পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পাল্টে যাবে চট্টগ্রামের যোগাযোগ : পর্যটনে নতুন আকর্ষণ
শফিউল আলম : বন্দরনগরী চট্টগ্রামের উপকণ্ঠে অবস্থিত ফৌজদারহাট-বায়েজিদ বাইপাস সড়কের নির্মাণকাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) পরিকল্পনা অনুসারে নতুন এই বাইপাস রোড নির্মাণ প্রকল্প সম্পন্ন হলে আমূল বদলে যাবে চট্টগ্রাম নগরী ও শহরতলীর বিস্তীর্ণ এলাকার বর্তমান যোগাযোগ ব্যবস্থার চিত্র।
চট্টগ্রাম নগর ও শহরতলীর নিত্যদিনের যানজটের চাপ অনেকাংশে কমানোর জন্য সহায়ক হবে ফৌজদারহাট-বায়েজিদ বাইপাস সড়ক। কেননা নগরীর উত্তর অংশের অধিকাংশ যানবাহন মূল মহানগরীর এলাকা এড়িয়ে স্বল্পতম সময়ে অনায়াসে আসা-যাওয়া করতে সক্ষম হবে। তাছাড়া পাহাড়-টিলাময় এলাকায় দৃষ্টিনন্দন এই বাইপাস রোডটি চট্টগ্রামের পর্যটন ও বিনোদনের নতুন আকর্ষণ হয়ে উঠবে।
সিডিএ’র নতুন ও চলমান ১৭২ কোটি ৪৯ লাখ ৩২ হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ফৌজদারহাট-বায়েজিদ বাইপাস সড়কটি হতে যাচ্ছে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১২০ ফুট চওড়া। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকু-ের ফৌজদারহাট থেকে মহানগরীর বায়েজিদ পয়েন্ট বরাবর মিলিত হবে এই বাইপাস রোড। আগামী দেড় বছরের মধ্যে এই বাইপাস সড়কের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী সিডিএ। পাহাড়-টিলার পাদদেশে উঁচুনিচু এলাকার মধ্য দিয়ে বাইপাস সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে পাহাড়-টিলার অপরূপ সৌন্দর্যের কোনো ক্ষতিসাধন না করে বরং পাহাড়-টিলার প্রাকৃতিক শোভা সুরক্ষার দিকটি গুরুত্ব দিয়েই সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
চট্টগ্রামের যানজট সমস্যা নিরসনসহ সামগ্রিক যোগাযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে ফৌজদারহাট-বায়েজিদ বাইপাস সড়ক নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে সিডিএ। চট্টগ্রাম মহানগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হিসেবে এই বাইপাস সড়কের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে এই বাইপাস সড়কের ৩০ শতাংশ নির্মাণ কাজ এগিয়েছে। আগামী ১৮ মাসের মধ্যেই ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ বাইপাস সড়কটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া সম্ভব হবে বলে সিডিএ আশাবাদী। এ সড়কটি চালু হলে চট্টগ্রাম মহানগরীর যানজট অর্ধেকের মতো নেমে আসবে। এর পাশাপাশি একটি বিস্তীর্ণ এলাকার সংযোগ ঘটবে বন্দরনগরীর মূল¯্রােতের সাথে। শহরতলীর কর্মচঞ্চল সুবিশাল উত্তর অংশের সম্প্রসারণ ছাড়াও বিস্তীর্ণ এলাকার চেহারা পাল্টে যাবে। নাগরিক সুবিধা ভোগ করবে লাখ লাখ শহরতলীর মানুষ।
ক্রমাগত সম্প্রসারমান চট্টগ্রাম মহানগরীর জনসংখ্যা দ্রুত বেগে বেড়ে যাচ্ছে। নগরবাসীর সংখ্যার সাথে সমানতালে বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বিভিন্ন সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রতি বছর গড়ে ১০ থেকে ১২ শতাংশ হারে লোক বাড়ছে। কিন্তু সেই বর্ধিত লোকের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা এবং চলাচলের প্রয়োজনীয় সড়ক সুবিধা বাড়ছে না। এতে করে চট্টগ্রাম নগরীতে যানজট অসহনীয় হয়ে উঠেছে। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানীখ্যাত বন্দরনগরী বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে। নগরীতে এখন যানজট একটি গুরুতর নাগরিক সমস্যা হিসেবে প্রত্যেক নাগরিকের জন্যই পীড়াদায়ক হয়ে উঠেছে। যানজটের খেসারত দিতে হচ্ছে সকলকেই। দেখা যাচ্ছে, নগরীর বাইরে দিয়ে যেসব যানবাহন চলে যেতে পারে সে সব যানবাহনও নগরীর ভেতর দিয়েই চলাচল করছে। এতে করে যানজট পরিস্থিতি আরও বেসামাল হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে ফৌজদারহাট-বায়েজিদ বাইপাস সড়ক নির্মিত হলে বর্তমান ১৪/১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি না দিয়ে যানবাহনগুলো গন্তব্যে পৌঁছতে সক্ষম হবে মাত্র ৬ কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করে। নগরীতে প্রবেশ করার প্রয়োজন নেই এমন যানবাহনগুলোকে নগরীর বাইরে দিয়ে পার করে দেয়ার মূল লক্ষ্য সামনে রেখেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদারহাট থেকে বায়েজিদ পর্যন্ত একটি বাইপাস সড়ক নির্মাণের জন্য সিডিএ প্রকল্প গ্রহণ করে। ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ১২০ ফুট চওড়া সড়কটি নির্মাণের জন্য ২০০৪ সালে ৫৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হতে না হতেই এশিয়ান উইম্যান ইউনিভার্সিটির স্থান বাছাই নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। এ জটিলতার জের ধরে পরবর্তীতে প্রকল্পটি প্রায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে।
তবে ফৌজদারহাট-বায়েজিদ বাইপাস সড়কের প্রয়োজনীয়তার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে এশিয়ান উইম্যান ইউনিভার্সিটির জন্য বাছাইকৃত জায়গার উত্তর পাশঘেঁষে নতুন করে বাইপাস সড়ক নির্মাণের ব্যাপারে সিডিএ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর ফলে নতুন প্রকল্পে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় প্রায় ২১০ কোটি টাকা। তবে ব্যয় কাটছাঁট করে প্রকল্প ব্যয় ১৭২ কোটি ৪৯ লাখ ৩২ হাজার টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কের জন্য মোট ৯১৯ দশমিক ৭৮ কাঠা জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। একটি রেলওয়ে ওভারব্রিজ নির্মাণসহ ৮টি কালভার্ট নির্মাণ ও ৭টি কালভার্ট সম্প্রসারণ করা হবে এ প্রকল্পে। সব মিলে ফৌজদারহাট-বায়েজিদ বাইপাস সড়কের নির্মাণ কাজ এখন এগিয়ে চলেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।