Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাশ্মীরে সেনা দফতরে হামলা

প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩২ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

১৭ সৈন্য নিহত : চার হামলাকারীও মারা গেছে : জড়িতরা রেহাই পাবে না : মোদি
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেড সদর দফতরে হামলায় অন্তত ১৭ জন সৈন্য ও ৪ হামলাকারী নিহত হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, অন্তত ১৬ জওয়ান আহত হয়েছে। চিকিৎসার জন্য তাদের হেলিকপ্টারে করে রাজধানী শ্রীনগরস্থ সেনা হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার ভোর ৪টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন জড়িত একজনও রেহাই পাবে না। অন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র সফর স্থগিত করেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে ঘটনাটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া জরুরি একটি বৈঠকও করেছেন তিনি। কথা বলেছেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ও গভর্নরের সঙ্গে। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, রোববার ভোরে ৩-৪ ব্যক্তি উরিতে লাইন অব কন্ট্রোলের নিকটে এ সামরিক স্থাপনায় হামলায় চালায়। ভোর ৪টার দিকে হামলাকারীরা প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকেও গুলি বিনিময় চলছিল।
ভারতীয় কর্মকর্তাদের ধারণা, হামলাকারীরা ফিদায়েন বা আত্মঘাতী স্কোয়াড হতে পারে। সেনা স্থাপনাটি বারামুল্লা জেলার শ্রীনগর-মুজাফফরাবাদ হাইওয়ের উরি নামক স্থানে অবস্থিত। এটা সেনাদের অস্ত্রাগার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। হামলার পর উরির দোকানপাট সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। হামলায় আহতদের আকাশপথে ৭০ কিলোমিটার দূরে শ্রীনগরে সেনা হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। খবরে আরো বলা হয়, সকালে একটি ভবনে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। সেনা দফতর থেকে কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। এর আগে চলতি বছর পাঞ্জাবে পাঠানকোট বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল বিদ্রোহীরা।
উল্লেখ্য, প্রায় তিন মাস ধরে কাশ্মীরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সর্বশেষ পুলিশের ছোড়া ছররা গুলিতে আহত কিশোরের মৃত্যুকে কেন্দ্র আবারও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে কাশ্মীর। পুলিশের ছররা গুলিতে আহত ১৫ বছরের কিশোর মোমিন আলতাফকে গত শুক্রবার আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত শনিবার তার মৃত্যুর পরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে শ্রীনগরের হারওয়ানের বাসিন্দারা। তার জানাযা শেষে মানুষ হারওয়ানের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের ফলে হারওয়ানে প্রবেশের সব রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়। জারি করা হয় কারফিউ। বন্ধ করে দেয়া হয় ইন্টারনেট। এই বিক্ষোভের আঁচ যাতে অন্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য শ্রীনগরের বেশ কিছু উত্তেজনাপ্রবণ এলাকায় বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এ কিশোরের মৃত্যুতে ৮ জুলাই থেকে টানা বিক্ষোভে এ পর্যন্ত প্রায় ৮৩ জনের মৃত্যু হলো।
হামলায় জড়িতদের একজনও রেহাই পাবে না : মোদি
ভারতের দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হুঁশিয়ার করেছেন, হামলায় জড়িতদের একজনও রেহাই পাবে না। হামলার পর মোদির টুইটার থেকে পোস্ট করা তিনটি বার্তায় হামলার নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের কঠোর সাজা দেয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী। প্রথম টুইটার বার্তায় মোদি বলেন, ‘আমরা উরিতে এই ভীরুতাপূর্ণ হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, যারা এই ঘৃণ্য হামলা চালিয়েছে তারা কেউ রেহাই পাবে হবে।’
অপর এক টুইটে মোদি বলেন, ‘আমরা উরিতে আত্মাহুতি দেওয়া সবাইকে শ্রদ্ধা জানাই। দেশের জন্য তাদের সেবা সবসময়ই স্মরণ করা হবে। স্বজন হারানো পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইলো।’ আরেকটি টুইটে মোদি জানান, তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকরের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে কাশ্মীরে যাবেন বলে মোদি ওই টুইটার বার্তায় জানান।
নেপথ্যে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন : ভারতীয় কৃর্তপক্ষ
হামলার জন্য পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জয়েশ-ই-মোহাম্মদকেই সন্দেহ করছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে চলতি বছরের প্রথমদিকে পাঞ্জাবের পাঠানপকোটে ভারতের বিমানঘাঁটিতে হামলার জন্যও ওই সশস্ত্র সংগঠনটিকে দায়ী করেছিল ভারত। প্রাথমিক তদন্তের পর দায়িত্বশীল সেনা কর্মকর্তা ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল রণবীর সিং বলেন, “ওই হামলার পেছনে রয়েছে বিদেশি সন্ত্রাসীরা। আমাদের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে হামলার পেছনে জয়েশ-ই-মোহাম্মদের হাত রয়েছে। চারটি একে-৪৭, চারটি আন্ডার ব্যারেল গ্রেনেড লঞ্চার এবং অন্যান্য যুদ্ধ সরঞ্জাম ছিল তাদের কাছে, যা চার নিহত ‘সন্ত্রাসী’র কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সব সমরাস্ত্রেই পাকিস্তানের চিহ্ন রয়েছে।”

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

Show all comments
  • শরীফ ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ৩:১৯ পিএম says : 0
    আমার মনে হচ্ছে স্বাধীনতাই এই অঞ্চলের একমাত্র সমাধান
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাশ্মীরে সেনা দফতরে হামলা

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ