পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বর্ষাকাল আরও এক সপ্তাহ সামনে থাকতেই ভাসছে চট্টগ্রাম মহানগরী। গতকাল রোববার কোমর-সমান পানিতে ডুবে গেছে অনেক এলাকা। সিডিএ এভিনিউসহ প্রধান সড়কগুলোতে ঢেউ বয়ে যায়। নগরবাসী কেউ বলছেন ‘উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছি’! কেউ বলছেন চসিক-চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)-ওয়াসাসহ সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের পরিবর্তে ঠেলাঠেলিতে ‘অপরিকল্পিত ও এলোপাতাড়ি উন্নয়নের উল্টো-জোয়ারে ভাসছে চাটগাঁবাসী! পতেঙ্গা আবহাওয়া দফতর জানায়, গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৯৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বর্ষণের সাথে জোয়ারে কাদা-পানিতে ভাসছে বসতঘর, দোকানপাট, গুদাম, আড়ত, বিভিন্ন ধরনের কল-কারখানা। সড়ক, রাস্তাঘাট, অলিগলি, খাল-ছরা, নালা-নর্দমা একাকার। চট্টগ্রাম নগরী ও আশপাশের বিশেষ করে নিচু এলাকাগুলোতে পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভিজে বিনষ্ট হয়েছে কোটি কোটি টাকার মজুদ পণ্যসামগ্রী, শিল্পের কাঁচামাল। চরম জনদুর্ভোগে সবখানে মানুষের ক্ষোভ-অসন্তোষ প্রকাশ পাচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের বাসাবাড়ি, দোকানপাটের কাদা-পানি-বালি ও আবর্জনা সরাতে গিয়েই এলাকাবাসীর নাভিশ^াস। সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেক এলাকায় মানুষ পানিবন্দী। সবার মুখে মুখে ক্ষোভ-উদ্বেগের সঙ্গে প্রশ্ন, সামনে ভরা বর্ষায় কী দশা হবে!
গতকাল ভোর থেকেই চট্টগ্রামের আকাশ ঘনকালো মেঘে ছেয়ে যায়। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ঘন ঘন বিকট বজ্রপাত ও দমকা হাওয়ার সাথে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে। দুপুর নাগাদ বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে বন্দরনগরীর অনেক এলাকায় পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ঘড়ির কাঁটায় দিনে-রাতে জনদুর্ভোগ ক্রমে বেড়েই চলে। দমকা-ঝড়ো হাওয়াসহ বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রফতানি মালামাল ডেলিভারি পরিবহন এবং বহির্নোঙরে লাইটারিং খালাস কাজ ব্যাহত হচ্ছে। সমুদ্র উপকূল উত্তাল রয়েছে। করোনাকালে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নগরীর আগ্রাবাদ, চাক্তাই খাতুনগঞ্জসহ সর্বত্র ব্যবসা-বাণিজ্য থমকে যায়।
আগেই পাহাড়খেকো ভূমিদস্যুরা কেটে-খুঁড়ে ফেলেছে অনেক স্থানে পাহাড়-টিলা। ভারী বর্ষণের সাথে পাহাড়-টিলা থেকে ধুয়ে আসা বালি-মাটি ও কাদা-পানিতে চট্টগ্রাম নগরীর অনেক স্থানে সড়ক, রাস্তাঘাট, অলিগলি সয়লাব। যানবাহনের অভাবে কর্মজীবী মানুষের ভোগান্তি ছিল অবর্র্ণনীয়। নগরীর মুরাদপুর, ষোলশহর, ২নং গেইট, পাঁচলাইশ, কাতালগঞ্জ, শোলকবহর, চকবাজার, বাকলিয়া, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, চান্দগাঁও, বহদ্দারহাট, নাসিরাবাদ, আগ্রাবাদ, হালিশহর, পতেঙ্গা, সাগরিকা, বন্দর, কাট্টলীসহ অনেক এলাকা প্লাবিত হয়। পানিতে থৈ থৈ করছে এসব জায়গা। কাদা-পানির সঙ্গে ময়লা-আবর্জনা একাকার।
আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা যায়, চট্টগ্রাম অঞ্চলসহ দেশের অনেক জেলায় বজ্রপাত, বজ্রবৃষ্টি, দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। পূবালী বায়ু এবং পশ্চিমা লঘুচাপ ও বায়ুর সংযোগে বৃষ্টি হচ্ছে। বঙ্গোপসাগর হয়ে প্রচুর মেঘমালা বাংলাদেশে বিস্তার লাভ করেছে। তাছাড়া দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) মায়ানমারের ইয়াঙ্গুন (রেঙ্গুন) উপকূল অতিক্রম করছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় টেকনাফ উপকূল বরাবর এগিয়ে আসতে পারে।
আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহের জন্য পূর্বাভাসে পতেঙ্গা আবহাওয়া দপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানান, অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ অধিকাংশ জায়গায় মাঝারি থেকে মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়ায় সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে সতর্কতা নেই। তবে চট্টগ্রামের নদী বন্দরে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।