পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক ক্ষমতাশালীরা পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারাই পরিবেশ রক্ষা সংক্রান্ত রায় বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। প্রশাসনও থমকে যাচ্ছে। বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এক সেমিনারে এ অভিমত ব্যক্ত করেন আলোচকরা। গতকাল শনিবার পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পীস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) ভার্চুয়ালি এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংস্থার প্রেসিডেন্ট সুপ্রিম কোর্ট বারের অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
এতে অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরি, এখলাছ উদ্দিন ভুইয়া, মো. জাহাংগির হোসেন, মাহবুবুল ইসলাম, ইমরুল কাওসার, রিপন বাড়ৈ, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান, সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিউল আলম, কে এম সবুজ, অ্যাডভোকেট মামুন আলিম, মো. তাজউদ্দিন, রফিকুল ইসলাম, জাহিদুল হক প্রমুখ ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
সভায় আলোচকরা বলেন, যারা প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি সাধন করছেন তাদের অধিকাংশই বিত্তশাশী, প্রভাবশালী, রাজনৈতিক ক্ষমতাশালী। অনেক ক্ষেত্রে পরিবেশ বিধ্বংসী কাজের সাথে এবং রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরাও জড়িত। এ কারণে প্রশাসনও থমকে যায়। এর থেকে উত্তরণের জন্য সংবিধানের আর্টিকেল ১০৮ একমাত্র হাতিয়ার হলেও তাও অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়েছে। রায় বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে কয়েকদিন আগে বর্তমান প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে।
তাছাড়াও আমরা আইনজীবীরা প্রতিনিয়ত পরিবেশের বহু রায় হাতে নিয়ে ঘুরতে থাকি কিন্তু আগের মত আদালত অবমাননার হাতিয়ারকে কার্যকর হতে দেখি না এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে প্রাকটিসের প্রথাও অনুসরণ করা হয় না। সভায় বক্তারা পরিবেশের বিভিন্ন ক্ষতিসাধন ও আইন অমান্য করার বিষয় তুলে ধরে সরকারকে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করে পরিবেশের ক্ষতি পুনঃরুদ্ধারে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান। একইসঙ্গে পরিবেশ সংক্রান্ত শত শত জনস্বার্থের মামলায় আদালতের রায় ও নির্দেশনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে মহামারি করোনায় মানবজাতি যখন ভয়াবহ দুঃসময় অতিবাহিত করছে সেরকম সময় বিশ^ পরিবেশ দিবস পালন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে বিশ^ব্যাপী অপরিকল্পিত উন্নয়ন এবং ইকোসিস্টেমের ওপর বিভিন্ন প্রকার ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে পরিবেশের যে মারাত্বক ক্ষতি সাধন করা হয়েছে তা পুনঃরুদ্ধার ছাড়া মানবজাতি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে না। সে প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ যথার্থই এ বছরের বিশ^ পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছেন ‘ইকোসিস্টেম পুনঃরুদ্ধার’।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিশ^ পরিবেশ দিবস আরও গুরুত্ব বহন করে। খাল, নদী, বিল-পাহাড়, পর্বত, বন জঙ্গল, পশু পাখি, প্রকৃতির এমন সমাহার আজ হারিয়ে যাচ্ছে। বিশে^ বায়ু দূষণে আমাদের রাজধানী ঢাকা প্রথম স্থানে থাকছে। অজ্ঞতা, অসতর্কতা এবং অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে সুন্দর ও প্রাকৃতিক পরিবেশে ভরপুর বাংলাদেশ আজ অনেকটা খুঁজে পাওয়া যায় না।
সভায় ৯ দফা দাবি পেশ করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছেÑ (১) পরিবেশ বিধ্বংসী কাজের সাথে জড়িত যে কোন সংসদ সদস্য বা অন্য যে কোন জনপ্রতিনিধিদের পদ থেকে অপসারণ ও নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার আইন প্রণয়ন করতে হবে। (২) জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে শক্তিশালী করে তাকে ক্ষমতায়ন এবং কমিশনকে কেবিনেটের আওতায় পরিচালনা করতে হবে। (৩) সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, জেলা, উপজেলায় প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে (প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যতীত) সংশ্লিষ্ট এলাকার কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত দায়বদ্ধ করার আইন পাস করতে হবে। (৪) পরিবেশ রক্ষায় কাজ করা পরিবেশবাদী, আইনজীবী, সাংবাদিক এবং সকল ব্যক্তির সুরক্ষা প্রশাসনিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে। (৫) পরিবেশ অধিদফতরের লোকবল বৃদ্ধি, সকল জেলায় পর্যাপ্ত লোকবলসহ অফিস স্থাপন এবং পরিবেশ রক্ষার কাজে প্রয়োজনীয় আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। (৬) নদীর পাশে যে কোনো প্রজেক্ট বাস্তবায়িত করতে হলে আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে সিএস রেকর্ড অনুসারে নদীর সীমানা নির্ধারণ করে তা সংরক্ষণ করতে হবে। (৭) পরিবেশের ক্ষতি করার কারণে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা বা সাজাপ্রাপ্ত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান তাৎক্ষণিক বন্ধ ঘোষণার আইন প্রণয়ন করতে হবে। (৮) পরিবেশ সংক্রান্ত সকল বিভাগে দক্ষ, সৎ, কমিটেড এবং পরিবেশ নিয়ে পড়াশোনা করা ব্যক্তিকে নিয়োগ করতে হবে এবং (৯) পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বাজেট ৩ গুণ বাড়িয়ে পরিবেশ রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।