পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অনুমোদনহীন ক্যাম্পাস, প্রোগ্রাম চালু, মামলা রয়েছে এমন ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এর মধ্যে ৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অবৈধ ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ৩ বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি করছে, ৩টিতে দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে মালিকানার দ্বন্দ্ব। এছাড়া শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত, কার্যক্রম শুরুর অনুমতি না থাকলেও শিক্ষার্থী ভর্তি করে পাঠদান করছে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। এর কয়েকটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত কমিটি গঠনও করেছে ইউজিসি।
এজন্য অনুমোদনহীন ভবন/ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, অনুমোদন নেই এমন প্রোগ্রাম চালু এবং মামলা-মোকদ্দমাসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আছে এরকম ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাও প্রকাশ করেছে কমিশন। শিক্ষার্থী, অভিভাবক বা জনসাধারণের সচেতনতার জন্য ইউজিসির ওয়েবসাইটে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে লাল তারকা চিহ্ন দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রোগ্রাম যাচাই-বাছাই করে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন ইউজিসি’র দায়িত্বপ্রাপ্তরা। ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, উচ্চশিক্ষায় ভর্তির এই সময়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সতর্ক করতেই সম্প্রতি ওয়েবসাইটের তালিকাটি হালনাগাদ করা হয়েছে। সেখানে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে লাল তারকা চিহ্ন প্রদান করা হয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে ভর্তি হতে হবে। পরে কোনো সমস্যায় পড়লে দায়ভার নেবে না ইউজিসি। দেশে বর্তমানে ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন আছে।
ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যা রয়েছে তা সম্প্রতি আপডেট করে ইউজিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে লাল তারকা চিহ্ন প্রদান করা হয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে অননুমোদিত ক্যাম্পাস/প্রোগ্রামসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে।
অননুমোদিত ভবন/ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে: ইউজিসির দেওয়া তালিকা অনুযায়ী অবৈধ ভবনে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি এবং নর্দান ইউনিভার্সিটি।
৩ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুমোদনহীন প্রোগ্রাম: নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি প্রোগ্রামের অনুমোদন নিয়ে সেই প্রোগ্রামের আড়ালে আরও ১০টি প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে। যা সম্পূর্ণ অবৈধ বলে জানিয়েছে ইউজিসি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অননুমোদিত প্রোগ্রামগুলো হলো- বিবিএ ইন জেনারেল, বিবিএ ইন ফিন্যান্স, বিবিএ ইন এইচআরএম, বিবিএ ইন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস, বিবিএ ইন মার্কেটিং, বিবিএ ইন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম, বিবিএ ইন অ্যাকাউন্টিং, বিবিএ ইন ইকোনমিক্স, বিবিএ ইন এন্টারপ্রেনিউরশিপ এবং বিবিএ ইন সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট।
গণবিশ্ববিদ্যালয়ে অনুমোদন ছাড়া পরিচালিত বিবিএ, পরিবেশ বিজ্ঞান, এমবিবিএস, বিডিএস এবং সাইকো থেরাপি প্রোগ্রামগুলো হাইকোর্ট ডিভিশন ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী ৬ মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দেন। এ স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়টি এসব প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
এছাড়া চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ইন কুরআনিক সায়েন্স অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ প্রোগ্রামটি অননুমোদিতভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে মালিকানা দ্বন্দ্ব: ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ব্রিটেনিয়া ইউনিভার্সিটি, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে মালিকানা দ্বন্দ্ব রয়েছে।
ইবাইস ইউনিভার্সিটির দুজন মালিক একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এরমধ্যে একটি গ্রুপ ধানমন্ডি, অন্য গ্রুপ উত্তরায় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। একসময় কোর্টের রায়ে ধানমন্ডি বাড়ি নম্বর-২১/এ, সড়ক নম্বর-১৬ (পুরাতন-২৭), ধানমন্ডি, ঢাকা-১২০৯ ঠিকানাটি কমিশনের ওয়েব সাইটে আপলোড করা হয়েছিল। ওই স্থগিতাদেশের কার্যকারিতা ভ্যাকেট হয়ে যাওয়ায় ইবাইস ইউনিভার্সিটির ওই ঠিকানা কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে বাতিল করা হয়। তাই বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কোনো ঠিকানা নেই।
দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লায় শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় শুরুর অনুমতি দেওয়া হয়নি। এছাড়া শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অনুমতি পায়নি ৬ বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলো হচ্ছে- রূপায়ন এ কে এম শামসুজ্জোহা বিশ্ববিদ্যালয়, আহসানিয়া মিশন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খান বাহাদুর আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহ মখদুম ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটি, মাইক্রোল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং আর টি এম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি।
সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংসদে বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২০ এর ধারা ১৩ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকূলে প্রদত্ত সাময়িক সনদে উল্লেখিত স্থানে/শহরের বাইরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা পরিচালনার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু রাজধানীতে বেসরকারি আটটি বিশ্ববিদ্যালয় অবৈধ ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ব্যবস্থা গ্রহণের প্রসঙ্গ টেনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ এবং নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ পরিদর্শনপূর্বক তদন্ত করার জন্য অতি সম্প্রতি ইউজিসি কমিটি গঠন করেছে। কমিটির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কমিটি গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া উত্তরা ও বনানীতে ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি অবৈধ ক্যাম্পাস এবং উত্তরায় দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার একটি অবৈধ শাখা রয়েছে বলে জানান তিনি।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।