Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বজ্রপাতে পাঁচ জেলায় ১৫ জনের মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় বজ্রপাতে গতকাল মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও অন্তত সাতজন। এর মধ্যে সুনামগঞ্জে মারা গেছে ছয়জন। এছাড়া টাঙ্গাইলে ৩ জন, কিশোরগঞ্জ ও দিনাজপুরে ২ জন করে এবং মানিকগঞ্জ ও মেহেরপুরে ১ জন করে মারা যান।
নিহতদের কেউ কেউ মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতের শিকার হন। কেউ কেউ আবার বাড়ির উঠান বা বাড়িতেই বজ্রপাতের শিকার হন। দুই দিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় দমকা হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের ঘটনা ঘটছে। এই দুর্যোগে সোমবারও দেশের বিভিন্ন এলাকায় বজ্রপাতে অন্তত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) আবু তালেব বলেন, বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা এতই বাড়ছে যে একে দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সরকার। আইন সংশোধন করে বজ্রপাতে নিহতদের স্বজন এবং আহতদেরকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।
সুনামগঞ্জে তিন স্থানে ৬ জনের মৃত্যু
সুনামগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জের বজ্রপাতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো পাঁচ জন। মঙ্গলবার সকালে ও দুপুরে দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় বজ্রপাতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, দিরাই উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের মাটিয়াপুর গ্রামের কয়েকজন নৌকাযোগে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার আখতারপাড়া বাজারে বাঁশ কেনার জন্য যাচ্ছিলেন। সাকিতপুর গ্রামের হাওরে পৌঁছা মাত্র বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে সবাই আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। এরা হলেন, উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের মাটিয়াপুর গ্রামের শামীম মিয়া ও তহুর মিয়া।
একই ইউনিয়নের টুকচানপুর গ্রামের মাঠে খেলতে গিয়ে বজ্রপাতে শিশু সেমরান হোসেন গুরুতর আহত হয়। সেখান থেকে উদ্ধার করে তাকে দিরাই হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া শাল্লা উপজেলায় মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে তিন কিশোরের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দুপুরে সদর ইউনিয়নের শ্রীহাইল গ্রাম পার্শ্ববর্তী বেরামনা হাওরে এই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, হৃদয় মিয়া, ইমন মিয়া ও সাইমুল ইসলাম। তারা তিন জনই উপজেলার শ্রীহাইল গ্রামের বাসিন্দা।
টাঙ্গাইলে বাবা ও দুই ছেলের মৃত্যু
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলের মধুপুরে বজ্রপাতে দুই ছেলে এবং তাদের বাবার মৃত্যু হয়েছে। ভোরে মধুপুর বনাঞ্চলের মাগন্তিনগর পচারচনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় নিখিলের স্ত্রী জনতা সিমসাংও আহত হন। নিহতরা হলেন পরিবারের কর্তা নিখিল হাজং এবং তার ছেলে জর্জ সিমসাং ও লোটন সিমসাং। নিখিলের স্ত্রী জনতা সিমসাংয়ের শরীরও ঝলসে যায়। তাকে মধুপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউজিন নকরেক জানান, ভোরে বৃষ্টির সময় নিখিলের বসত ঘরের ওপর বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নিখিল ও তার দুই ছেলের। মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকরাতা শফিকুল ইসলাম জানান, ওই গ্রামের নিখিল ও তার পরিবারের সদস্যরা ভোরবেলা বাইরে যাচ্ছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই বাবা ও দুই ছেলে মারা যান।
কিশোরগঞ্জে ছেলে ও মায়ের মৃত্যু
কিশোরগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের গুজাদিয়া ইউনিয়নের করমসী গ্রামে বজ্রপাতে মা ললিতা ও তার ছেলে রিমনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন মেয়ে। করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির রাব্বানী বলেন, সকাল ১০টার দিকে কৃষক মারুফ মিয়ার বাড়িতে বজ্রপাত হয়। এ সময় ঘটনাস্থলেই মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়। আহত হয় মেয়ে বিউটি। তাকে তাড়াইল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দিনাজপুরে দুই কৃষকের মৃত্যু
দিনাজপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, সকালে খানসামা উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের ছাতিয়ানগর গ্রামে জমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মারা যান মতি চন্দ্র রায়। আঙ্গারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা আহম্মেদ শাহ জানান, ধানক্ষেতে ইঁদুর মারার সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মারা যান কৃষক মতি।
দুপুরে জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার এলুয়াড়ি ইউনিয়নের ভেড়ম গ্রাামের বাসিন্দা সজমুদ্দিনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন বজ্রাঘাতে মারা যান। তিনিও জমিতে কাজ করছিলেন। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় রুদ্রানী কমিউিনিটি সেন্টারে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মেহেরপুরে সেনা সদস্যের স্ত্রীর মৃত্যু
মেহেরপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, জেলার গাংনীর হিন্দা গ্রামে বজ্রপাতে মারা গেছেন ববিতা খাতুন। তিনি সেনা সদস্য ইসমাইল হোসেন ওরফে রাসেলের স্ত্রী। সোমবার রাত ১০টার দিকে এ বজ্রপাত হয়। স্থানীয়রা জানায়, ইসমাইল হোসেনের বাড়ির পাশের সজনী গাছে বিকট শব্দে বজ্রপাত হয়। এ সময় গুরুতর আহত হন ববিতা। হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার রাইল্লা গ্রামে মাইজ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। স্থানীয়রা জানান, মাইজ উদ্দিন গরু নিয়ে মাঠে কাজ করছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হয় তার ওপর। এই আঘাতে মারা গেছে গরুটিও।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বজ্রপাতে পাঁচ জেলায় ১৫ জনের মৃত্যু
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ