পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দফায় দফায় ভূমিকম্প হয়েছে সিলেটে। এনিয়ে আতঙ্কের শেষ নেই। এ অবস্থার মধ্যে গঠন করা হয় বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে জাতীয় কমিটি। সেই কমিটি সিলেটে এসে পৌছেন গতকাল রোববার। কমিটির বিশেষজ্ঞরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন সিলেটের ভূমিকম্প মানবসৃষ্ট নয়, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক।
ঢাকা থেকে আসা বিশেষজ্ঞ দলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে, এমন অভিমত জানিয়েছেন সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী।
সিলেটে ভূমিকম্পের কারণ অনুসন্ধানে আসা জাতীয় কমিটির সদস্যরা সিলেট ও আশপাশ এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সম্পর্কিত বিস্তারিত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেবেন তদন্ত টিম। এছাড়া সিলেটে আসা পাঁচ সদস্যের ওই বিশেষজ্ঞ দল সকালে গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ড পরিদর্শন করেন। এরপর তারা সিলেট আবহাওয়া অফিসে সকাল সাড়ে ১১টায় এসে পৌঁছেন। প্রায় ১ ঘন্টা সেখানে অবস্থান করে ভূমিকম্পকালীন সময়ের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। পরে তারা সর্বশেষ ৭ জুন হওয়া ভূমিকম্পে ফাটল ধরা বন্দরবাজারস্থ রাজা জিসি হাই স্কুলের কামরান ভবনটিও পরিদর্শন করেন। এরপর ঢাকার উদ্দ্যেশে রওয়ানা দেন জাতীয় কমিটির এই বিশেষজ্ঞ টিম।
ভূমিকম্পের কারণ অনুসন্ধানে সিলেটে আসা দলটির নেতৃত্ব দেন পেট্রোবাংলার পরিচালক (প্রোডাক্ট শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট) প্রকৌশলী মো. শাহীনুর ইসলাম। এছাড়াও তদন্ত কমিটিতে ছিলেন বাপেক্সের ১ জন জিএম পর্যায়ের কর্মকর্তা, পেট্রোবাংলার ১ জন জিএম পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই জন প্রফেসর। অপরদিকে, অধিকতর তদন্তে ও ভূমিকম্পের আগে পরে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের একটি দল শিগগিরই সিলেটে আসছেন।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিলেটে ভূমিকম্প হলে উৎপত্তিস্থল সাধারণত ডাউকি ফল্টের আশপাশেই হয়। কিন্তু এবার নতুন এক উৎপত্তিস্থল তাই শঙ্কায় ফেলছে নতুন বিপদের। তাদের মতে সিলেটে দীর্ঘকাল ধরে নিস্ক্রিয় থাকা কোনো ফল্ট লাইন এখন সক্রিয় হয়ে ওঠার শঙ্কা রয়েছে। সেরকম কিছু হলে ভূমিকম্পে সিলেটে নেমে আসতে পারে বিপর্যয়। তবে নতুন ফল্ট লাইনের সক্রিয় হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে প্রয়োজন পরীক্ষা নিরীক্ষার।
এদিকে, নগরীর প্রায় ৪২ হাজার ভবন পরীক্ষা নিরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে সিলেটে সিটি করপোরেশন। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে পর্যবেক্ষণ। পরীক্ষা নিরীক্ষায় ৭-৮ মাস সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এনভায়রনমেন্টাল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম। এছাড়া শাবির বিশেষজ্ঞ দুই টিম নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট পরির্দশন করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতামতের পর মার্কেট খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে সিসিক এমন তথ্য জানিয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংস্কারে সক্ষমতা না বাড়লে ভেঙে ফেলা হবে বলেও জানান তিনি।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এনভায়রনমেন্টাল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম এ বিষয়ে বলেন, ছোট ছোট ফল্ট অনেক জায়গায় থাকতে পারে, অনেক ফল্ট তো আবিষ্কারই হয়নি। ফেনীতে একটা ফল্ট লাইন নিস্ক্রিয় ছিল দীর্ঘ সময়। কিন্তু তিন-চার বছর আগে পরীক্ষায় ধরা পড়ে, সক্রিয় হয়ে উঠেছে ওই ফল্ট লাইন। সিলেটেও সেরকম হতে পারে। তিনি বলেন, নিশ্চিত না হলেও বড় শঙ্কা আছে, সিলেটে এখন এমন কিছু ফল্ট লাইন পাওয়া যাবে, যেগুলো আগে নিস্ক্রিয় ছিল, কিন্তু এখন হয়ে উঠেছে সক্রিয়। সক্রিয় হয়ে ওঠা ফল্ট লাইনের ক্র্যাক যদি বাড়তে থাকে, তবে তা আতঙ্কের বিষয় বলেও মন্তব্য তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।