পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাহেদ খোকন, গৌহাটি (ভারত) থেকে : আগের দিন দুপুরে সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের মহিলা ভারোত্তোলনে মাবিয়া আক্তার সিমান্ত বাংলাদেশের হয়ে প্রথম স্বর্ণপদক জিতেছিলেন। সন্ধ্যায় এই আনন্দকে দ্বিগুণ করেন লাল-সবুজের কৃতী মহিলা সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলা। তিনি মেয়েদের ১০০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকে সেরা হয়ে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় স্বর্ণ উপহার দেন। ওই দিন সোনা জিতে থেমে না গিয়ে মিডিয়াকে কথা দিয়েছিলেন গেমসে দ্বিতীয় স্বর্ণপদক জিতবেন শিলা। সত্যিই কথা রাখলেন বাংলাদেশের স্বর্ণজয়ী এই সাঁতারু। গতকাল মেয়েদের ৫০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকে ৩৪.৮৮ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেরার খেতাব জিতলেন মাহফুজা খাতুন শিলা। দেশের পক্ষে এসএ গেমসে জিতলেন তৃতীয় এবং নিজের দ্বিতীয় স্বর্ণপদক। গড়লেন নতুন গেমস রেকর্ডও। এর আগে ১৯৯৭ সালে মেয়েদের ৫০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকে শ্রীলঙ্কার রাহিমা মায়ুমি ৩৪.৯৭ সেকেন্ডে স্বর্ণ জিতে রেকর্ড গড়েছিলেন।
গতকাল বিকালে গৌহাটির ডক্টর জাকির হোসেন অ্যাকুয়েটিক কমপ্লেক্সে আরও একবার বেঁজে উঠলো ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি’। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের সুরের মূর্ছনায় যেন মোহিত হয়ে গেলেন সেখানে উপস্থিত প্রায় শ’খানেক বাংলাদেশী। আনন্দে তাদের চোখ যেন ছলছল করে উঠলো। আবারো স্বর্ণ জিতলেন বাংলাদেশের শিলা। এ এক অন্যরকম অনুভূতি। কাল পুলে নামার আগেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন শিলা। বলেই ফেললেন, ‘আজও কিছু একটা করে দেখাবো।’ সত্যি কিছু একটা করেই দেখালেন যশোর জেলার অভয় নগরের নোয়াপাড়ার এই মেয়ে। স্বর্ণ জয়ের পর উচ্ছসিত শিলা মিডিয়াকে তার অনুভূতির কথা জানান। তবে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের প্রতি। শিলা বলেন, ‘আমার সার্ভিসেস দল বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং জাতীয় দলের কোরিয়ান কোচ তেগুন পার্কের উৎসাহেই আমি এবারের এসএ গেমসে দেশকে দু’টি স্বর্ণপদক উপহার দিতে পেরেছি। আমার এই সাফল্যে ফেডারেশনের কোনই অবদান নেই। ফেডারেশন কর্মকর্তারা বেশ কিছুদিন ধরে আমাকে অবহেলা করে আসছিলেন। তাদের এই অবহেলা এক সময় আমাকে হতাশ করেছে। ভেবেছিলাম সাঁতার ছেড়ে দেবো। কিন্তু কোচ পার্ক ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের উৎসাহ আমাকে সাঁতারে রেখে দিলো। আগ্রহ জন্মালো ভালো কিছু করে দেখানোর। জিদ চেপে গেলো এসএ গেমসে স্বর্ণ জিতবোই। আল্লাহ আমার সহায় ছিলেন বলে আমি সফলতা পেয়েছি।’
মাহফুজা খাতুন শিলা ২০০২ সালে বাংলাদেশ গেমসে মেয়েদের ৫০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকে তৃতীয় হলেও ২০০৩ থেকে এখন পর্যন্ত ৫০ ও ১০০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে টানা স্বর্ণপদকের মালিক। ২০০৩ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হন তিনি। বছর তিনেক হলো যোগ দেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে। মূলত বিকেএসপির সাঁতার কোচ আব্দুল মান্নানের প্রশিক্ষণেই শিলা কৃতী সাঁতারু হিসেবে নিজেকে তৈরি করেন। সব সময়ই কোচ মান্নান তাকে নেপথ্যে থেকে অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন।
এবছর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন শিলা। এসএ গেমসে অংশ নিতে গৌহাটি আসার দু’দিন আগে তার পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। তিনি দ্বিতীয় শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। ২৫ বছর বয়সী শিলার আগে বাংলাদেশের কোন মহিলা সাঁতারু আন্তর্জাতিক কোন গেমসে দু’টি স্বর্ণপদক জিততে পারেননি। শিলা মনে করেন, কোরিয়ান কোচ তেগুন পার্ককে জাতীয় দলের দায়িত্বে রেখে দেয়া উচিত। তিনি থাকলে বাংলাদেশের সাঁতারুরা অনেক কিছু অর্জন করতে পারবেন।
এসএ গেমসের গত ১১ আসর মিলিয়ে বাংলাদেশের জেতা ৬৩টি স্বর্ণপদকের মধ্যে ১৫টিই এসেছিল সাঁতার থেকে। ২০১০ ঢাকা এসএ গেমসে নিজেদের পুলে ৬টি রুপা ও ১০টি ব্রোঞ্জপদক জিতেছিলেন বাংলাদেশ সাঁতারুরা। ২০০৬ সালে সর্বশেষ সাঁতার ডিসিপ্লিন থেকে সোনার পদক পেয়েছিল লাল-সবুজরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।