Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অতিবৃষ্টিতে প্লাবিত চট্টগ্রাম

১৬১ মিলিমিটার বর্ষণ বসতঘর দোকানপাট গুদামে বালি-মাটি-পানি

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০২১, ১২:০০ এএম

স্বস্তির চেয়ে বেশিই জনদুর্ভোগ। মৌসুমের প্রথম ভারী বর্ষণে গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগরী ও আশপাশের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। থেমে থেমে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ মাঝারি ও ভারী বর্ষণ, সেই সাথে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। প্রত্যাশিত বর্ষণে ভ্যাপসা গরম কেটে গেছে। পতেঙ্গা আবহাওয়া দপ্তর জানায়, গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১৬১ মিলিমিটার অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা দেশের সর্বোচ্চ বর্ষণের রেকর্ড।

প্রবল বর্ষণের সাথে সামুদ্রিক জোয়ারে তলিয়ে গেছে বন্দরনগরীর নিচু এলাকাগুলো। কাদাপানি ও ময়লা-আবর্জনায় সয়লাব সড়ক, রাস্তাঘাট, অলিগলি, বসতঘর, দোকানপাট, গুদাম, আড়ত। মজুদ প্রচুর মালামাল ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এরমধ্যে রয়েছে বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল ও নিত্যপণ্য।

মহানগরী ও সংলগ্ন এলাকায় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা পাহাড়-টিলাগুলো অবৈধভাবে কেটে-খুঁড়ে ফেলেছে। সেসব পাহাড়-ধুয়ে আসা বালি ও মাটি ঢলের পানির সাথে শহরময় ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে নগরীর খাল-ছরা, নালা-নর্দমাগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। মহানগরীর প্রধান সড়ক সিডিএ এভিনিউ এবং অন্যান্য সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি থৈ থৈ করছে। সোমবার মধ্যরাত থেকে চট্টগ্রামে দমকা বাতাস ও বজ্রসহ থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে নগরীর মুরাদপুর, ষোলশহর, শোলকবহর, চকবাজার, বাকলিয়া, চান্দগাঁও, চাক্তাই, আছদগঞ্জ, রাজাখালী, কাতালগঞ্জ, বহদ্দারহাট, পাঁচলাইশ, প্রবর্তক মোড়, আগ্রাবাদ, সিডিএ, হালিশহর, বন্দর, সাগরিকা, পতেঙ্গা, কাট্টলীসহ অনেক এলাকা। নিচু এলাকাগুলোতে দোকানপাট, গুদাম, বাড়িঘরে কাদা-পানি প্রবেশের ফলে বিড়ম্বনার শেষ নেই। কাদা-মাটি-বালি ও ময়লা সরাতে গিয়েই নাকাল এলাকাবাসী।

অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের কারণে মহানগরীর ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রফতানি পণ্য ডেলিভারি পরিবহনে ভাটা পড়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি-বার্থে প্রায় স্বাভাবিক কাজ চলছে। তবে ঝড়ো হাওয়ার সাথে বৃষ্টিতে বহির্নোঙরে আমদানি মালামাল লাইটারিং খালাস, নৌপথে পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, পূবালী বায়ুর সাথে পশ্চিমা বায়ুর সংযোগ ঘটেছে। সেই সাথে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর মেঘমালা বাংলাদেশের দিকে বিস্তার লাভ করেছে। এরফলে দীর্ঘ সময়ের খরা-অনাবৃষ্টি পরিস্থিতি কেটে গিয়ে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে কাক্সিক্ষত বৃষ্টিপাতের আবহ তৈরি হয়েছে।

আজ বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও ও পাশর্^বর্তী এলাকাসমূহের জন্য আবহাওয়া পূর্বাভাসে পতেঙ্গা আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ^জিত চৌধুরী জানান, আকাশ মেঘলা থেকে সাময়িক মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী থেকে মাঝারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে থেকে ঘণ্টায় ৩৫ থেকে ৪৫ কিলোমিটার বেগে বয়ে যেতে পারে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে সতর্কতা নেই। চট্টগ্রামের নদী বন্দরের জন্য ২ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অতিবৃষ্টিতে প্লাবিত চট্টগ্রাম
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ