পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে নতুন দরিদ্রদের স্বীকৃতি নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা। তারা বলেছেন, চলমান করোনার প্রভাবে দেশের অনেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার আরো নিচে চলে গেছে। শ্রমিক ও কর্মজীবী মানুষ কাজ হারিয়ে বেকার জীবনযাপন করছে। শুধু তাই নয় করোনার প্রভাবে চাকরি হারানো, আয় কমে যাওয়া, ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ নানা কারণে শহরের অনেক মানুষ গ্রামে ফিরছে, অভিবাসীরা তাদের চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরছেন।
এছাড়া সম্ভাব্য অভিবাসীদের অভিবাসন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। অথচ ঘোষিত প্রস্তাবিত বাজেটে সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ বাড়ালেও করোনার কারণে নতুন যুক্ত হওয়া দরিদ্ররা এতে দৃশ্যমান নয়। গতকাল বুধবার ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘বাজেট ২০২১-২২ : করোনাকালে জীবন ও জীবিকা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এমন অভিমত তুলে ধরেন।
এ সময় বর্তমান সরকার সমর্থক বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করতে না পারলে বাংলাদেশের নড়বড়ে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ঘটবে না। গ্রামীণ অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ভেঙে পড়বে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সবাইকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়ন করতে হবে।
খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়েছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। এ ছাড়াও আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, মহসিন আলী। ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়েমা হক বিদিশা।
আলোচনায় অংশ নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এবারের বাজেটে দারিদ্র্য ও ন্যায়বিচারকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যেখানে নাগরিক হিসেবে জনমানুষের চাহিদার প্রতিফলন ঘটেছে। তবে জীবনচক্রের কথা বিবেচনায় নিয়ে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ঢেলে সাজানো প্রয়োজন ছিল।
ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, করোনা অতিমারি জীবন ও জীবিকার উপর মারাত্মক আঘাত হেনেছে। ফলে নতুন দারিদ্র্য বেড়েছে এবং দারিদ্র্যের হার তিন দশক আগের হারে পৌঁছে গেছে। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং যথাযথ ব্যবস্থার অভাবে যেকোনো দুর্যোগে আমাদের দারিদ্র্যের সংখ্যা বেড়ে যায়। জাতীয় খানাভিত্তিক তথ্যভাণ্ডারের অভাবে সঠিক জনগোষ্ঠীর কাছে সাহায্য যায় না।
তিনি আরো বলেন, এবারের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বরাদ্দ বাড়ানো হলেও মাথাপিছু বরাদ্দ বাড়েনি। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে আগের বছরের চেয়ে বরাদ্দ ১৩ শতাংশ বেড়েছে। নতুন ১৪ লাখ মানুষকে এর আওতায় আনা হয়েছে। নগর দরিদ্রসহ আড়াই কোটি নতুন দরিদ্রের জন্য তা অপ্রতুল। তার ওপর বরাদ্দকৃত অর্থের বেশিরভাগ অংশ সরকারি কর্মচারীদের পেনশন, সঞ্চয়পত্রের সুদ প্রভৃতি প্রদানে ব্যয় হবে।
ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এবারের বাজেটে সরকার স্বাস্থ্য, কৃষি, কর্মসংস্থান এবং স্টিমুলাস প্যাকেজকে মূল বিবেচনায় নিয়েছে। তবে বেশকিছু বরাদ্দের ক্ষেত্রে রিস্ট্রাকচারিং হলে ভালো হতো। যেমন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ছোট ছোট অনেক উপখাতের বরাদ্দ কমানো হয়েছে,ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্যও পর্যাপ্ত বরাদ্দের সুযোগ নেই।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক ড. সায়েমা হক বিদিশা বলেন, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এই করোনাকালে নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য অধিকার ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। অনেক মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়েছে। মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু হার বৃদ্ধিসহ সার্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। দেশে ২৪.৩ % মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। আর দারিদ্র্যসীমার কাছাকাছি যে মানুষগুলো থাকে তারা যেকোনো দুর্যোগের কবলে পড়লেই দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যায়। দেশের বিভিন্ন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতগুলোয় নতুন করে দারিদ্র্য ঝুঁঁকি বেড়েছে।
তিনি বলেন, বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বরাদ্দ বেড়েছে। তবে মাথাপিছু বরাদ্দ বাড়েনি। জীবনচক্রের কথা চিন্তা করে কর্মসূচি সাজানো প্রয়োজন। সরকারের খাদ্য এবং কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য ১০ বছরের কর ছাড়ের বিষয়টি ইতিবাচক। যেখানে পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান তৈরির একটা প্রচেষ্টা রয়েছে। তবে এ সুবিধাগুলো কতটুকু কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।