পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : অবশেষে আবারো নতুন করে আলোর মুখ দেখতে শুরু করছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পটি। এ লক্ষ্যে আগামীকাল সিভিল এভিয়েশন সদরদপ্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে জাপানের সাথে বিশেষজ্ঞ পরামর্শক নিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের এ প্রকল্পটির জন্য ১২০ কোটি টাকায় বিশেষজ্ঞ পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে জাপানের নিপ্পন কোই কোং লিমিটেডকে। যুগের চাহিদা পূরণ এবং আকাশ পথে বিশ্বের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত করতে সরকার এ প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ বিশ্বের অন্যতম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হবে “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর”। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান সফরের সাফল্যের একটি সুফল হলো এ বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য জাপানী পরামর্শক নিয়োগ। জানিয়েছেন বিমান মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা।
সিভিল এভিয়েশন সূত্র বলছে, দেশে বর্তমানে তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে। কিন্তু যুগের চাহিদা পূরণ ও দেশের সাথে বহির্বিশ্বে আকাশপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত করার পাশাপাশি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বৃহৎ জনগোষ্টীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে এ বিমানবন্দর নির্মাণের মধ্য দিয়ে।
সিভিল এভিয়েশন প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, পদ্মার ওপারে বঙ্গবন্ধুর নামে দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের সম্ভাব্য স্থানের জায়গা-জমি, যাচাই-বাছাই করতে জাপানের বিশেষজ্ঞ পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চারটি স্থানে প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। এর মধ্যে যে কোনো একটিকে চূড়ান্ত করে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এখন নতুন করে চারটি স্থান চিহ্নিত করে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। সেগুলো হচ্ছে মাদারীপুরের শিবচরের চরজানাজাত, ঢাকার দোহারের চরবিলাসপুর, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের কেয়াইন ও লতব্দি এলাকা। তবে জাপানের পরামর্শকদের প্রতিবেদন ও সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদ্মা নদীর দক্ষিণ পাড়ের কোন স্থানে বিমানবন্দরটি নির্মাণ হবে এমনটি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। চারটি স্থান নির্বাচনের বিষয়ে কার্যপত্রে বলা হয়েছে, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নিমিত্ত বেসামরিক পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকার সঙ্গে উত্তম যোগাযোগ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের বিষয়টি সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনপূর্বক স্থান নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়া হয়। উপযুক্ত স্থান নির্বাচনের লক্ষ্যে মোট ৯টি স্থান সরেজমিন পরিদর্শন করে ঢাকা থেকে দূরত্ব, যোগাযোগ ব্যবস্থা, জমির পর্যাপ্ততা, আন্তর্জাতিক রুট, সড়ক, রেল ও নদীপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভবিষ্যতে সম্প্রসারণের সম্ভাবনা, পুনর্বাসন, যাতায়াত খরচ ইত্যাদি বিবেচনা করে উপরোক্ত চারটি স্থান নির্বাচন করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যতগুলো আন্তর্জাতিক রুট রয়েছে তার সবগুলো দক্ষিণাঞ্চলের ওপর দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। দূরত্বের বিবেচনায়ও আন্তর্জাতিক বিমানসমূহের অবতরণের জন্য পদ্মার দক্ষিণপ্রান্ত উপযুক্ত স্থান। এখানে বিমানবন্দর স্থাপিত হলে এর পাশে এক লাখ একর খাস জমিতে একটি স্যাটেলাইট সিটি নির্মাণ সম্ভব হবে এবং এর দক্ষিণ-পূর্ব পাশে নরিয়ায় একটি আন্তর্জাতিক নৌ-কন্টেইনার টার্মিনাল স্থাপন করা যাবে।
সূত্র জানায়, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) আওতায় প্রথম প্রকল্প হিসেবে ২০১০ সালের আগস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পে নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। পরবর্তীতে পিপিপি থেকে সরে এসে নিজস্ব অর্থায়ন ও দাতা সংস্থার সহায়তায় দেশের সবচেয়ে বড় ও আধুনিক এ বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ ২০১৭ সালের মধ্যে শেষ হলে নিয়োগ দেয়া হবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এবং দ্রুত শেষ করা হবে টেন্ডার প্রক্রিয়া।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রকল্পের বিস্তারিত সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে এর আগে ১৯ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় দরপত্র আহ্বান করা হয়। বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীর স্বাক্ষরিত ওই দরপত্রে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসংবলিত আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান থেকে আগ্রহপত্র চাওয়া হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের জন্য প্রাক্কলিত বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৩৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়, দুটি ধাপে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে চারটি জায়গা থেকে যেকোনো একটি নির্বাচন করা এবং দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিত স্থানের বিস্তারিত সমীক্ষা (ডিএফএস) সম্পাদিত হবে। এ সমীক্ষার মেয়াদ ২০১৭ সালের জুনে শেষ হবে।
এর আগে বিভিন্ন সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন জানিয়েছিলেন, পদ্মার ওপারে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নামে দেশের বৃহত্তম বিমানবন্দর তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। চারটি স্থানের মধ্যে যেকোনো একটিকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ‘বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ নামে এই নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য আশ্বাস দেন। ঢাকা থেকে ৩০-৪০ কিলোমিটার দূরত্বের এলাকার মধ্যে এ বিমানবন্দর নির্মাণ করার কথা বলা হয়। তবে তার আগে অবশ্য ফিজিবিলিটি স্টাডি বা সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষাও করবে জাপান।
এছাড়া হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণে সহায়তা দিতে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে জাপান। ২০১৯ সালের মধ্যেই এর সুফল যাতে যাত্রীরা পেতে শুরু করেন সে লক্ষ্যেই কাজ করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।