্ট সাইফুল, মোছা. বকুলি ইয়াসমিন, মো. ইমরান রাজা, মোছা. কাকুলী আক্তার, মো. রোমান বাদশা, মো. আনিসুজ্জামান সিদ্দীকী, মো. নাজমুল হক, মো. তারেক আজিজ, মো. বেল্লাল হোসেন, মো. আব্দুল মান্নান, মো. শিমুল মিয়া, মো. নুরনবী, মো, আবুল হাশেম, মো. আলী হোসেন, মো. শওকত আলী, মো. রোকনুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, দুই রাউন্ড গোলাবারুদ, দুই বোতল বিদেশী মদ, ছয়টি সীল, নগদ ৪৫ হাজার ৪৬০ টাকা, ২০টি মোবাইল ফোন, ১৪টি চেক বই, ১২টি ভিজিটিং কার্ড, ছয়টি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চিঠি, বিভিন্ন মূল্যের ১২১টি জাল স্ট্যাম্প, ৩টি চুক্তিনামা দলিল, ৩টি বই এবং ৯টি স্বাক্ষরিত চেক ও বিদেশী নেতৃবৃন্দের সাথে পত্রালাপের ভ‚য়া কপি উদ্ধার করা হয়।
র্যাব আরো জানায়, গ্রেফতারকৃত সাইফুল ইসলাম এই চক্রের মূলহোতা। সে ‘রাজা-বাদশা গ্রুপ’ নামে একটি ভ‚য়া সংগঠন তৈরী করে ২০১১ সাল থেকে প্রতারণার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সে ওই গ্রুপের চেয়ারম্যান বলে পরিচয় দেয়। এই চক্রের সাথে তার পরিবারের সদস্যরাও অতোপ্রতভাবে জড়িত। তন্মধ্যে স্ত্রী বকুলী ইয়াসমিন, ছেলে মো. ইমরান রাজা ও মো. রোমান বাদশা এবং পূত্রবধূ মোছা. কাকুলী আক্তার ভ‚য়া সংস্থাটির গুরুত্বপূর্র্ণ পদে রয়েছে বলে জানা যায়।
র্যাব আরো জানায়, গ্রেফতারকৃত সাইফুল ইসলামের শিক্ষগত যোগ্যতা বিএসসি পাশ। সে প্রথমে টিউশনি ও পরবর্তীতে পোল্ট্রি ফিড ব্যবসা সাথে জড়িত ছিল। সে দীর্ঘ ১০/১১ বছর যাবত বিভিন্ন প্রতারণার সাথে জড়িত। তার নামে বিভিন্ন থানায় ৫টি প্রতারণার মামলা রয়েছে। সে নিজেকে একজন আন্তর্জাতিক স্বনামধন্য বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভিকটিমদের প্রলুব্ধ করত। সে উল্লেখ করত যে, বিদেশে তার বিভিন্ন আবিষ্কার ও গবেষণা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। এছাড়া তার প্রতিষ্ঠান জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রতিকার ও জ্বালানীবিহীন জেনারেটর দ্বারা পরিচালিত পাওয়ার প্ল্যান্ট ও করোনা প্রতিরোধ ব্যবস্থার উদ্ভাবন ও বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। সে ভিকটিমদের কাছে বিশ্বাস যোগ্যভাবে উপস্থাপন করত যে, করোনা প্রতিরোধে তার কয়েল টেকনিক পদ্ধতি বিশ্বব্যাপী করোনা প্রতিরোধে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। সে আরও উল্লেখ করত, তার প্রজেক্ট সমূহের বাস্তবায়নে রাষ্ট্রীয় নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রায় চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ সংক্রান্তে বিভিন্ন ভূয়া পত্রালাপগুলো সে উপস্থাপন করত। তার সাথে বিদেশী বিজ্ঞানী, গবেষক ও নেতৃবৃন্দের যোগাযোগ রয়েছে বলে সে দাবী করত। যারা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে সম্মত রয়েছেন বলে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করত। ভিকটিমদের বিশ্বাসযোগ্যাতা অর্জন করাতে সে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, তুরস্ক প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়ের এরদোগান ছাড়াও সউদী আরবের তৈল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং সাইপ্রাস ও জাপানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম উদ্ধৃত করত।
এছাড়াও ইরাকের এক আইনজীবি তার উদ্ভাবিত প্রজেক্টে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে ইচ্ছা পোষণ করেছে। এভাবে সে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন তথ্য উপস্থাপন করে প্রতারিত করত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।