পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর আফতাব নগরের নিজ বাসায় খুন হন মনজিল হক। হত্যাকান্ডের তিন বছর পর এর রহস্য উন্মোচন করেছে সিআইডি। হত্যাকান্ডের নেপথ্যে যে দৃশ্যপট পুলিশ তুলে ধরছে তাতে দেখা যাচ্ছে গোটা পরিবার এ হত্যাকন্ডের সঙ্গে জড়িত। সৎ ভাই, সৎ মা, মামা ও চাচার পরিকল্পনায় ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর খুন হন মনজিল। এ ঘটনায় মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। গতকাল রোববার মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।
সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন, সৎ ভাই, সৎ মা, মামা ও চাচার পরিকল্পনায় খুন হন মনজিল। হত্যাকান্ডের পরিকল্পনায় থাকলেও পরে মনজিলের চাচা ফারুক মিয়া নিজেই মনজিল হত্যায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের পর আত্মগোপনে চলে যান সৎ ভাই ইয়াসিন। এজন্য নিখোঁজ ইয়াসিনের সন্ধান চেয়ে থানায় জিডি করে কৌশল অবম্বলন করে খুনি পরিবার। হত্যাকান্ডের তদন্তে নেমে নিখোঁজ সৎ ভাই ইয়াসিনকে খুঁজতে থাকে সিআইডি। পরে গত ১৩ মার্চ চট্টগ্রামের শেরশাহ কলোনি থেকে গ্রেফতার হন তিনি। এরপর জট খুলতে থাকে মনজিল হত্যার। মূলত ইয়াসিনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একে একে গ্রেফতার করা হয় হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত ভাড়াটে খুনি রবিউল ইসলাম সিয়াম, মাহফুজুল ইসলাম রাকিব, সীমান্ত হাসান তাকবীরকে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন, মনজিলের বয়স যখন ৩/৪ বছর, তখন মনজিলের বাবা মইনুল হক অনৈতিক সম্পর্কে জড়ান। মনজিলের বাবা যার সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়ান তিনি মনজিলের মায়ের খালাতো বোন ছিলেন। তার নাম লায়লা ইয়াসমিন লিপি। মইনুল হক তাদের শান্তিনগরের বাসায় মনজিলের মা সাদিয়া পারভীন কাজলের গায়ে কোরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যা করেন। মনজিলের মায়ের মৃত্যুর পর প্রেমিকা লায়লা ইয়াসমিন লিপিকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন মইনুল। শান্তিনগরের এই ফ্ল্যাটটি ছিল মনজিল, ইয়াসিন এবং ফারুক মিয়ার ছেলে একেএম নেওয়াজের নামে যৌথ মালিকানার। ওই ফ্ল্যাটে মনজিলের মা ও মনজিলকে নিয়ে প্রথমে বসবাস করতেন মইনুল। দ্বিতীয় বিয়ের পর প্রথম ছেলে মনজিল ও ২য় স্ত্রী লায়লা ইয়াসমিন এবং তার সন্তান ইয়াসিনকে নিয়ে সেখানে থাকতেন তিনি। ইয়াসিনের বয়স যখন ১২/১৩ বছর তখন মনজিলের বাবা ফ্ল্যাটটি ইয়াসিন ও মনজিলের নামে দলিল করিয়ে গোপনে বিক্রি করে দেন। ভাই ফারুক মিয়া তখন ফ্ল্যাট বিক্রির টাকা থেকে তার ছেলে নেওয়াজের অংশ দাবি করেন। এতে অসন্তুষ্ট হয়ে মনজিল ও মনজিলের বাবা ফারুক মিয়াকে মাদকাসক্ত বলে প্রচার করেন এবং বাড্ডায় সেতু নামক একটি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ২ মাস ২১ দিন আটকে রাখেন।
তিনি বলেন, ফারুক মিয়ার লন্ডন প্রবাসী ছেলে নেওয়াজ পরে তাকে উদ্ধার করেন। এ বিষয়ে ফারুক মিয়া কোনো মামলা দায়ের করেননি। তবে মনজিলের বাবার মৃত্যুর পর সম্পত্তি বাগাতে ও আগের লাঞ্ছনার শোধ তুলতে ফারুক মিয়া ইয়াসিন ও ভাড়াটে তিন খুনিকে দিয়ে মনজিলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে মামলাটির গোপনীয় তদন্ত ও সাক্ষ্য প্রমাণে জানা যায়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মনজিল তার বাবার মৃত্যুর পর মৃত মায়ের স্বর্ণালঙ্কার ফিরে পেতে সৎ মা লায়লা ইয়াসমিন লিপিকে চাপ দেয়।
লিপি মনজিলকে জানায়, স্বর্ণালংকার তার ভাই আবু ইউসুফ নয়নের কাছে আছে। আবু ইউসুফ নয়ন গহনাগুলো ফেরত না দিলেমনজিল রাজারবাগের বাসায় আবু ইউসুফ নয়নকে লাঞ্ছিত করে। এরপরই মূলত শুরু হয় মনজিল হত্যার পরিকল্পনা। ইয়াসিন তার সৎ ভাই মনজিলকে হত্যার পরিকল্পনার বিষয়ে মামা আবু ইউসুফের সঙ্গে পরামর্শ করলে তিনি সম্মতি দেন এবং হত্যার কাজে খরচ করার জন্য ইয়াসিনকে ২০ হাজার টাকাও দেন। এরপর খুনের পরিকল্পনা শুরু করে ইয়াসিন হক। মা লিপি, মামা আবু ইউসুফ এবং মামলার বাদী চাচা ফারুক মিয়ার সাথে পরামর্শ করে খুনের আগের দিন ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর ভাড়াটে তিন খুনি ইয়াসিন হকের বনশ্রীর পৈত্রিক ফ্ল্যাটে রাত্রিযাপন করেন। সেখানে গোপন বৈঠক হয় এবং ৫ লাখ টাকায় খুনের চুক্তি হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।